রেড জ়োনে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। তার পরেও ভিড় বাজারে। রবিবার হলদিয়ার দুর্গাচকে। নিজস্ব চিত্র
সবে জ্বলেছিল আশার আলো। আপাতত তা-ই নিভু নিভু! প্রথম দফায় প্রায় সবাই সুস্থ হয়ে যাওয়ায় করোনা-যুদ্ধে পূর্ব মেদিনীপুরের সাফল্য তুলে ধরা হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র প্রতিনিধিও জেলায় এসে সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। ‘রেড’ থেকে ‘অরেঞ্জ জ়োন’-এর দিকে এগোচ্ছিল জেলা।
কিন্তু আপাতত তা আর হচ্ছে না। গত তিন দিনে জেলার ছ’ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সন্ধান মেলার পরে অন্তত দু’সপ্তাহ বিপজ্জনক ‘লাল’ তালিকাতেই থাকছে পূর্ব মেদিনীপুর।
হলদিয়া, এগরা এবং তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক— এই তিন এলাকাতেই প্রথম দফায় সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। নতুন ছ’জন আক্রান্তের মধ্যে চার জনই শিল্পশহর হলদিয়ার বাসিন্দা। আগেও হলদিয়ায় পাঁচ জন করোনা আক্রান্ত হন। তাঁদের মধ্যে তিন জন ছিলেন দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত। নতুন করে আক্রান্ত পঞ্চম জন হলেন মেচেদার আরপিএফ কনস্টেবল, যিনি সম্প্রতি দিল্লি থেকে ফিরেছেন। আর ষষ্ঠ জন হলেন পাঁশকুড়ার এক প্রৌঢ়া। এই পাঁশকুড়াতেই রয়েছে বড়মা করোনা হাসপাতাল, হু-র প্রতিনিধি যেখানে ঘুরে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সংক্রমিত স্বাস্থ্যকর্তার মৃত্যু রাজ্যে, এই মুহূর্তে আক্রান্ত ৪৬১
প্রথম দফায় সংক্রমিত জেলার সব এলাকাই পুরোপুরি ‘সিল’ করে দিয়েছিল প্রশাসন। তার পরেও কী ভাবে হলদিয়া থেকেই চার জন করোনা পজ়িটিভের সন্ধান মিলল? তবে কি ‘কমলা’ হওয়ার ইঙ্গিতেই শিথিল হল বিধিনিষেধ? আমজনতার পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনও আত্মতুষ্টিতে ভুগতে শুরু করল? প্রশ্ন উঠেছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলের ব্যাখা, ‘‘হলদিয়ায় যে এলাকায় আগে করোনা আক্রান্তদের হদিস মিলেছিল, সেই এলাকা ও আশপাশের বাসিন্দাদের নমুনা পরীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছিল। ওই এলাকাতেই চার জন আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে কোথাও সংক্রমণ ঘটেনি।’’ জেলার অন্যত্রও নমুনা পরীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। যদিও স্থানীয় সূত্রে খবর, হলদিয়ায় নতুন চার পজ়িটিভের মধ্যে এক জনের বাড়ি এমন এলাকায়, যেখানে আগে কেউ আক্রান্ত হননি।
আরও পড়ুন: ‘রিজার্ভ বেঞ্চ নেই! রোগী কে দেখবেন?’
অভিযোগ, নজরদারিতে ঢিলেমি ও মানুষের অসচেতনতাই এর জন্য দায়ী। অনেকের মতে, প্রাথমিক সাফল্য পেয়ে ঢিলেমি এসেছিল। অনেক দোকান খুলতে শুরু করে। নন্দকুমার বাজার, তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের রামতারক-সহ বিভিন্ন জায়গায় সাপ্তাহিক হাট ফের বসতে শুরু করে। শিথিলতা মানছেন জেলা পুলিশের এক আধিকারিকও। তিনি বলেন, ‘‘অরেঞ্জ জ়োনে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। ফের ছ’জন পজ়িটিভ হওয়ায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্যের নির্দেশ মেনেই নজরদারি চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy