প্রতীকী ছবি।
করোনা আক্রান্ত পরিজনের জন্য ভেন্টিলেটর ও প্লাজমার খোঁজ চেয়ে টুইটারে সাহায্য চেয়েছিলেন মুম্বইয়ের এক তরুণী। অনেকে এগিয়ে আসায় তিনি সাহায্যও পেয়েছেন। তবে সেই সঙ্গেই ফোনে টানা পেয়ে চলেছেন কুৎসিত ছবি, কুপ্রস্তাব। টুইটারে সে কথা জানিয়ে তাঁর আবেদন, ‘মেয়েরা, কখনও নিজের মোবাইল নম্বর সবাইকে জানাবেন না।’’
মুম্বইয়ের এই ঘটনা সামনে আসার পরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন ফের সাইবার অপরাধের বাড়বাড়ন্তের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। গত বছর লকডাউন চলার সময়ও একইভাবে সাইবার অপরাধের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছিল। এ বারও তেমনই হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
গত বছরের তুলনায় এ বছর দেশজুড়ে নাগরিকদের দিশাহারা অবস্থা অনেক বেশি চোখে পড়ছে সমাজমাধ্যমে। অক্সিজেন, হাসপাতালের শয্যা, ভেন্টিলেটর, প্লাজমা— করোনা চিকিৎসায় নানা সাহায্য চেয়ে নেটমাধ্যমের সাহায্য সহনাগরিকদের দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেকে। সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য দিচ্ছেন নানা ব্যক্তিগত তথ্য— নাম, ফোন নম্বর, ঠিকানা ইত্যাদি। সেই ব্যক্তিগত তথ্যই সাইবার অপরাধীদের হাতিয়ার হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘গত বছরের লকডাউনের সময় থেকে এ বারের করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পর্যন্ত সাইবার অপরাধীরা নানা ভাবে নিজেদের কৌশল বদলাচ্ছে। আগে দেখা যাচ্ছিল ভুয়ো পরিচয়ে, নানা প্রলোভন দেখিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। এখন সমাজমাধ্যমেই অনেকের ব্যক্তিগত তথ্য থাকায় তারা অপরাধীদের কাছে সুযোগ চলে এসেছে।’’
মুম্বইয়ের ওই তরুণীর অভিজ্ঞতাও তেমনই। টুইটে তিনি জানিয়েছেন, তিন জন পুরুষ তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে অশ্লীল ছবি পাঠিয়েছিল, সাত জন টানা ভিডিয়ো কল করার চেষ্টা করেছিল। তিনি বিবাহিত কি না, তাঁকে সাহায্য করলে তিনি ‘ডেটিংয়ে’ যাবেন কি না এমন প্রশ্নও তাঁকে পেতে হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি খুবই জটিল। কারণ, যোগাযোগ করার মতো তথ্য না দিয়ে সাহায্য পাওয়া মুশকিল। আবার ব্যক্তিগত তথ্য গণ-পরিসরে দিলে তা অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকেই যায়।
তবে এই আশঙ্কার কারণে সমাজমাধ্যমকে বাতিল করাও উচিত নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ সমাজমাধ্যমের সূত্রে অনেকে সহনাগরিকদের কাছ থেকে উপকারও পাচ্ছেন। ডেটিং অ্যাপে প্লাজমা চেয়ে এক তরুণী তাঁর বান্ধবীর জন্য প্লাজমা পেয়েছেন বলে টুইট করেছিলেন। সম্প্রতি ভাইরাল হয় সেই খবর। বিভাসবাবু বলছেন, ‘‘করোনার মতো রোগ তো ব্যক্তিগত নয়, তাই একত্রিত হয়েই তার বিরুদ্ধে লড়তে হবে। আর এখন সেই একত্রিত হওয়ার পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘ঝুঁকি থাকবেই, তাই যতটা প্রয়োজন ততটা তথ্য দেওয়া, সাহায্য করতে গেলে বা পাওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভব হলে যাচাই করে নিলে হয়তো ঝুঁকির সম্ভাবনা কমানো যাবে।’’
যে কাজের জন্য কেউ তথ্য দেন, তা মিটে গেলে সেই তথ্য মুছে দিলেও অপব্যবহারের আশঙ্কা কিছুটা কমতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে যে সমাজমাধ্যমে তথ্য দেওয়া হচ্ছে, তারও দায়িত্ব বর্তায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy