রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।—ফাইল চিত্র।
সংক্রমণ বৃদ্ধির চাপে কার্যত ‘গলদঘর্ম’ স্বাস্থ্য ভবন। সল্টলেকে স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান কার্যালয়ে গত দু’সপ্তাহে একের পর এক কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। তারই জেরে স্বাস্থ্য ভবনের ‘সেন্ট্রাল এসি’ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি হয়েছে বলে খবর। বর্ষার মরসুমে একে ভ্যাপসা গরম তার উপরে কোভিড নিয়ন্ত্রণে কাজের চাপ। জোড়া ফলায় ‘গলদঘর্ম’ অবস্থা স্বাস্থ্য ভবনের কর্মীদের। রসিকতার সুরে কর্মীদের একাংশ বলছেন, ‘‘কোভিড হওয়ার দরকার নেই। সর্দি-গর্মি হয়ে এমনিই জ্বরে পড়ব!’’
স্বাস্থ্য ভবন চত্বরে অবস্থিত স্বাস্থ্যসাথী বিল্ডিং দিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান কার্যালয়ে হানা দিয়েছিল কোভিড। বঙ্গে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির গোড়া থেকে সক্রিয় রয়েছে এক নম্বর কনট্যাক্ট ট্রেসিং সেল। সেই সেলে নোভেল করোনাভাইরাস হানা দিলে কার্যত ঘুম ছুটে যায় দফতরের পদস্থ কর্তাদের। যুগ্মসচিব পদমর্যাদার এক আধিকারিক-সহ সংশ্লিষ্ট সেলের ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ১১ জন আক্রান্ত হন। এর পরপরই এক সন্ধ্যায় দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে ‘সতর্কতামূলক’ পদক্ষেপ হিসাবে ভবনের কেন্দ্রীয় শীতাতপ যন্ত্র বন্ধের নির্দেশ জারি হয়।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, গত শনিবার স্বাস্থ্যসাথী এবং ইনস্টিটিউট বিল্ডিং স্যানিটাইজ করা হয়। রবিবার মূল ভবন, ব্যাঙ্কবাড়ি, আরএসবিওয়াই-সহ বাকি জায়গাগুলিতে নবদিগন্তের কর্মীরা জীবাণুনাশক অভিযান চালান বলে খবর। অভিযানের পরও ‘সেন্ট্রাল এসি’ সক্রিয় হয়নি। দফতরের এক কর্মীর কথায়, ‘‘নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সেন্ট্রাল এসি চালানোর অনুমতি নেই।’’
আরও পড়ুন: ৫০% কর্মী দিয়ে কাজ সরকারি দফতরে
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ‘সেন্ট্রাল এসি’ বন্ধের পাশাপাশি দফতরের কর্তা-আধিকারিকদের একাংশ নিজেদের ঘরের শীতাতপ যন্ত্র বন্ধ রেখেছেন। বর্ষার ভ্যাপসা গরম থেকে রেহাই পেতে দরজা-জানলা খোলা রেখে কাজ করছেন আধিকারিকদের একাংশ। স্বাস্থ্য দফতরের প্রশাসনিক ব্রাঞ্চের কর্মীদের একাংশ জানান, স্বাস্থ্য ভবনের যা গঠন তাতে হাওয়া-বাতাস খেলার পরিসর কম! তবুও মৌখিক নির্দেশ পালনে অনেকে বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে পাখা চালাচ্ছেন। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, সংখ্যায় অল্প হলেও কয়েকজন আধিকারিকের ঘরে এসি অবশ্য কার্যকর রয়েছে।
স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধিকর্তা প্রতীপ কুণ্ডু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় শীতাতপ যন্ত্র থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এখন তো আবার করোনা ভাইরাসকে বায়ুবাহিত রোগও বলছে। বদ্ধ ঘরেও এসি চালিয়ে রাখলে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে। তার চেয়ে দরজা-জানলা খোলা রেখে এসি চালানো ভাল।’’
আরও পড়ুন: ভর্তির চেষ্টায় ১৮ ঘণ্টা, বৃদ্ধের মৃত্যু ভাটপাড়ায়
সংক্রমণের পাকেচক্রে স্বাস্থ্য ভবনে ‘গলদঘর্ম’ পরিস্থিতির আরেকটি দিক হল কনট্যাক্ট ট্রেসিং সেলের কর্মক্ষমতা হ্রাস। রাজ্য এইডস নিয়ন্ত্রণ সোসাইটির কনফারেন্স রুমের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ভবনের দোতলার কনফারেন্স রুমে একটি সেল চলত। তারও পাঁচজন সদস্য আক্রান্ত হওয়ার পরে কেউ পজ়িটিভ হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি বা হোম আইসোলেশনে রাখার যে প্রক্রিয়া তা ব্যাহত হয়। গত কয়েকদিনে সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি হাসপাতালে শয্যা পাওয়া নিয়ে জনমানসে যে ধারণা তৈরি হয়েছে, তার পিছনে এটিও একটি কারণ বলে মত দফতরের আধিকারিকদের একাংশের।
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সমন্বয়ের ঘাটতি মেটাতে স্বাস্থ্যসাথী বিল্ডিংয়ের সাততলায় ‘কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক’ নামে নতুন একটি সেল তৈরি করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ হওয়ার পরে হাসপাতালে কোথায় ভর্তি হবেন, হোম আইসোলেশনে থাকলে
করণীয় কী, হোম আইসোলেশনে থাকাকালীন শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কী হবে, সে বিষয়ে সাধারণ মানুষকে দিশা দিতে চিকিৎসক-সহ প্রায় তিরিশ জনের একটি দল চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করবে বলে স্বাস্থ্য দফতরের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy