বহু থ্যালাসেমিয়া রোগীকে মাসে ২-৩ বার করে রক্ত নিতে হয়। —নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে রক্ত সংগ্রহ কমে যাওয়ায় চরম সঙ্কটে থ্যালাসেমিয়া রোগীরা। রক্তের অভাবে কার্যত প্রাণ সংশয় দেখা দিয়েছে রোগীদের। রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের মতো হাওড়াতেও বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। সেখানকার থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা ও গবেষণা কেন্দ্রে ভিড় বাড়ছে রোগীর পরিজনদের। ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তদাতাকে সঙ্গে করে না গেলে রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না। এই আবহে প্রশাসনিক সাহায্যের আশায় বহু পরিবার।
প্রতি গ্রীষ্মেই রাজ্য জুড়ে রক্তের আকাল দেখা যায়। তবে করোনার প্রকোপে জেলা জুড়েই রক্ত সংগ্রহ কমে গিয়েছে। সংক্রমণের আশঙ্কায় পিছু হঠেছে রক্তদান শিবিরের আয়োজনকারী বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা ক্লাব। অভিযোগ, রোগীর সঙ্গে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তদাতাকে নিয়ে যেতে হচ্ছে। তবেই রক্ত পাওয়া যাচ্ছে।
সীমা মাইতি নামে এক থ্যালাসেমিয়া রোগীর অভিভাবক বলেন, “গত বছরের মতো চলতি বছরেও রক্তের সঙ্কট রয়েছে। তার উপর করোনার জন্য ডোনার ছাড়া রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সংক্রমণের ভয়ে রক্তদাতারাও এগিয়ে আসতে চাইছেন না। খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছি।”
বহু থ্যালাসেমিয়া রোগীকে মাসে ২-৩ বার করে রক্ত নিতে হয়। অনেকের অভিযোগ, রক্তদাতার পাশাপাশি ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি তাঁদের কাছ থেকে মোটা টাকা দাবি করছে। উপায় না দেখে কার্যত টাকার বিনিময়েই রক্ত সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। হাওড়ার একটি থ্যালাসেমিয়া হাসপাতালের নার্স প্রতিমা মালিক বলেন, “বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় আড়াইশো রোগী হাসপাতালের আসেন। রক্ত না পেয়ে তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন।”
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজয় চক্রবর্তী বলেন, “এই মুহূর্তে আমরা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছি। কোভিড রোগীদের বেড, অক্সিজেন, ওষুধ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।” তবে রক্ত সঙ্কটের জেরে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সমস্যার কথা তিনিও স্বীকার করে নেন। সমস্যা মেটাতে রোগীদের জন্য রক্ত সংগ্রহের কথা চিন্তা-ভাবনা করছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে এ নিয়ে প্রশাসনেরও নজরদারি চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy