Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

হাসপাতালে ঘুরেও মেলেনি শয্যা, সোনার হার বন্ধক রেখে অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া মেটালেন যুবতী

অভিযোগ, কোভিড রোগীদের পরিবারের অসহায়তার সুযোগে বেলাগাম দর হাঁকছে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা প্রদানকারী কয়েকটি সংস্থা।

—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোন্নগর শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ১৮:৪৬
Share: Save:

কোভিডে আক্রান্ত স্বামীর জন্য অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করেছিলেন। তবে হাসপাতালের দোরে দোরে হন্যে হয়ে ঘুরলেও স্বামীকে ভর্তি করাতে পারলেন না। উল্টে অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া মেটাতে সোনার হার বন্ধক রাখতে হল হুগলি জেলার কোন্নগরের এক যুবতীকে। অভিযোগ, কোভিড রোগীদের পরিবারের অসহায়তার সুযোগে বেলাগাম দর হাঁকছে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা প্রদানকারী কয়েকটি সংস্থা। দমদমের একটি সংস্থার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেছেন ওই যুবতী। ভাড়া যে বেশি নেওয়া হচ্ছে, তা কার্যত স্বীকার করেছে সংস্থাটিও। তবে সংস্থার মালিকের দাবি, কোভিড পরিস্থিতির জন্য ভাড়া বেড়েছে অ্যাম্বুল্যান্সের। তনুশ্রীর অভিযোগের কথা জানতে পেরে তাঁর সাহায্যে উদ্যোগী হন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংসদের সাহায্যে স্বামীকে শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি করেন তনুশ্রী।

কোন্নগরের ওই যুবতীর পরিবার সূত্রে খবর, কোভিডের উপসর্গ থাকায় তনুশ্রীর স্বামী মেহতাব আলম আনসারিকে হিন্দমোটরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। মেহতাবের অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকায় শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। এর পর রোগীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। হিন্দমোটরে কোনও সিসিইউ-যুক্ত অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে দমদমের এক বেসরকারি সংস্থায় অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য যোগাযোাগ করেন তনুশ্রী। শুক্রবার মেহতাবকে ওই অ্যাম্বুল্যান্সে করে হিন্দমোটর থেকে কলকাতায় যান তিনি। তবে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ঘুরেও কোথাও বেড পাননি। হতাশ হয়ে প্রায় ৬ ঘণ্টা পর হিন্দমোটরেই ফিরে আসতে বাধ্য হন তনুশ্রী। এর পর তাঁর কাছ থেকে ৩৩ হাজার টাকা অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া চায় দমদমের ওই সংস্থাটি। তবে সে মুহূর্তে তনুশ্রীর কাছে অত টাকা না থাকায় নিজের সোনার হার বন্ধক রেখে অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া মেটাতে বাধ্য হন তিনি।

বেশি ভাড়া নিয়ে তনুশ্রীর অভিযোগ কার্যত স্বীকার করলেও তা নিয়ে সাফাই গেয়েছেন অ্যাম্বুল্যান্স সংস্থার মালিক উত্তম ঘোষ। তিনি বলেন, “সিসিইউ অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া সাধারণ অ্যাম্বুল্যান্সের তুলনায় বেশি। সেখানে চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান থাকেন। কলকাতার একাধিক হাসপাতালে ঘুরে রোগীকে নিয়ে হিন্দমোটরে ফিরে আসে অ্যাম্বুল্যান্সটি। সে ভাড়াই নেওয়া হয়েছে।” যদিও উত্তম আরও বলেন, “আমাকে বললে হয়তো ভাড়া কিছুটা কমানো যেত। কোভিড পরিস্থিতির জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া বেশি হয়েছে।” পরে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাহায্যে তনুশ্রীকে ২০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেন উত্তম।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE