ছবি এএফপি।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা তিন, আক্রান্ত ৩৪ জন— বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই তথ্য জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনায় মৃতের সংখ্যা তিন বলেই জানিয়েছিলেন। এ দিন রাজ্যে করোনা-আক্রান্ত আর কারও মৃত্যু হয়নি।
মুখ্যসচিবের ঘোষণার ঘণ্টা দেড়েক আগে, বিকেল সাড়ে চারটেয় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে স্বাস্থ্য দফতরের করোনা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছিল, গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে চার জনের এবং নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ জন। সব মিলিয়ে রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা সাত এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ থেকে বেড়ে ৫৩ হয়েছে বলে জানায় কমিটি। স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ সচিব তমাল ঘোষ ও সদস্য-চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীর উপস্থিতিতে বুলেটিনটি পড়েন আর এক সদস্য-চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় । সন্ধে ছ’টায় সেই পরিসংখ্যান সংশোধন করেন মুখ্যসচিব।
এ দিন মুখ্যসচিব জানান, ৫৩ জন আক্রান্তের মধ্যে তিন জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পঞ্চাশ জনের মধ্যে এ দিন ন’জন আক্রান্তের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। বাকি ৪১ জনের মধ্যে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪।
করোনা-পজ়িটিভ সাত জনের মৃত্যু হলেও কেন করোনায় তিন জন মারা গিয়েছেন বলা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘বাকি চার জনের মৃত্যু কোভিড-১৯-এর জন্য হয়েছে তা প্রমাণ হয়নি। অন্য কোনও অসুখ ছিল, তাই মারা গিয়েছেন।’’ তাঁর বক্তব্য, ওই চার জনকে করোনা-আক্রান্ত বলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি। অন্য অসুখের কারণে তাঁদের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। মুখ্যসচিবের কথায়, ‘‘হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন চার জনের করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। দু’জন এমনও আছেন, যাঁদের মৃত্যুর পরে করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। সে জন্য এগুলোকে করোনা সম্পর্কিত মৃত্যু বলা উচিত হবে না। তাতে আতঙ্ক তৈরি হবে।’’
বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছিল, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জনের দেহে করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। সেই সংখ্যা প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব কিছু বলেননি। এঁদের পাঁচ জন স্বভূমি সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার মধ্যে এক জন সল্টলেকের করুণাময়ী, এক জন আমহার্স্ট স্ট্রিট এবং আর এক দম্পতি জোড়াবাগানের বাসিন্দা। পঞ্চম জন তমলুকের বাসিন্দা।
নাগেরবাজারের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দু’জনের মধ্যে এক বৃদ্ধ খড়দহের বাসিন্দা। অপর জন ওই হাসপাতালেরই সেবিকা। ওই হাসপাতালে ইটালি-যোগে টালিগঞ্জের এক বাসিন্দা করোনা-আক্রান্ত হিসেবে চিকিৎসাধীন। সেই সূত্রে ওই সেবিকার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না স্বাস্থ্য ভবন।
সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধ হলদিয়ার দুর্গাচক এলাকার বাসিন্দা। হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এ ছাড়া, আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন সেনা হাসপাতালের চিকিৎসকের চালক এবং দাসপুরের আক্রান্তের বাবা। দু’জনে বেলেঘাটা আইডিতে চিকিৎসাধীন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১৬ জনের মধ্যে উত্তরবঙ্গের চার জন। এ ছাড়া দু’জন এগরা-যোগে আক্রান্ত। কলকাতার নয়াবাদের বাসিন্দা এগরায় যে বিয়েবাড়িতে আক্রান্ত হন সেখানে নিমন্ত্রিত ছিলেন হাওড়ার এই দম্পতি।
আইডির চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রাজ্যে দ্বিতীয় আক্রান্ত, তাঁর পরিচারক, তেহট্টের তিন জন, এগরা-যোগে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধা এবং লন্ডন যোগে আলিপুরের বাসিন্দার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আজ, শুক্রবার ফের তাঁদের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। দ্বিতীয় বারও রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
এ দিকে, তিন মৃতের সৎকার নিয়ে বুধবার যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল, এ দিন তা মিটে গিয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy