পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাসকে বাঁধতে গিয়ে দেশ জুড়ে নেমে এসেছে লকডাউনের স্তব্ধতা। তারই নিস্তব্ধ ফল, ভিন দেশে কিংবা সুদূর প্রবাসে আটকে পড়া পরিযায়ী অজস্র শ্রমিক।
শিল্পহীন মুর্শিদাবাদের আনাচ কানাচ থেকে অগুন্তি শ্রমিক রুজির টানে ভেসে বেড়ান, কখনও দেশের প্রান্তিক কোনও রাজ্যে কখনও বা আরও দূরের বিদেশে। লকডাউনের আবদ্ধতা থেকে বেরোতে সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই মরিয়া হয়ে ঘরে ফিরেছেন, কেউ সাইকেলে কেউ বা নিতান্তই পায়ে হেঁটে। তবে, অনেকে ফিরে এলেও না-ফেরা সেই শ্রমিকদের তালিকাটাও বেশ লম্বা। কেরলে আটকে পড়া এমনই প্রায় বারোশো শ্রমিককে আজ, বুধবার ফিরিয়ে আনছে বিশেষ ট্রেন।
মঙ্গলবার রাজস্থান থেকে জেলায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৪ জন পরিযায়ী শ্রমিককে। সরকারি উদ্যোগে বিশেষ ট্রেনে ঘরে ফেরানো সেই শ্রমিকদের তালিকায় নয়া সংযোজন ঘটতে চলেছে আজ। এ ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর একান্ত উদ্যোগও যে রয়েছে শ্রমিক-পরিবারগুলির কথাতেই তা স্পষ্ট— ‘এ ব্যাপারে অধীর যা সাহায্য করেছেন তা-ও ভোলার নয়।’ কেরল থেকে বহরমপুরগামী ট্রেনে চড়েছেন হরিহরপাড়ার কেশাইপুর গ্রামের উজ্জ্বল শাহ, শাজাহান শেখ। ফোনে নিজেদের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে না-পেরে তাঁরা বলছেন, ‘‘মনে হয়েছিল আর হয়তো কোনও দিন বাড়ি ফেরা হবে না। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি এ ব্যাপারে অধীরবাবুকেও নমস্কার। তাঁদের উদ্যোগেই ঘরে ফেরার ট্রেন ধরলাম।’’ তবে তাঁদেরই অনেক সহকর্মী এখনও যে আটকে রয়েছেন, কেউ এর্নাকুলামে কেউ বা আলাপ্পুুঝায়—জানিয়েছেন উজ্জ্বলরা।
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের খবর, এখন পর্যন্ত জেলায় ৪৫ হাজার পরিযাযী শ্রমিক জেলায় ফিরেছেন। স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারিতে তাঁদের অধিকাংশই এখনও হোম কোয়রান্টিনে। অনেকের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে, এখনও কেরল-দিল্লি—গুজরাত-হায়দরাবাদ-পঞ্জাব-অসম-তামিলনাড়ুতে অনিশ্চয়তা নিয়ে পড়ে রয়েছেন আরও হাজার হাজার শ্রমিক।
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার বেলা ৩.৩০ মিনিটে বহরমপুর স্টেশনে ওই বিশেষ ট্রেন পৌঁছনোর কথা। ট্রেনে ১২০০ শ্রমিকের সিংহভাগই মুর্শিদাবাদের। বাকিরা পড়শি জেলার। নদিয়ার ৭৮ জন, হাওড়া ও কলকাতার দু’জন করে শ্রমিক রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘বুধবার ট্রেনটি বহরমপুর স্টেশনে পৌঁছনোর পরে শ্রমিকদের শারীরিক পরীক্ষার পর নিজের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওঁদের প্রাথমিক স্ক্রিনিং করার পরে বাসে তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। সে জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরে ১০টি মেডিক্যাল টিম থাকবে ওই স্টেশনে। প্রাথমিক পরীক্ষার পরে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে— হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট, স্যানিটাইজ়ার, মাস্ক, খাবার এবং জল। সঙ্গে হোম কোয়রান্টিনে কীভাবে কাটাতে হবে, তার নির্দেশাবলি। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ১৫ হাজার হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেটও সংগ্রহ করা হয়েছে। ১২০০ শ্রমিকের জন্য ৯০টি বেসরকারি বাস নেওয়া হয়েছে। ওই বাসগুলি ছাড়াও প্রয়োজনে ছোট গাড়িতে তাঁদের বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy