কলকাতার সংক্রমিত এলাকায় স্প্রে করা হচ্ছে জীবাণুনাশক। ছবি: পিটিআই
রাজ্যে আরও ১১ জনের মৃত্যু হল করোনায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানিয়েছেন, রাজ্যে এ পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩৩। বুধবার পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ২২। তিনি আরও জানান, আরও ৭২ জন করোনা পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে কো-মর্বিডিটির (অন্যান্য রোগভোগ) কারণে। ফলে করোনা সংক্রমণ নিয়ে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১০৫ বলে জানান তিনি।
এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭২। গত কাল এই সংখ্যা ছিল ৫৫০। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ জন। তবে করোনায় মৃত্যুর প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘করোনা মৃত্যু নিয়ে রাজ্যের গঠিত অডিট কমিটির কাছে এই ১০৫ জনের বিষয়টি পাঠানো হয়েছিল। তারা এমনই মনে করেছে।’’ মুখ্যসচিব জানান, এই ১০৫টি মৃত্যু নিয়ে সবিস্তার গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের পরে অডিট কমিটি রিপোর্ট দিয়েছে সরকারকে। করণীয় কী কী, তা-ও জানিয়েছে। সেই মতো সরকার পদক্ষেপ করবে।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এখন থেকে আর সব করোনা-মৃত্যু অডিট কমিটির কাছে পাঠানো হবে না। তবে কমিটি ভেঙে দেওয়াও হবে না। প্রয়োজনমতো নমুনা ধরে তারা অডিট চালু রাখবে।’’ মুখ্যসচিবের বক্তব্য, করোনা সংক্রমণ নতুন ধরনের অসুখ। ফলে কী ভাবে, কোন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি নেওয়া হয়েছিল এবং রোগীদের মৃত্যুর প্রবণতা ইত্যাদি নিয়ে গবেষণার জন্য অডিট কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। সরকারের কাজ মৃত্যু ঠেকানো, মৃত্যুর কারণ খুঁজে অডিট করা নয়।
অডিট করতে গিয়ে সরকার নিযুক্ত বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, আইসিএমআর গাইডলাইন মেনে ডেথ সার্টিফিকেট লেখার সময় মৃত্যুর কারণ হিসেবে প্রথমেই তাৎক্ষণিক কারণ (ইমিডিয়েট কজ), পুরনো রোগভোগের ইতিহাস (অ্যান্টিসিডেন্ট কজ অব ডেথ) এবং অন্য কোনও জটিল কারণ (আন্ডারলাইন কজ অব ডেথ) পর পর লিখতে হবে। এ ছাড়াও ওই কমিটি জানিয়েছে, প্রতি রোগীর বেড হেড টিকেটে রোগীর আগের রোগ, চিকিৎসা এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য মজুত রাখতে হবে। ওই কমিটি প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি সংরক্ষণের উপর জোর দিয়েছে।
মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রোগমুক্ত হয়েছেন ১৫ জন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রোগমুক্তের সংখ্যা ১৩৯। রাজীব সিংহ এ দিন বলেন, ‘‘গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯০৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যা প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ১৮৩ জনের। গত কাল সেই পরিমাণ ছিল ১৬১। অর্থাৎ প্রতি দিনই কোবিড নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে ব্যারাকপুরের শ্মশানে করোনা রোগীর দেহ, সৎকার রুখলেন বাসিন্দারা, দেহ নিয়ে ফিরল পুলিশ
আরও পড়ুন: পাওয়া গেল করোনার ওষুধ? মার্কিন বিজ্ঞানীর দাবিতে আশার আলো
এ দিন মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৩৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন তার ৮০ শতাংশই কলকাতা, হাওড়া এবং উত্তর ২৪ পরগনা থেকে। বাকি হুগলি থেকে। তিনি সেই তথ্য দিয়ে জানান, তার আগের দু’দিন মোট ৬টি জেলা থেকে আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছিল। সেই সংখ্যা কমে এখন অধিকাংশই তিনটি জেলা থেকে। তিনি জানান, রাজ্যের অরেঞ্জ জোনের ২টি জেলা থেকে গত ২৫ দিন কোনও সংক্রমণ হয়নি, ৩টি জেলা থেকে ২১ দিনের মধ্যে নতুন সংক্রমণ নেই। আরও ২টি জেলায় গত ৭ দিনে কোনও সংক্রমণ নেই।
মুখ্যসচিব এ দিন জানিয়েছেন, রাজ্যের মোট কনটেনমেন্ট জোন ৪৪৪। তার মধ্যে ২৬৪টি কলকাতায়। উত্তর ২৪ পরগনায় কনটেনমেন্ট ৭০টি জায়গায়, হাওড়ায় কনটেনমেন্ট জোন বেড়ে হয়েছে ৭২। এ দিন মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘রাজ্যে মোট ১৪টি সরকারি পরীক্ষাকেন্দ্র থাকলেও, রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ক্যানসার ইনস্টিটিউটে গত তিন দিন ধরে যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য পরীক্ষা হচ্ছে না।” সেই সঙ্গে এ দিন রাজীব সিংহ জানিয়েছেন, এখন থেকে র্যানডম নমুনা পরীক্ষা করা হবে। সেখান থেকে বিশেষজ্ঞরা নতুন কিছু পেলে সরকারকে জানাবেন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy