Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavieus

সামান্য হলেও আশার ঝিলিক, রাজ্যে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা স্থিতিশীল

জুনের দ্বিতীয় আর তৃতীয় সপ্তাহে নতুন সংক্রমণ বৃদ্ধির দৈনিক সংখ্যাটা সেখানে অনেকটা স্থিতিশীল।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ২১:০৭
Share: Save:

রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থতার হার বাড়ছে। তার সঙ্গে, জুনের ৫ তারিখের পর থেকে এ পর্যন্ত রাজ্যে দৈনিক নতুন সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যাটা না কমলেও, মোটামুটি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।

মার্চের মাঝামাঝি থেকে জুনের গোড়া পর্যন্ত রাজ্যে রোজকার নতুন সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে গিয়েছে। জুনের দ্বিতীয় আর তৃতীয় সপ্তাহে নতুন সংক্রমণ বৃদ্ধির দৈনিক সংখ্যাটা সেখানে অনেকটা স্থিতিশীল।

নীচে দেওয়া লেখচিত্র ১ -এ দেখা যাচ্ছে, গত ৫ জুন নতুন সংক্রমণের চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ (৫ দিনের) ছিল ৪০৪। এর পর কোনও দিন এই সংখ্যা সামান্য বেড়েছে, কোনও দিন সামান্য কমেছে। ২০ জুন এই ৫ দিনের চলন্ত গড় ছিল ৪১২। ২১ জুন ছিল ৩৯৯। চলন্ত গড় কী তা এই কপির শেষে আলাদা ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই পরিসংখ্যান কিছুটা হলেও স্বস্তির রাজ্যের পক্ষে। দেশের গড় চিত্রের তুলনায় একটু হলেও ভাল। কারণ দেশে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখীই রয়ে গিয়েছে।

দৈনিক নতুন মৃত্যুর চলন্ত গড়ও রাজ্যে ১০ থেকে ১৩-র মধ্যে ঘোরাফেরা করছে জুনের গোড়া থেকে। সেখানে দেশের গড় কিন্তু ঊর্ধ্বমুখীই রয়েছে।

দেশের মৃত্যুর গ্রাফ গত ১৯ জুনের পর থেকে নামতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেটা ১৭ জুন এক দিনে হঠাৎ ২ হাজার ৩ জনের মৃত্যুর হিসেব যোগ হওয়ার ফলে।

জুনের ১ তারিখ রাজ্যে সুস্থতার হার (ডিসচার্জ রেট) ছিল ৪০ শতাংশ। মাত্র ২৩ দিনেই ২৩ শতাংশ মানুষ করোনাযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন এ রাজ্যে। এই মুহূর্তে সুস্থতার হার পৌঁছে গিয়েছে ৬৩ শতাংশে।

জুনের শুরু থেকে রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০-র ঘরে ঘোরাফেরা করছে। কখনই তা পাঁচশোর গণ্ডি ছাড়ায়নি। এখনও পর্যন্ত দৈনিক আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার অস্বাভাবিক হারে ঊর্ধ্বমুখী হয়নি। এই পরিসংখ্যান যে বদলাবে না, তা অবশ্য বলা যাবে না। তবে গত ২৩ দিনের নতুন আক্রান্ত এবং মৃত্যুর দৈনিক চলমান গড় কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক।

আনলক-১ ঘোষণার আগে ভিন্‌রাজ্যে আটকে থাকা অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিক, পড়ুয়া এবং তীর্থযাত্রীরা রাজ্যে ফিরে এসেছেন। সেই কারণে সাময়িক আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও, পরে তা স্বাভাবিক হারেই বেড়েছে। এ রাজ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার প্রবণতা এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। ১ থেকে ২৩ জুনের মধ্যে প্রতি দিন গড়ে ৯ হাজার করে কোভিড-১৯ টেস্ট হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, ১ জুন পর্যন্ত মোট কোভিড-১৯ টেস্ট হয়েছিল ২ লক্ষ ১৩ হাজার ২৩১টি। ২৩ জুন সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লক্ষ ২০ হাজার ৭৭-এ। ২৩ দিনে মোট করোনা টেস্টের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ল্যাবরেটরির সংখ্যা বাড়ার কারণেই প্রতি দিন টেস্টের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়েনি।

আরও পড়ুন: ডায়াবিটিসই জীবনযুদ্ধ থামাল তমোনাশের, মনে করছেন চিকিৎসকরা

এক মাস আগেও গড়ে ১০০-র আশপাশে মানুষ প্রতি দিন সুস্থ হচ্ছিলেন রাজ্যে। এখন গড়ে ৫০০ জন করে সুস্থ হচ্ছেন। রাজ্যে এই মুহূর্তে মোট আক্রান্ত ১৪ হাজার ৭২৮ জন হলেও, তার মধ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্ত ৪ হাজার ৯৩০। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ২১৮ জন। সব মিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৮০ জনের।

আরও পড়ুন: একতরফা ভাবে সংঘর্ষে উস্কানি দেয় ভারত, দাবি চিনের

এ রাজ্যের মধ্যে কলকাতায় করোনা আক্রান্তের হার সব থেকে বেশি। ১ জুন কলকাতায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১৭৯। ২৩ জুন সেই আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ৪ হাজার ৮১৫ হয়েছে। তবে তার মধ্যে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ২ হাজার ৫৯৯ জন। ৩৩৯ জন মারা গিয়েছেন। এখন চিকিৎসাধীন সক্রিয় আক্রান্ত ১হাজার ৮৭৭ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় ২ হাজার ১০১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ হাজার ২৭৬ জন। মারা গিয়েছেন ৯০ জন। তার পরেই রয়েছে হাওড়া। সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১৯৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫০৯ জন। মারা গিয়েছেন ৮২ জন।

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দেশের দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে (২নং) ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavieus West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy