গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, বাড়ছে সুস্থতার হারও। একই সঙ্গে প্রতি দিন নতুন আক্রান্তের এই সংখ্যাবৃদ্ধি যে টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণেও হচ্ছে, তা-ও মনে করছেন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১২০০। কিন্তু সেই তুলনায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত বেশি হয়েছে মাত্র ৪৮ জন। কমেছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হারও।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৩ হাজার ২৪৫ জনের। বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ১৯৭। এই নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৩৬৪।
গোড়া থেকেই রাজ্যের মধ্যে কলকাতায় সবচেয়ে বেশি নতুন আক্রান্তের সন্ধান মিলছিল। কিন্তু গত কয়েক দিনে সেই সংখ্যাটা কিছুটা কমায় স্বস্তি মিলেছে। শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী, কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬২ জন। বৃহস্পতিবার নতুন সংক্রমিত হয়েছিলেন ৫৮৩ জন। আর বুধবার এই সংখ্যা ছিল ৬৬৬। এই নিয়ে মহানগরীতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ১৭৮।
আরও পড়ুন: জলমগ্ন কলকাতা থেকে জেলা, আরও ৫ দিন নিম্নচাপে বৃষ্টি-দুর্ভোগের শঙ্কা
কলকাতায় যখন এই ছবি, তখন লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনা নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে চলেছে। শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিত হয়েছেন ৭৬৪ জন। বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ছিল ৭৪৭। বুধবার নতুন কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬৫৭ জন। এই নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ৩০৮। হাওড়ায় মোট আক্রান্ত ১১ হাজার ৮৭৭ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১১ হাজার ৮৭৭ এবং হুগলিতে ৬ হাজার ১০ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
অন্য দিকে, নতুন মৃত্যুর সংখ্যা বেশ কয়েক দিন ধরেই ৫০ থেকে ৫৫-র মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের। বৃহস্পতিবার ও বুধবার ২৪ ঘণ্টায় ৫৩ জন করে মারা গিয়েছিলেন। আর মঙ্গলবার কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৫। এ দিনের হিসেবে রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৬৮৯ জনের। কলকাতায় মোট মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৫৪ জনের। শুক্রবারের হিসেবে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। উত্তর ২৪ পরগনায় এই সংখ্যা ১০।
আরও পড়ুন: গানের খাতাই চিনিয়ে দিল উল্টোডাঙার ডালকল শ্রমিকের খুনিকে
তবে, আশা জাগাচ্ছে সুস্থতার হার বৃদ্ধিতেও। শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে সুস্থতার বেড়ে হয়েছে ৭৬.৯৬ শতাংশ। বৃহস্পতিবার এই হার ছিল ৭৬.৫১ শতাংশ। আর বুধবার ছিল ৭৫.৯৭ শতাংশ। অর্থাৎ গত দু’দিনেই প্রায় এক শতাংশ সুস্থতার হার বেড়েছে। শুক্রবারের বুলেটিনে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩ হাজার ৮২ জন। রাজ্যে মোট সুস্থ হয়েছেন ১ লক্ষ ১ হাজার ৮৭১ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ৮০৪।
উদ্বেগ কমছে সংক্রমণের হারেও। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। বেশ কিছু দিন ধরেই এই সংক্রমণের হার নীচে নামছিল। কিন্তু ১৫ অগস্ট রবিবারের পর এই হার কিছুটা বাড়ায় নতুন করে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল রাজ্য প্রশাসনের কপালে। তবে গত দু’দিন সেই হার কিছুটা কমেছে। ফলে স্বস্তি আরও খানিকটা বেড়েছে। বুধবার এই সংক্রমণের হার ছিল ৯.২২ শতাংশ। বৃহস্পতিবার কমে হয়েছিল ৯.১২ শতাংশ। আর শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী সেই হার নেমে এসেছে ৮ এর ঘরে (৮.৯৬)।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy