হাসি দাশগুপ্ত
করোনায় ফের চিকিৎসকের মৃত্যু হল রাজ্যে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ হাসি দাশগুপ্ত। মৃত্যু হয়েছে জলপাইগুড়ির চিকিৎসক মৃণাল আচার্য এবং কল্যাণীর রমেন হাজরার। একই দিনে তিন চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার থেকে সাগর দত্তে অধ্যক্ষ পদে যোগ দিয়েছিলেন বছর পঞ্চান্নর হাসিদেবী। ওই হাসপাতাল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সেখানের একটি অনুষ্ঠানেও তিনি যোগ দেন। সেই সময় তাঁর কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। তবে বুধবার সকালে হাসপাতালে আসার পরে আচমকাই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরীক্ষায় দেখা যায় তাঁর অক্সিজেনের মাত্রা ৭৫%-এর নীচে নেমে গিয়েছে। দেরি না করে ওই হাসপাতালেই তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। সিটি স্ক্যান করে দেখা যায় হাসিদেবীর ফুসফুসের অর্ধেকের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ওই দিন বিকেলেই হাসিদেবীর পজ়িটিভ রিপোর্টও আসে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বেশিমাত্রায় সুগার ও রক্তচাপেরও সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে হাসিদেবীর। দ্রুত অবস্থার অবনতি হতে থাকায় বুধবার রাত ৮টা নাগাদ তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পাশাপাশি ওই দিনই মেডিক্যালে ভর্তি করা হাসিদেবীর স্বামীকেও। তিনিও করোনা আক্রান্ত। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে হাসিদেবীর। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ নামতে থাকায় এ দিন তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন চিকিৎসকেরা। তার আগেই বিকেলে মৃত্যু হয় ওই চিকিৎসকের।
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুনাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘এটাকে হ্যাপি হাইপক্সিমিয়া বলা যেতে পারে। এত দ্রুত ওঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে, যে কিছু করার সময় মেলেনি। একাংশ করোনা আক্রান্তের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শরীরে কোনও সমস্যা নেই, শ্বাসকষ্ট মালুম হচ্ছে না। অথচ অক্সিজেনের মাত্রা দ্রুত কমছে। যখন ধরা পড়ছে তখন অনেকটাই দেরি হয়ে যাচ্ছে।’’ চিকিৎসকেরা জানান হাসিদেবীর আগে থেকেই সুগার, রক্তচাপ ও স্থূলতার সমস্যা ছিল। এ দিন হাসিদেবীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় চিকিৎসক মৃণাল আচার্যের। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওই প্রাক্তনী জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে দীর্ঘদিন নাক-কান-গলার সার্জন ছিলেন। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি ভর্তি হন। সম্প্রতি তাঁর রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছিল। অন্যদিকে এ দিন দুপুরে ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় কল্যাণীর বাসিন্দা কার্ডিও থোরাসিক ভাস্কুলার সার্জন রমেন হাজরার (৬৮)। কয়েক দিন আগে তিনি হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরলেও বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরস পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক চিকিৎসক মানস গুম্টা বলেন, ‘‘একের পর চিকিৎসকের করোনায় মৃত্যু ক্রমশ দুঃসহ হয়ে উঠছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy