ছবি: পিটিআই।
তথ্য নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েনে আসল কাজে ফাঁকি পড়ছে না তো! গত দু’দিনের ঘটনাক্রমের প্রেক্ষিতে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
করোনা-পরিসংখ্যান নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোরে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে শুক্রবারের একটি চিঠি। যার প্রেক্ষিতে রাজ্যে প্রকৃত করোনা অ্যাক্টিভের সংখ্যা কত, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়ছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর পোর্টালে এ রাজ্যের ল্যাবগুলি যে তথ্য আপলোড করছে, তার সঙ্গেও রাজ্যের পরিসংখ্যানের তফাৎ রয়েছে বলে স্বাস্থ্য ভবনকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, পরিসংখ্যান নিয়ে ধন্দ কাটানোর জন্য রাজ্যকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পরিসংখ্যান নিয়ে চাপানউতোরে জরুরি কাজের সময় নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল সংঘমিত্রা ঘোষ জানান, স্থানীয় স্তরে সংক্রমণের গতিবিধি জানতে হলে প্রকৃত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে কত জন আক্রান্তের সংস্পর্শে পজ়িটিভ হয়েছেন, পজ়িটিভ কিন্তু কোনও যোগ পাওয়া যায়নি, এমন রোগীর সংখ্যা কত, সারি রোগী কত জন পজ়িটিভ হয়েছেন, সেই তথ্যের উপরে নজরদারি প্রয়োজন। তাঁর কথায়, ‘‘পরিসংখ্যান নিয়ে আকচা-আকচির মধ্যে আখেরে রাজ্যেরই ক্ষতি। মহারাষ্ট্রের মতো সব তথ্য সামনে এনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে এই মহামারির মোকাবিলা করা দরকার।’’ স্বাস্থ্য দফতরের খবর, সারা রাজ্যে এ পর্যন্ত অন্তত তিন কোটি বাড়িতে করোনা সংক্রান্ত সমীক্ষা করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে তার ভিত্তিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? কলকাতা পুরসভায় কন্টেনমেন্ট জ়োনে নজরদারির কাজে যুক্ত কমিউনিটি মেডিসিনের এক চিকিৎসক জানান, বিভিন্ন ওয়ার্ডে আইএলআই এবং সারি রোগীদের তথ্য ঠিক মতো উঠেই আসছে না।
আরও পড়ুন: সবচেয়ে বিপদের ২০-র তালিকায় কলকাতা, নয়া দল পাঠাচ্ছে কেন্দ্র
আরও পড়ুন: ছাড়-বৈঠক আজ, খুলতে পারে মদের দোকান
অথচ গত এক সপ্তাহে রাজ্যে নমুনা পরীক্ষার হার যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনের খবর, এ কাজে ‘বিশেষ দায়িত্ব’ দিয়ে প্রাক্তন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্রকে স্বাস্থ্যভবনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে করোনা সঙ্কটে ‘পরামর্শদাতা’ হিসাবে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করতে পারেন তিনি। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য বলছে, ২৮ এপ্রিল এক দিনে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮২০টি। পরবর্তী তিন দিনে ঊর্ধ্বমুখী নমুনা পরীক্ষার হার ছিল যথাক্রমে ১৩৯৭, ১৯০৫ এবং ২০৪১টি। শনিবার তা বেড়ে প্রায় আড়াই হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরে কর্মরত এক জনস্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘শুক্র এবং শনিবারে মোট ৪৪৫১টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২৭টি অ্যাক্টিভ কেস পাওয়া গিয়েছে। তার মানে মোট নমুনা পরীক্ষার পাঁচ শতাংশও পজ়িটিভ হয়নি। তা হলে পরিসংখ্যান নিয়ে এত টানাপড়েন কিসের!’’
স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, আইসিএমআরের পোর্টালের তথ্যেও গলদ রয়েছে। কী রকম? ওই পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এক জন রোগীর প্রথম বারের নমুনা পরীক্ষার পরে সুস্থ না-হওয়া পর্যন্ত একাধিক বার নমুনা পাঠানো হয়। প্রথম বার হয়তো নমুনা পাঠানো হয়েছিল এসএসকেএমে। কাজের চাপ কমাতে পরে ওই রোগীরই রিপিট স্যাম্পল কোনও বেসরকারি ল্যাবে পাঠানো হলে তারা আইসিএমআরের পোর্টালে নতুন আক্রান্ত হিসাবে ওই ব্যক্তির তথ্য আপলোড করে দিচ্ছে।’’ এ বিষয়টি কেন্দ্রকে জানানো হচ্ছে না কেন? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বেসরকারি হাসপাতালে ‘অ্যাক্টিভ কেস’-এর সংখ্যা নিয়ে কিছু জটিলতা আছে। সেটা আগে পরিষ্কার হওয়া দরকার।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy