গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
করোনাভাইরাসের জেরে রাজ্যে আপাতত পুরভোট না-করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সোমবার সর্বদলীয় বৈঠকের পরে বিবৃতি দিয়ে সে-কথা জানিয়েছে তারা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘করোনাভাইরাস মোকাবিলা আমাদের অগ্রাধিকার। পুরভোটও আমাদের অগ্রাধিকার। কিন্তু ভোট কিছু দিন পিছিয়ে গেলে ক্ষতি হবে না।’’
আগামী ৮ মে কলকাতা পুরসভার চলতি বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। মে মাসেই আরও ৮৫টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হবে। (এর মধ্যে চন্দননগরে ইতিমধ্যেই প্রশাসক বসানো হয়েছে) আর ছ’টি পুরসভায় জুনে মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
এই অবস্থায় নির্বাচিত পুর বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ভোট করা না-গেলে প্রশাসক বসাতে হবে, এমনই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের। যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস বলেন, ‘‘এ নিয়ে এত দ্রুত মন্তব্য করা যায় না।’’
হাওড়া-সহ যে ১৭টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে, সেখানে দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখাশোনা করছেন প্রশাসক। দার্জিলিঙে পুর বোর্ডের মেয়াদ ২০২২ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে এখন প্রশাসকই বোর্ড চালাচ্ছেন। রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলির সঙ্গে এখানেও ভোট করানোর জন্য তৈরি কমিশন।
পুরভোট পিছোলেও কবে তা হবে, তা নিশ্চিত করে বলেনি কমিশন। কমিশনার জানান, পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। সেই পর্যালোচনা ১৫ দিন বা সপ্তাহখানেক পরেও হতে পারে। তবে তিনি জানান, কমিশন ভোটের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
এ দিন সরোজিনী নায়ডু সরণির কমিশনের দফতরে দশটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনার, সচিব নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য এবং যুগ্মসচিব ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে ভোট সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।
পরে কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ সর্বদলীয় সভার আলোচনায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা তাঁদের বক্তব্যে করোনা রোগের পৃথিবী, দেশ ও রাজ্যব্যাপী প্রাদুর্ভাবে উদ্বেগ ব্যক্ত করলেন।’ কমিশনারের সংযোজন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা নিয়ে সকলের মত চাইলাম। সবাই দেরি করার ব্যাপারে সহমত হয়েছেন।’’
এ দিনের সর্বদলীয় বৈঠক শেষে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে পুরভোটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়া হোক। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নিক।’’ সরাসরি ভোট পিছোনোর দাবি না-করলেও পরোক্ষে সে-কথাই বলেছেন বিজেপি নেতা সব্যসাচী দত্ত। তাঁর কথায়, ‘‘নির্বাচনের জন্য রাজ্য বিজেপি প্রস্তুত। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে করোনাভাইরাস ছড়াক, তা-ও আমরা চাই না।’’
রাজ্য সরকার ভোট থেকে পালাতে চায় বলে মন্তব্য করলেও মানুষের কথা ভেবে কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে আপত্তি নেই বলে জানান বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। যদিও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে এক দিনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট করানোর দাবি এ দিনও তুলেছেন বাম নেতৃত্ব। ভোট পিছোনোর সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছেন কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। তবে পরিস্থিতির বদল হলে দ্রুত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার দাবি করেছেন তিনি। দিন ঘোষণার আগে সর্বদলীয় বৈঠকের দাবিও রয়েছে কংগ্রেসের।
ভোট আপাতত না-করার সিদ্ধান্ত নিলেও বুথের পরিকাঠামো দেখাশোনা, ভোটার তালিকা তৈরি, ভোটকর্মীদের তথ্য ভান্ডার তৈরি-সহ ভোটের খুঁটিনাটি কাজকর্ম যথারীতি চলবে, দাবি কমিশনের। যদিও সেটা খানিকটা গতি হারাবে বলেই ধারণা বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy