প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে করোনা সংক্রমণের প্রভাব খতিয়ে দেখতে ‘র্যাপিড টেস্ট’ শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। শনিবার নবান্নে এ কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘৫০ হাজার র্যাপিড টেস্ট কিট আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চলে আসবে। তার পর প্রয়োজন মতো পরীক্ষা শুরু হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই সঙ্কটের সময়ে একটি রাজনৈতিক দলের আইটি সেল ফেক নিউজ ছড়াচ্ছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করে বলছে, টেস্ট করানো হচ্ছে না। আইসিএমআর আগে যেমন পরীক্ষা করাতে বলেছিল, আমরা সেটা অনুসরণ করছিলাম। এখন ওরা যা বলছে, সেই মতো কাজ হবে।’’ ‘সন্ধানে’ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আশা কর্মীরাও জ্বর ও শ্বাসকষ্টের রোগী খুঁজবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
করোনা-আক্রান্তের পরিসংখ্যান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গত ২৪ ঘন্টায় ৬ জন নতুন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে এখন অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ৯৫। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন ছাড়াও পেয়ে যাবেন। আগামী কয়েক দিন এই সংখ্যা বাড়বে। দিন যত পেরোচ্ছে, এই সংখ্যা একটু একটু করে বাড়বে। এটাই নিয়ম। এ নিয়ে এত ভয় পাওয়ার কারণ নেই। এই ৯৫-এর মধ্যে ৭০টি কেসই ১৬টি পরিবারের।’’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আমরা কোনও সংখ্যা লুকোছাপা করছি না। ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা তো আমরা জানিয়েছি। করোনা রোগীর সংখ্যা ১০০ বা ১২০ যদি হয়, সেটা বলব না কেন? যারা এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তারা রাজ্যের কঠিন সময়ে মানুষকে ভয় দেখানোর কাজ করছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা যে ভাবে রাজনীতি করছেন, প্রধানমন্ত্রীকেও আমি তা বলেছি।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে আর জি কর হাসপাতালের তিন জন রোগী রয়েছেন। বেলগাছিয়া এবং উল্টোডাঙার বাসিন্দা দু’জনকে আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আরজিকরে চিকিৎসাধীন তথা বড়বাজারের এক বাসিন্দার মৃত্যুর পরে করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। হাসপাতালের অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যাল বলেন, ‘‘মৃত রোগী যেখানে ভর্তি ছিলেন, সেটি মেডিসিনের আইসোলেটেড ওয়ার্ড। ওই ওয়ার্ডের রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। মৃত করোনা রোগীকে যে সকল চিকিৎসকেরা দেখেছিলেন, তাঁদের ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী কোয়রান্টিন হবে।’’ মৃতের হৃদ্রোগের পাশাপাশি ডায়াবিটিস, সিওপিডি ছিল বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ। বাকি আক্রান্তদের মধ্যে বোড়ালের রামকৃষ্ণনগর, বটতলা এবং হাওড়ার এক বাসিন্দা রয়েছেন। আসানসোলে এক জনের করোনা নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলে খবর।
স্বস্তির খবরও শুনিয়েছে বেলেঘাটা আইডি। এগরা, দাসপুর, শেওড়াফুলি এবং বরাহনগর-যোগে আক্রান্ত চার জনের প্রথম দফার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। দ্বিতীয় দফার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টও নেগেটিভ এলে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
এ দিকে, স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, র্যাপিড অ্যান্টিবডি নির্ভর পরীক্ষায় পজ়িটিভ হওয়ার অর্থ নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে এমন নয়। ওই পরীক্ষা দেহে ভাইরাস থাকতে পারে সেই ইঙ্গিত দেয় মাত্র। ভাইরাসের উপস্থিতি প্রসঙ্গে নিশ্চিত হতে আরও এক বার লালারসের পরীক্ষা করা হবে। তবে কোথাও গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা বুঝতে এই টেস্ট সহায়কের ভূমিকা পালন করতে পারে।
স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, মূলত যে সব স্থানে করোনা পজ়িটিভ কেস পাওয়া গিয়েছে, সেই সংক্রমিত রোগীর সরাসরি সংস্পর্শে আসা মানুষজন, প্রতিবেশী বা এলাকার সকলের র্যাপিড টেস্ট হবে। এই স্ক্রিনিংয়ে ৩০ শতাংশ মানুষের পজ়িটিভ কেস আসতেও পারে। তার পর কনফার্মেটিভ টেস্ট। এ ছাড়া, সরকারি কোয়রান্টিনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের এই পরীক্ষা করা হবে। গৃহ নিভৃতবাসে থাকা ব্যক্তিদের সামান্য কিছু উপসর্গ দেখা দিলে তাঁদেরও প্রথমে র্যাপিড টেস্ট হবে। সেই সঙ্গে রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে রোগী এলেই তাঁদেরও এই পরীক্ষা করে গোষ্ঠী সংক্রমণের হার দেখে নেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy