Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

আক্রান্তে রেকর্ড, ‘সুবুদ্ধিই’ ভরসা

শারদোৎসবের সময় কোনও রকম জোর না-করে আপাতত জনতার সুবুদ্ধির উপরেই কোভিড প্রতিরোধের বিষয়টি ছেড়ে দিল প্রশাসন!

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০৫:২৯
Share: Save:

পুজোয় ভিড় নিষিদ্ধ করেনি রাজ্য প্রশাসন। তবে ভিড় থেকে ‘দূরে থাকতে পরামর্শ’ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “বাইরের অনেক মানুষ আসবেন। নিজেকে রক্ষা করুন। মাস্ক পরতে, হাতে স্যানিটাইজ়ার লাগাতে ভুলবেন না। অন্যের বাড়িতে ঘুরতে গেলেও দূরত্ববিধি-সহ বাকি সতর্কতা পালন করবেন। এ ভাবেই পুজোমণ্ডপে যেতে হবে, যাতে কোভিডের সংক্রমণ না ছড়ায়। অতিমারি পরিস্থিতি আমাদের ভাবাচ্ছে। মহারাষ্ট্র থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রোগটা খুব ছড়াচ্ছে এই সময়। বাইরে থেকে বাস, গাড়ি, প্লেন, লরি আসছে।”

প্রসঙ্গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যায় (৩৬৩১) ফের রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৬২। আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা (৭৫৬), তার পর কলকাতা (৭২৮)। এর ফলে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিন লক্ষ অতিক্রম করল। শুধু গত ১৩ দিনে রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ৬৯৬।

এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে অনেকেই বলছেন, শারদোৎসবের সময় কোনও রকম জোর না-করে আপাতত জনতার সুবুদ্ধির উপরেই কোভিড প্রতিরোধের বিষয়টি ছেড়ে দিল প্রশাসন! যদিও মানুষ কত সচেতন, তা নিয়ে পুজোর বাজারের ভিড়ই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। যে ভিড় নিয়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সোমবার নাগরিক মঞ্চের একটি ওয়েব-আলোচনাসভায় স্থির হয়েছে, ভিড় ঠেকানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বিশিষ্ট নাগরিকেরা চিঠি দেবেন। নাগরিক সচেতনতায় ফ্লেক্স-হোর্ডিংয়ের প্রচারও করা হবে।

আরও পড়ুন: মণ্ডপের কাছে নয়, অনুষ্ঠান হতে পারে প্রেক্ষাগৃহে: মুখ্যমন্ত্রী

ওই সভায় চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, “এ বার পুজোয় দূরত্ববিধি বজায় না থাকলে তা কার্যত আত্মহত্যার সমান হবে।” সমাজকর্মী নব দত্ত বলেন, “জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আপস করা যায় না। আবাসনের পুজোগুলিও বিপদ ডেকে আনতে পারে।” তবে কী ভাবে তা বন্ধ করা হবে, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। অনেকেই বলছেন, এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকে কড়া হতে হবে। কিন্তু উৎসবের ভিড় ঠেকাতে পুলিশি দাওয়াই দেওয়া সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রাক্তন পুলিশকর্তা সন্ধি মুখোপাধ্যায় বলেন, “উৎসবের সময় জোর করে ভিড় হঠানো বা লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যাওয়া অসম্ভব।” কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, পুজোর সময় কড়াকড়ি না-করার পিছনে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। সমাজের বড় অংশের মানুষের আবেগে আঘাত করতে চাইবে না শাসক দল।, বিরোধী দলগুলিকেও সেই বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে। ফলে জোর করে ভিড় ঠেকানোর উপায় নেই।

আরও পড়ুন: রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়াল, স্বস্তি জোগাচ্ছে সুস্থতার হার

এ প্রসঙ্গে গণপরিবহণ নিয়ন্ত্রিত করার কথা উঠেছে। তবে জনস্বাস্থ্যবিজ্ঞানী অরুণাভ মজুমদার এবং চিকিৎসক অজয় সরকারের মতে, এমনিতেই গণপরিবহণ স্বাভাবিকের তুলনায় কম চলছে। লোকাল ট্রেনও বন্ধ। কিন্তু পুজোর সময় শহরতলি থেকে প্রচুর ছোট গাড়িতে চেপে মানুষ কলকাতা শহরে আসেন। তা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। রাজ্যের অন্যান্য শহরেও দুর্গাপুজো এখন বড় আকার নিয়েছে। সেখানেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন বলে অনেকে মনে করছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy