অবরুদ্ধ: করোনা সংক্রমণের ফলে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কয়েকটি জায়গা। শনিবার ঘিরে দেওয়া হচ্ছে হাওড়া ময়দানের তেমনই একটি এলাকা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
করোনা আতঙ্কে শুক্রবারই ‘স্পর্শকাতর’ হিসেব চিহ্নিত করা হয়েছে হাওড়ার চারটি এলাকা। গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছিল ওই রাত থেকেই। শনিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে ঘোষণা করা হল, বাসিন্দাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, বাজার পৌঁছে দিতে কল সেন্টার করা হয়েছে হাওড়া পুরসভায়। বাসিন্দাদের বাড়িতে প্রয়োজনীয় জিনিস ও বাজার পৌঁছে দিতে একটি অনলাইন খাবার সরবরাহকারী সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ট্রলি করে বাড়িতে কাঁচা বাজার পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হয়েছে হাওড়া পাইকারি আনাজ বাজার থেকে। পুরসভা সূত্রের খবর, আজ রবিবার থেকে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে।
ঘোষণার পর থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ওই চারটি এলাকার ৩০টির বেশি গলি। এ দিন সকাল থেকেই প্রত্যেকটি এলাকায় পুলিশ নাকা তল্লাশি শুরু করে। বন্ধ করা হয়েছে দোকান, বাজার। অত্যধিক ভিড়ের কারণে কালীবাবুর বাজার এলাকায় দোকানপাট বন্ধ করতে উদ্যোগী হন খোদ ব্যবসায়ীরাই। বেলা ১১টার পর থেকে ওই এলাকার বিক্রেতারা লাঠি হাতে বাজার, রাস্তা থেকে ক্রেতাদের সরিয়ে দেন।
হাওড়ার যে যে জায়গায় করোনা সংক্রমণে মৃত্যু ঘটেছে বা একই পরিবারের কয়েক জন আক্রান্ত হয়েছেন, সেই সব এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে সামগ্রিক লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয় হাওড়া সিটি পুলিশ। শুক্রবার রাত থেকেই হাওড়ার ৬, ৭ এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বামনগাছি সেতু-সহ হরগঞ্জ বাজার এলাকার ১০টির বেশি গলির মুখ গার্ডরেল দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাওড়া ময়দান এলাকা থেকে কাজিপাড়া পর্যন্ত জিটি রোডের বাঁ দিকে থাকা সব গলি গার্ডরেলে ঘিরে দেওয়া হয়।
হাওড়া পুলিশের ডিসি (সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, “মালিপাঁচঘরা থানা এলাকার ৬, ৭ এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ড সম্পূর্ণ লকডাউন করা হয়েছে। কেউ বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না।” তিনি জানান, ওই এলাকাগুলির মধ্যে পড়ছে উত্তম ঘোষ লেন, কৈবর্তপাড়া লেন, রেলব্রিজ কলোনি, বারোয়ারিতলা, বামনগাছি, লিলুয়া থানার রেলকলোনি, কলাবাগান, বেলগাছিয়া, দশরথ ঘোষ লেন। এই সব এলাকায় নিয়ম ভেঙে কেউ বেরোচ্ছে বা আড্ডা জমাচ্ছে কি না, তা দেখতে ড্রোন দিয়ে নজরদারি শুরু হয়েছে বলেও ডিসি সদর জানান।
হাওড়ার পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, “পুরসভায় একটি কল সেন্টার করা হচ্ছে। মুদির জিনিস, বাজার ইত্যাদি পৌঁছে দিতে একটি হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া হবে। এই ফোনের মাধ্যমে একসঙ্গে ১০টি বাড়ির বরাত নিতে পারা যাবে।” পাশাপাশি, বাজার এবং পাড়ার মুদির দোকানগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। বাসিন্দাদের থেকে বরাত নিয়ে কোথা থেকে, কোন পণ্য, কতটা নিতে হবে, সেই তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে সরবরাহকারী সংস্থাকে। তারা তা কিনে লোক মারফত পৌঁছে দেবে বাড়িতে। এ ছাড়া কাঁচা আনাজের জন্য ট্রলি ভ্যান ও ঠেলাগাড়ির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আনাজ বোঝাই ক’টি গাড়ি কোন এলাকায় বা পাড়ায় যাবে, তা স্থির করার কাজ চলছে। আজ, রবিবার প্রাথমিক ভাবে শুরু করার পরে সোমবার থেকে এই প্রক্রিয়া পুরোপুরি চালু করা যাবে বলে জানান পুর কমিশনার। এ ভাবে দুধ, ওষুধও পৌঁছে দিতে পুর কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
মানুষের সমস্যায় পাশে থেকে তা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর আবেদন, “সবাই লকডাউন মেনে চলুন।” সূত্রের খবর, সম্পূর্ণ লকডাউন বা সিল করে দেওয়া এলাকার প্রতি বাড়িতে পুর স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে বাসিন্দাদের শরীরের খোঁজ রাখবেন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy