Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

শহরে আরও এক প্রতিষেধক পরীক্ষা

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:২৪
Share: Save:

এ বার করোনার আর এক প্রতিষেধক কোভোভ্যাক্সের ট্রায়ালের ছাড়পত্র মেলার আশায় গবেষকেরা। ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রোটোকল পরিবর্তন করে ড্রাগ কন্ট্রোলে সেই প্রতিষেধক জমা দিয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট। চলতি মাসের মাঝামাঝি কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ওই প্রতিষেধকের ট্রায়াল শুরু হবে বলেই আশা করছেন সকলে।

শহরে ওই প্রতিষেধকের ট্রায়ালের প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর শান্তনু ত্রিপাঠির কথায়, ‘‘ইতিমধ্যে কেউ যদি কোনও ধরণের প্রতিষেধক না-নিয়ে থাকেন এবং কোভোভ্যাক্সের ট্রায়ালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশ নিতে ইচ্ছুক হন, তা হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’’ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপরে ওই প্রতিষেধক পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রশ্ন, ইতিমধ্যেই কোভিশিল্ড দেওয়া শুরু হয়েছে। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে কোভ্যাক্সিন দেওয়া। সে ক্ষেত্রে কেউ কি এখন নতুন করে ট্রায়ালে স্বেচ্ছাসেবক হতে চাইবেন?

রাজ্যের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফেসিলিটেটর স্নেহেন্দু কোনারের দাবি, ‘‘করোনার প্রতিষেধকের চূড়ান্ত পর্যায়ের যে সমস্ত ট্রায়াল রাজ্যে হতে চলেছে, তার জন্য অনেক স্বেচ্ছাসেবকের দরকার। যে সমস্ত সুস্থ-সবল সাধারণ মানুষের প্রতিষেধক পেতে এখনও বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে, তাঁদের এই সব ট্রায়ালে যোগ দেওয়াটা জরুরি।’’ তিনি জানান, যে কোনও প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পরে স্বেচ্ছাসেবকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তাই আরও কয়েকটি উন্নতমানের প্রতিষেধক পেতে গেলে সাধারণ মানুষকেই স্বেচ্ছায় চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়ালে অংশ নেওয়াটা জরুরি।

সূত্রের খবর, শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইতিমধ্যেই স্পুটনিক ভি-র ট্রায়াল শুরু হয়েছে। আর কয়েক দিনের মধ্যেই শহরের আরও তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে শুরু হতে চলেছে জ়াইকোভ-ডি প্রতিষেধকের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল। পরে আরও ৫টি জায়গায় ট্রায়াল হবে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আমেরিকায় প্রস্তুত হওয়া প্রতিষেধক নোভাভ্যাক্সের প্রতিলিপি হিসেবে কোভোভ্যাক্স ভারতে তৈরির দায়িত্ব পায় পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। আর কোভোভ্যাক্সের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য দেশে মোট ১৮টি ক্লিনিক্যাল সাইটকে নির্বাচিত করা হয়। যার মধ্যে কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন অন্যতম। প্রথমে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে কোনও স্বেচ্ছাসেবককেই প্লাসিবো দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রোটোকলে মান্যতা দেয়নি কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল। সিরাম ইনস্টিটিউটকে প্রোটোকল পরিমার্জন করে পুনরায় জমা দিতে বলা হয়।

সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগেই সেই পরিমার্জিত প্রোটোকল জমা পড়েছে। এ বারে জানানো হয়েছে, ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে ৯৩ জন পাবেন প্রতিষেধক। যার মধ্যে বেশির ভাগ পাবেন ‘প্রোটিন বেসড রিকম্বিন্যান্ট স্পাইক প্রোটিন ন্যানো পার্টিকল ভ্যাকসিন’ কোভোভ্যাক্স। বাকিরা পাবেন নোভাভ্যাক্স। আর ১০০ জনের মধ্যে মাত্র ৭ জন পাবেন প্লাসিবো (সাধারণ জল)। তবে কে কোনটা পাচ্ছেন, তা আগাম জানা যাবে না। গবেষকদের আশা, আর কয়েক দিনের মধ্যেই ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অব ইন্ডিয়ার ছাড়পত্র মিলবে।
তার পরেই দেশের অন্য ১৭টি ক্লিনিক্যাল সাইটের মতো কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনেও ট্রায়াল শুরু হবে।

ইতিমধ্যেই শহরেও নতুন ব্রিটেন স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ওই নতুন স্ট্রেনের ক্ষেত্রে নোভাভ্যাক্সের কার্যকারীতার প্রমাণ মিলেছে। এখনও আর্ন্তজাতিক উড়ান চালু হয়নি। সেটি চালু হলে দেশে ব্রিটেন স্ট্রেন ঢোকার সম্ভাবনা বা আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে বলেই জানাচ্ছেন গবেষকেরা। সে ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারিতে কোভোভ্যাক্সের ট্রায়াল শুরু হলে, প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে আগামী দিনে সেটিও ‘ক্লিনিক্যাল মোড’–এ প্রয়োগে ছাড়পত্র দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ঠিক যেমন ভাবে কোভ্যাক্সিনের প্রয়োগে ছাড়পত্র মিলেছে। তবে নোভাভ্যাক্স ব্রিটেন স্ট্রেনের ক্ষেত্রে কার্যকরী হলেও, দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেনের ক্ষেত্রে ততটা নয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy