লক্ষ্মণরেখা: ওষুধের দোকানে লম্বা লাইন। ক্রেতাদের সুরক্ষায় চক দিয়ে দাঁড়ানোর জায়গা নির্ধারণ করে দিলেন পুলিশ কর্মীরা। বুধবার সিআইটি রোডে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
সুগার, রক্তচাপ, গ্যাস, জ্বরের ওষুধ কমছে হুহু করে। এমন চললে সঙ্কটের আশঙ্কা করছেন এসএসকেএম হাসপাতালের কাছের ওষুধ বিক্রেতা সৌমেন মুখোপাধ্যায়। বাজারের আনাজের মতো ওষুধও মজুত করার প্রবণতা চার দিকে। সেই সঙ্গে লকডাউনের দৌলতে গণপরিবহণ নিয়ন্ত্রণও দোসর। এই পরিস্থিতিতে পাইকারি ও খুচরো দোকানে ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা থমকে যেতে বসেছে বলে অভিযোগ তুলেছে সর্বভারতীয় ওষুধ ব্যবসায়ী সংগঠন।
রবিবার রাত থেকে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। সড়কপথেও বন্ধ গণপরিবহণ। তাদের আশঙ্কা, কয়েক দিনের মধ্যে সরকার নিশ্চিত ওষুধ সরবরাহের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা না-করলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। মূলত কলকাতার বাগড়ি মার্কেট ও মেহতা বিল্ডিং থেকে রাজ্যের সব জেলায় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। জেলার পাইকারি ও খুচরো ওষুধ বিক্রেতাদের ওষুধ জোগান দেন মূলত ডিস্ট্রিবিউটরেরাই। সোমবারের পর থেকে ওই দুই বাজারে মাত্র পাঁচ শতাংশ দোকান খোলা থাকছে। তা-ও দুপুর পর্যন্ত। জেলার ওষুধে-কারবারিদের লোকজন কলকাতায় আসতে পারছেন না বলেই ওই সব দোকান বন্ধ করা হচ্ছে বলে ওষুধ ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্রের ব্যাখ্যা।
সংগঠনের নেতারা জানাচ্ছেন, কলকাতা ও জেলার সব ওষুধের দোকানে তিন থেকে পাঁচ দিনের ওষুধ মজুত আছে। পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় বিভিন্ন সংস্থা থেকে কলকাতার বাজারে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ। ফলে কলকাতা থেকে জেলায় ওষুধ পাঠানো যাচ্ছে না। লকডাউনের ফলে শ্রমিকের অভাবে ওষুধের কাঁচামাল তৈরির কারখানাগুলিও স্তব্ধ। তাই ওষুধ তৈরি ও সরবরাহ দু’টি ক্ষেত্রেই এর প্রভাব পড়েছে। কয়েক দিন পরে ওই সব দোকানের মজুত শেষ হয়ে গেলেই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য, অবস্থার ফেরে সব ওষুধই জীবনদায়ী। করোনা-আবহে স্যানিটাইজ়ার পর্যন্ত কার্যত জীবনদায়ী হয়ে উঠেছে। আচমকা অন্য কোনও সংক্রমণে যে-কোনও ওষুধই জীবনদায়ী হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। অল ইন্ডিয়া কেমিস্ট ও ডিস্ট্রিবিউটর ফেডারেশনের সম্পাদক জয়দীপ মজুমদার বলেন, ‘‘অবিলম্বে ওষুধ সরবারহের জন্য রাজ্য সরকারের বিশেষ ব্যবস্থা করা উচিত। ওষুধ সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবা দরকার।’’ জয়দীপবাবুর প্রশ্ন, লকডাউনে ওষুধের দোকান খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দোকানে ওষুধ না-পৌঁছলে মানুষ তা পাবেন কী করে?
মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে জেলাশাসকদের ভিডিয়ো-সম্মেলন হয়। জেলাশাসকদের তরফে ওষুধ সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি মুখ্যসচিবকে জানানো হয়। এক জেলাশাসক বলেন, ‘‘ওষুধের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যসচিব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy