ছবি পিটিআই।
পরিবারের একাধিক সদস্য করোনা উপসর্গের শিকার। কিন্তু সকলেরই যে পরীক্ষা করানো সম্ভব হচ্ছে, তা নয়। দীর্ঘক্ষণ নমুনা পরীক্ষার লাইনে দাঁড়িয়ে শুনতে হচ্ছে, ‘কিট নেই, কাল আসুন’। গত কয়েক দিনে দিল্লির ক্ষেত্রপাল, দিনদয়াল হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ধরনের অভিজ্ঞতা দিল্লিবাসীর কম হয়নি। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে বঙ্গে নমুনা পরীক্ষার কৌশল বদলের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, রাজ্যে সংক্রমণের মাত্রা যে বাড়তে চলেছে, স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনেই তার ইঙ্গিত রয়েছে। তাঁদের মতে, দিল্লি বা দেশের যে সকল প্রান্তে এখন সংক্রমণের সূচক ঊর্ধ্বমুখী, সে সব রাজ্যের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রণকৌশল ঠিক করতে হবে। নমুনা পরীক্ষা সেই কৌশলেরই অঙ্গ।
রাজ্যে এখন নমুনা পরীক্ষার মাপকাঠি হল আইসিএমআরের সাম্প্রতিক ন’দফা নির্দেশিকা। বেসরকারি হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি উপসর্গহীন হলে তাঁর এখন পরীক্ষা করানোর দরকার নেই। ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনের রোগীদের নমুনা পরীক্ষার উপরে নির্দেশিকায় জোর দেওয়া হয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গযুক্ত ব্যক্তি যদি কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাসিন্দা হন, তবেই তাঁর পরীক্ষা করানোর পক্ষপাতী বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক।
এ ধরনের কৌশলের কারণ ব্যাখ্যায় তিনি জানান, আগামিদিনে যত সংখ্যক কিটের দরকার হবে তা যে পাওয়া যাবে, সেই নিশ্চয়তা কম। তাই এখন থেকে কিটের যাতে যথাযথ ব্যবহার হয় তার উপরে জোর দিতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘নমুনা পরীক্ষা করানোর চাহিদা আগামিদিনে আকাশছোঁয়া হবে। ফলে রসদ বাঁচানো জরুরি। যে সকল জায়গায় সংক্রমণ সে ভাবে এখনও ছড়িয়ে পড়েনি, তা সুরক্ষিত রাখা জরুরি। সে সব জায়গায় টেস্ট করে আক্রান্তকে আইসোলেট করার প্রক্রিয়া যাতে ব্যাহত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: সাহায্য চেয়েও মেলেনি! শ্রমিক স্পেশালে শিশুকন্যার মৃত্যু
টেস্টিং কৌশলের আর একটি দিক তুলে ধরেছেন বেসরকারি করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রের ল্যাবরেটরি ডিরেক্টর চিকিৎসক অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, আরটি-পিসিআরের নমুনা পরীক্ষা করার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। নমুনা সংগ্রহের পরে রিপোর্ট পেতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। এর উপরে নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় গলদ থাকলে রিপোর্ট ইনকনক্লুসিভ হতে পারে। যথেষ্ট ল্যাবরেটরি না থাকায় দিনরাত কাজ করেও বকেয়া নমুনার সংখ্যা বাড়ছে। আরটি-পিসিআর ছাড়া জিন-এক্সপার্ট, সিবি-ন্যাট পদ্ধতি রয়েছে ঠিকই। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও কার্টিজের অপ্রতুলতা রয়েছে। কমিউনিটিতে করোনার গতিবিধি বুঝতে র্যাপিড কিটের ব্যবহার দ্রুত শুরুর পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: আমি কিন্তু বলিনি: করোনা-এক্সপ্রেস বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে মাইক্রোবায়োলজিস্ট ভাস্করনারায়ণ চৌধুরীর পর্যবেক্ষণ অবশ্য ভিন্ন। তাঁর কথায়, ‘‘সমস্যা হল র্যাপিড কিটের সেনসিটিভিটি বেশি, কিন্তু স্পেসিফিসিটি কম। তার থেকে এলাইজা বা কেমিলিউমিনেসেন্স ইমিউনো পদ্ধতিতে আইজিজি অ্যান্টিবডি অনেক ভাল নির্ণয় হয়। কিন্তু এখন শুধু এপিডিমিয়োলজিক্যাল সার্ভের ক্ষেত্রেই এই পদ্ধতি ব্যবহারের অনুমোদন আইসিএমআর দিয়েছে।’’
কোভিড ম্যানেজমেন্টে যুক্ত স্বাস্থ্য দফতরের এক অভিজ্ঞ কর্তার কথায়, ‘‘দেখা গিয়েছে, ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ৮-১০ দিনের মাথায় কম্বাইনড অ্যান্টিবডি কিটের মাধ্যমে কেউ সংক্রমিত হয়েছেন কি না, তা বোঝা সম্ভব। সে ধরনের কিট রয়েছে এবং খরচও কম। আইসিএমআর এ ধরনের কিটে অনুমোদন দিলে সংক্রমণের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হয়। টেস্টিং সেন্টার বাড়িয়েও আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা মুশকিল। আইসিএমআর এই অনুমোদন কেন দিচ্ছে না, বুঝছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy