মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
এমআর বাঙুর হাসপাতালের ভিডিয়ো-বিতর্ক কাণ্ডে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্কটের সময়ে সমালোচনা না-করে সহযোগিতা করা উচিত বলে বুধবার মন্তব্য করেন তিনি।
রাজ্যের অন্যতম কোভিড হাসপাতাল বাঙুরে একের পর এক ঘটনা ঘিরে বিতর্ক চলছে। আইসোলেশন ওয়ার্ডে দীর্ঘ ক্ষণ মৃতদেহ পড়ে থাকার ভিডিয়ো নিয়ে প্রথমে সমালোচনা হয়। তার পরে হাসপাতালের মর্গে দেহ সরানো নিয়ে যাদবপুর থানাকে লেখা সুপার শিশির নস্করের চিঠি যুক্ত হয় সেই পর্বে। মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত এক বৃদ্ধকে ওই হাসপাতাল থেকে বাড়ি পাঠানো, বাড়ি থেকে নিয়ে এসে আবার ভর্তি করানো এবং শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু নিয়ে তাঁর ছেলের একটি ভিডিয়ো বাঙুরকে রাজনীতির পরিসরে বৃহত্তর বিতর্কে ঠেলে দেয়।
সেই ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘এক জন বেচারা হাজারটা টেস্ট করছেন। যদি ভুল হয়ে যায়, সেটা রেক্টিফাই করে নিতে হবে। হাজারটা করে সফল হয়েছেন। একটা পারেননি বলে দূর দূর করতে পারি না। আমাকেও তো বুঝতে হবে, ওভারলোডিং হয়ে গিয়েছে। একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। যাঁরা ফিল্ডে কাজ করেন, তাঁরা বোঝেন, এটা টাচি (স্পর্শকাতর) ব্যাপার।’’ বিরোধীদের সমালোচনা করে মর্গে দেহ সরানো নিয়ে চিঠি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন ডেডবডি নিয়ে যাওয়া হল না? কেন নিয়ে যাওয়া হল না, হাসপাতাল বুঝবে, পুলিশ বুঝবে। কে কবে মৃতদেহ নিয়ে যাবে, সেটা মৃত রোগীর অভিভাবকদের চয়েস। প্রত্যেকটা মর্গে অনেক মৃতদেহ থাকে। মিসিং আছে। এক জন কী অর্ডার দিচ্ছে, সেটা নিয়ে নেমে পড়ছে। কেউ কেউ ভুল করে ফেলে বলেই তো কারেক্ট করতে হয়। আমি কি সব জানি! আমি কি ওস্তাদ!’’ ওয়ার্ডে দেহ পড়ে থাকার ভিডিয়ো সম্পর্কে বলেন, ‘‘হাসপাতালে কত লোক রেখে দিয়েছে। ভিডিয়ো করে দিয়ে দিচ্ছে। আজ বা কাল খুঁজে বার করব।’’ সাধারণ মৃত্যুর ক্ষেত্রেও দেহ দেওয়ার আগে যে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, তা তিনি স্মরণ করান।
আরও পড়ুন: বিকল্প পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা শুরু রাজ্যে
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নিচু তলায় ছোটখাটো ভুল হতে পারে। নতুন কাজ, নতুন যুদ্ধ। চলার পথে কখনও কখনও ভুল হয়ে যেতে পারে।’’
বাঙুর হাসপাতাল থেকে বার বার ভিডিয়ো লিক হতে থাকায় স্বাস্থ্য ভবন খুবই বিরক্ত। এই অবস্থায় রাজ্যের মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনকে বাঙুরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ওই হাসপাতালে প্রায় ৩০০ ক্যামেরা লাগানো হবে। দু’জন কর্মী সারা ক্ষণ সেই সব সিসি ক্যামেরার উপরে নজরদারি চালাবেন।
আরও পড়ুন: টিকিয়াপাড়ায় ব্যবস্থা নিতে বলেছি: মমতা
বাঙুরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালে আগেই এডিএম পর্যায়ের এক অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হাসিমুদ্দিল আহমেদ নামে এক ইনস্পেক্টরকে দায়িত্ব দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। ঘটনাচক্রে বুধবারেই তাঁকে সরিয়ে রাজকুমার মুখোপাধ্যায় নামে অন্য এক অফিসারকে বাঙুরে পাঠানো হয়েছে। পরপর ভিডিয়ো ফাঁস বা রোগীদের আত্মীয়স্বজনদের বিক্ষোভের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই বলে নবান্নের খবর। সিসি ক্যামেরা বসিয়ে আরও কঠোর নজরদারি চায় নবান্ন। বাঙুরের মর্গে পড়ে থাকা ১১টি দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে। তবে ওই ১১ জনই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, নাকি অন্য কারণে, সেই বিষয়ে মুখ খোলেননি স্বাস্থ্যকর্তারা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy