সিলিন্ডারের অভাব তীব্রতর বাংলায়। ছবি: পিটিআই।
মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লির মতো জায়গায় করোনায় আক্রান্ত, গুরুতর অসুস্থ বহু মানুষ প্রবল শ্বাসকষ্টে মারা যাচ্ছেন। কারণ, সেখানে অক্সিজেনের আকাল। বাংলায় কিন্তু অক্সিজেনের চেয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব তীব্রতর। ফাঁকা সিলিন্ডারের অভাব রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের ঘোর দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খালি সিলিন্ডার না-পেলে হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করা যাবে কী ভাবে?
স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, মোক্ষম পরীক্ষার মুহূর্তে পুরনো একটা ভুলের চূড়ান্ত দাম দিতে হচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে। ভুলটা হল, নির্দিষ্ট সময় অন্তর দরপত্র ডেকে ফাঁকা অক্সিজেন সিলিন্ডার না-কিনে সেই প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে স্রেফ বন্ধ করে রাখা!
স্বাস্থ্য দফতরের খবর, পাঁচ-সাত বছর আগেও অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে নিয়ম করে দরপত্র ডেকে বছরে ৯-১০ হাজার খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনত স্বাস্থ্য দফতরের সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর। সেগুলি ভাগাভাগি করে রাখা হত বিভিন্ন জেলার স্টোরে, প্রয়োজন হলেই যাতে সেগুলিতে অক্সিজেন ভরে নিয়ে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষের পরে অজ্ঞাত কারণে প্রায় ছ’বছর ফাঁকা সিলিন্ডার কেনার দরপত্র ডাকা হয়নি! ফলে সব জেলাতেই ফাঁকা সিলিন্ডার কমতে কমতে তলানিতে পৌঁছেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের প্রয়োজন যখন তুঙ্গে, ‘রিফিল-উপযোগী’ ফাঁকা সিলিন্ডার তখন আর মিলছেই না।
এত বছর ফাঁকা সিলিন্ডার কিনতে দরপত্র ডাকা হয়নি কেন? রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘‘দরপত্রের বিষয়টি আমার ঠিক জানা নেই। আমরা জেলাগুলিকে বলেছি, দরপত্রের মধ্যে না-গিয়ে তারা এখন সরাসরি যে-কোনও সংস্থা থেকে ফাঁকা সিলিন্ডার কিনে নিতে পারে।’’
হুহু করে করোনা রোগী বাড়ছে। বিভিন্ন জেলা থেকে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা প্রতিনিয়ত ফাঁকা সিলিন্ডার চাইছেন স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। অক্সিজেনের জোগান থাকা সত্ত্বেও ফাঁকা সিলিন্ডারের অভাবে তা জেলার হাসপাতালে পাঠানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। অক্সিজেনের রিফিলিং বা বটলিং আটকে যাচ্ছে। বিভিন্ন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের অভিযোগ, বাজারে এমনিতেই ফাঁকা সিলিন্ডারের জন্য কাড়াকাড়ি চলছে। তার উপরে যে-হেতু এটি স্বাস্থ্য দফতরের নথিভুক্ত জিনিস, তাই ছ’বছর আগের দরপত্রের দামেই এটা কিনতে হবে। কারণ, বাজারের নতুন দাম অনুযায়ী নতুন দরপত্র ডাকা হয়নি। কিন্তু বাছাই করা সংস্থাগুলি ছ’বছরের পুরনো দামে সিলিন্ডার দিতে চাইছে না। তার উপরে চলছে সিলিন্ডারের কালোবাজারি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু জেলা কয়েকটি সংস্থার কাছ থেকে ফাঁকা সিলিন্ডার ভাড়া নিচ্ছে। কেউ কেউ নিজেদের প্রস্তাবিত এইচডিইউ বা আইসিইউ ইউনিট চালু না-করে সেখান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার করোনা হাসপাতালে পাঠিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। কিন্তু এ ভাবে যে বেশি দিন চলবে না, সেটা সকলেই বুঝছে। সাধারণত
তিন ধরনের ফাঁকা অক্সিজেন সিলিন্ডার হাসপাতালে প্রয়োজন হয়। ছোট (এ টাইপ), মাঝারি (বি টাইপ) এবং বড় বা জাম্বো (ডি টাইপ)। এর মধ্যে বেশি দরকার হয় ডি এবং বি টাইপ সিলিন্ডারের। কলকাতায় প্রায় সব সরকারি হাসপাতালেই পাইপলাইনে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে সিলিন্ডারের দরকার হয় না। কিন্তু জেলার বহু জায়গায় পাইপলাইন নেই। ফলে ফাঁকা সিলিন্ডারের আকালে ভয় বেশি বিভিন্ন জেলাতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy