ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে করোনা-মৃত্যুর হার সব চেয়ে বেশি। কিন্তু এই অভিযোগ মানতে রাজি নয় রাজ্য সরকার। স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার নবান্নে বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে আমাদের একটি-দু’টি পরীক্ষাগারে করোনা সংক্রমণের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। ফলে সেই সময় যাঁরা অন্যান্য রোগভোগের পরে বা শেষ পর্যায়ে হাসপাতালে এসেছিলেন, তাঁরা মারা গিয়েছেন। এখন পরীক্ষা কেন্দ্র বেড়েছে, পরীক্ষাও বেড়েছে। সচেতন হয়ে রোগীরাও দ্রুত পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ফলে অচিরেই দেখা যাবে, রাজ্যের মোট পজ়িটিভ করোনা সংক্রমণের সাপেক্ষে মৃত্যুহার কম।’’
স্বরাষ্ট্রসচিবের স্পষ্ট বক্তব্য, পরিকাঠামোগত সমস্যা ছিল। সেই জন্য প্রাথমিক কিছু পরিসংখ্যান দেখে কোনও ধারণা তৈরি করে নেওয়া ঠিক নয়। এই অতিমারি এবং তার মোকাবিলা একটা চলমান প্রক্রিয়া। সেগুলো বিচার করেই পরিসংখ্যানের বিশ্লেষণ করা উচিত। স্বরাষ্ট্রসচিব এ দিন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৮৫ জনের (দিনের হিসেবে সর্বাধিক) করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মারা গিয়েছেন সাত জন। (কলকাতায় পাঁচ, হাওড়ায় এক এবং দার্জিলিঙে এক) সব মিলিয়ে মোট আক্রান্ত ১৩৪৪। সুস্থ হয়ে বাড়ি গিয়েছেন ২৬৪ জন। এ দিন পর্যন্ত এই রাজ্যে শুধু করোনায় মারা গিয়েছেন ৬৮ জন।
সোমবার রাজ্যের বুলেটিনে জানানো হয়েছিল, বঙ্গে করোনায় ৬১ জন এবং কো-মর্বিডিটিতে ৭২ জন মিলিয়ে মোট ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক তাদের ওয়েবসাইটে জানায়, বাংলায় মৃত্যু হয়েছে ১৩৩ জনের। রাজ্য এ দিন জানায়, এ-পর্যন্ত শুধু করোনায় মোট ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। কো-মর্বিডিটির হিসেব দেওয়া হয়নি। তবে বুলেটিনে জেলা-ভিত্তিক তথ্য দেওয়া হয়েছে। সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা হয়েছে এ দিনই। নমুনা পরীক্ষার নিরিখে পজ়িটিভের হার সোমবারের তুলনায় কমেছে। ৫.০১% থেকে কমে সেই হার হয়েছে ৪.৪৭%।
আরও পড়ুন: কলকাতার বাইরে রাজ্যের কন্টেনমেন্ট জোন কী কী, দেখে নিন
স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, করোনা পরিসংখ্যান নিয়ে সত্য ও স্বচ্ছতার পথেই রয়েছে বঙ্গ। কেন্দ্র ও রাজ্যের পরিসংখ্যানে নিয়ে তফাত হওয়ার কারণ নেই। সর্বক্ষণ উভয় পক্ষ একযোগে কাজ করছে, করবেও।
করোনা-তথ্য
• মোট আক্রান্ত ১৩৪৪
• ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৮৫
• ২৪ ঘণ্টায় মুক্ত ৪৬
• মোট মুক্ত২৬৪
• ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৭
• মোট মৃত্যু ৬৮
• অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ৯৪০
• নমুনা পরীক্ষা ২৪৫৫
• মোট পরীক্ষা ২৭,৫৭১
• নিভৃতবাসে ৪৭১২
• নিভৃতবাস থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১৬,৭২৭
• গৃহ-নিভৃতবাসে ৫৫৬১
• গৃহ-নিভৃতবাস থেকে মুক্তি ৬৪,৬২৫
এ দিন নতুন যে-সব সংক্রমণের খবর এসেছে, তার অধিকাংশই কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা ও হুগলির। সোমবার বর্ধমান শহরে সুভাষপল্লির এক মহিলার করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ এসেছে। ওই দিন বর্ধমান মেডিক্যালে ‘সিবি-ন্যাট’ যন্ত্রে করোনা-পরীক্ষা শুরু হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রথম দিন পরীক্ষিত চার জনের মধ্যে ওই মহিলার করোনা ধরা পড়ে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘ওই মহিলা কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালের নার্স। শনিবার তিনি বর্ধমানে এসেছিলেন। সোমবার নিজেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে করোনা-পরীক্ষা করাতে যান।’’
আরও পড়ুন: কলকাতার কোন কোন এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন, দেখে নিন
কলকাতার ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থের ১২ জন নার্স এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সংক্রমণ বাড়ায় কন্টেনমেন্ট জ়োন বাড়ছে মহানগরীতে। স্বরাষ্ট্রসচিবের কথায়, ‘‘এটি চলমান প্রক্রিয়া। কখনও বাড়বে, কখনও কমবে। পুলিশ সজাগ আছে।’’
কলকাতায় দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় দলের নজরদারি প্রসঙ্গে আলাপনবাবু জানান, এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে কোনও রিপোর্ট নেই।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy