গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
একদিকে রেকর্ড মৃত্যুর পরিসংখ্যান। অন্যদিকে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারি বার্তার ইঙ্গিত প্রাপ্তি। বৃহস্পতিবার এই হল রাজ্যের করোনা ছবির হালহকিকত।
এদিন স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৪৬ জন কোভিড পজ়িটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৪৩৪ জন। সংক্রমণের এই পরিসংখ্যানের মধ্যে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায়ের পরে এদিন প্রকাশ্যে এসেছে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ তথা সুপার পলাশ দাসকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে বদলির খবর। সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার অন্দরের বক্তব্য, সোমবার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের আরজিকর যাত্রার নির্দেশ জারির সঙ্গেই সাগর দত্তের উপাধ্যক্ষের বদলির নির্দেশে সিলমোহর পড়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। তাঁর পরিবর্তে নতুন উপাধ্যক্ষ হয়েছেন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের সুপার সুজয় মিস্ত্রি।
ঘটনাচক্রে, এই দুই মেডিক্যাল কলেজকেই কোভিড হাসপাতালে পরিণত করার সিদ্ধান্ত রূপায়ণ করতে গিয়ে একাধিকবার পিছু হটতে হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। দু’ক্ষেত্রেই দানা বেঁধেছিল জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন। সেই জট কাটিয়েও সাগর দত্তে আশাতীত গতিতে কোভিড শয্যার সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায়নি। একই অনুযোগ রয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রেও। বস্তুত, সম্প্রতি একটি ভিডিও কনফারেন্সে তা নিয়ে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন সাগর দত্তের বিদায়ী উপাধ্যক্ষ। সরকারি চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, বদলি হল প্রতীকী। আসলে কোভিড পরিষেবা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের পরিকল্পনা রূপায়ণে কোনও রকম ‘আপত্তি’ যে স্বাস্থ্য ভবন শুনতে নারাজ ঘুরিয়ে সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় সরকারি সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের ভূমিকা আতসকাচের তলায় এসেছে বলে খবর। তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা নির্মল মাজি বলেন, ‘‘কোভিডের মোকাবিলায় সকলকে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এর অন্যথা হলে স্বাস্থ্য ভবনের পদক্ষেপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’
আরও পড়ুন: বাদুড়ের দেহে করোনার জীবাণু, দাবি
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
বস্তুত, এ প্রসঙ্গে এদিনের আরেকটি ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ। তা হল, প্রোটোকল মানা হচ্ছে কি না তা যাচাইয়ে সরকারি-বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসক দলের পরিদর্শন সংক্রান্ত। সরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের যুক্ত করা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই স্বাস্থ্য ভবনে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এদিন তার সূচনা হয়। সেখানে পরিদর্শক দলে চিকিৎসকদের তিনটি দলকে যেভাবে ভাগ করা হয়েছে তা ইঙ্গিতবাহী মনে করা হচ্ছে। প্রথম দলে মূলত রয়েছেন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের সরকারি চিকিৎসকেরা। দ্বিতীয় দলে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বেসরকারি চিকিৎসকদের যে তালিকা তৈরি হয়েছিল তাঁদের আধিক্য বেশি। আর তৃতীয় দলে রয়েছেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামে’র সদস্যেরা।
পরিদর্শক দলের এ ধরনের স্বতন্ত্র শ্রেণিবিন্যাস দেখে ‘চমকিত’ তৃণমূলপন্থী চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ। প্রতিটি দলের সামনে এ দিন ছিল পুলিশ এসকর্ট। সেই পুলিশ এসকর্ট পাওয়া নিয়েও চাপানউতোর কম হয়নি বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর। সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ জানান, ডব্লিউবিডিএফের পুলিশ এসকর্ট নিশ্চিত থাকলেও বাকি দুই দলের এসকর্ট-প্রাপ্তি সহজে হয়নি বলে চিকিৎসক মহলে জল্পনা। সন্ধ্যায় এই ঘটনাক্রমে আরও একটি বিষয় ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। চিকিৎসক দলগুলিকে ধন্যবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর টেক্সট মেসেজ। ডব্লিউবিডিএফ সূত্রে খবর, তাতে লেখা রয়েছে, ‘আমার সকল চিকিৎসক দলকে ধন্যবাদ’। তিনি যে চিকিৎসক দলগুলিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার আর্জি রয়েছে সংশ্লিষ্ট টেক্সট মেসেজে।
আরও পড়ুন: কোভিড ১৯-এর ধাক্কায় বদলাচ্ছে হাতের লেখার ধরনও
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy