গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অতিমারিতে নাজেহাল যখন গোটা দেশ, তার মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি জোগাচ্ছে বাংলার পরিস্থিতি। গত কয়েক দিন ধরে প্রতিদিন নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একনাগাড়ে বেড়ে চলার পর এই নিয়ে দ্বিতীয় দিন সেই সংখ্যাটা নিম্নমুখী হল। সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এ রাজ্যে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১১২ জন। শনি ও রবিবার এই সংখ্যাটা ছিল যথাক্রমে ২ হাজার ৪০৪ এবং ২ হাজার ৩৪১। পাশাপাশি, রাজ্যে সংক্রমণের হারও কমছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার কমে ১২.৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
একই সঙ্গে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা রোগীর সংখ্যাও স্বস্তি জুগিয়েছে প্রশাসনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১৬৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তাতে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যাটা গিয়ে ঠেকেছে ৩৯ হাজার ৯১৭-তে। এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজার ৮৩০। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৬৫.৬২ শতাংশ মানুষই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
প্রতিদিন কত জন রোগীর করোনা টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে কত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। এ দিন এই পজিটিভিটি রেটও কমে ১২.৪২ শতাংশে এসে ঠেকেছে, গত কয়েক দিনের তুলনায় যা অনেকটাই কম। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৫ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তাই পজিটিভিটি রেট কমে যাওয়াটাকে ভাল ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: রামমন্দির ঘিরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চিড় দেখছে বাংলাদেশ?
নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে রাজ্যে মৃত্যু অব্যাহত থাকলেও, গত কয়েক দিন ধরে সংখ্যাটা যে ভাবে চল্লিশের ঘরে ঘোরাফেরা করছিল, গত ২৪ ঘণ্টায় তা চল্লিশ ছুঁতে পারেনি। এ দিন রাজ্যে ৩৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাতে করোনার প্রকোপে এখন ও পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ৪১১-তে এসে ঠেকেছে। এর মধ্যে কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনায়। হুগলিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, দার্জিলিঙে ২ জন করে প্রাণ হারিয়েছেন। বীরভূম, জলপাইগুড়ি, মালদহ, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ১ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫২ জন। সেই সঙ্গে ৫৪২ জন এ দিন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পেয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনায় এ দিন নতুন করে সংক্রমিত হন ৪৯৩ জন। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তার চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ। এ দিন ৫০৩ জন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন সেখানে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়াতে এ দিন নতুন করে সংক্রমিত হন যথাক্রমে ১১৮ জন ও ১৭৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সুস্থ হয়ে ওঠেন ১৫৯ জন। ২০৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন হাওড়ায়।
আরও পড়ুন: বেহালায় ১৫ ঘণ্টা পর করোনায় মৃতের দেহ সরাতে উদ্যোগী প্রশাসন
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে—পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১২৮। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৪৮। তার আগের দু’দিন ছিল ১১৫ এবং ১০১। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ১৩৬ এবং ১৪২। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১২৮, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার গড় পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy