জাতীয় সড়ক অবরোধ করোনা রোগীদের। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।
সরকারি ‘সেফ হোম’-এ অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন করোনা রোগীরা। এর ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় গুরুত্বপূর্ণ ওই জাতীয় সড়কে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষমেশ নামতে হয় ইটাহার থানার পুলিশকে। রোগীদের বুঝিয়ে, সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ফের তাঁদের ‘সেফ হোম’-এ ফেরত পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সকালে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের গটলু এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
গটলুর হোমগার্ড প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ‘সেফ হোম’ তৈরি করা হয়েছে। এই মুহূর্তে সেখানে অন্তত ৪০ জন করোনা রোগী ভর্তি। কিন্তু রোগীদের পর্যক্ষেণে রাখা তো দূরঅস্ত্, ওই সেফ হোমে ন্যূনতম স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা বিধিও পালন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন রোগীরা। তাই প্রতিবাদ জানাতে ‘সেফ হোম’ থেকে বেরিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধ রোগীদের দাবি, অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে সেফ হোমে। খাওয়ার জলের বোতলের নীচে শ্যাওলা জমে রয়েছে। এ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের কাছে বার বার অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি। তাই সংক্রমিত অবস্থাতেই পথে নামতে বাধ্য হন তাঁরা।
ওই সেফ হোমে ভর্তি এক রোগী বলেন, ‘‘এখানে খাবারের গুণমান খুবই খারাপ। সময় ধরে করোনা রোগীদের কী কী খাবার দেওয়া উচিত, তা ঠিক করে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু এখানে তা মানা হচ্ছে না। উল্টোপাল্টা খাবার দিচ্ছে। এমনকি পানীয় জলের ঠিকঠাক ব্যবস্থাও নেই। প্রচণ্ড অসুবিধায় রয়েছি আমরা। জেলাশাসক বা বিডিও পদাধিকারী কাউকে এসে কথা বলতে হবে আমাদের সঙ্গে।’’
পুলিশের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ তুলে নিলেও, পরিস্থিতি যদি না শোধরায় বুধবার থেকে টানা অবস্থান বিক্ষোভে নামবেন বলে জানান অন্য এক রোগী। তিনি বলেন, ‘‘এখানে খাবারের ব্যবস্থা খুবই খারাপ। খাওয়ার জলে শ্যাওলা। একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। রোগীদের উপযুক্ত পুষ্টিকর খাবারই দেওয়া হচ্ছে না। একটানা বাঁধাকপি আর ঢ্যাঁড়শের তরকারি চলছে। এক বেলা ডিম দিয়ে দায় সারা হচ্ছে। এতে মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়ছি আমরা। তাই পথে নামতে বাধ্য হয়েছি। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে কালকের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে বলে। তা যদি না হয় তাহলে ফের বুধবার থেকে পথে নামব আমরা।’’
গোটা দেশের পাশাপাশি এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গেও দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। বাড়ছে কোভিড রোগীদের মৃত্যুও। কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে এ নিয়ে বার বার সতর্ক করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে ‘সেফ হোম’-এর রোগীরা রাস্তায় নেমে আসায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। রোগীদের অভিযোগ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে প্রশাসনিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আর্জি জানানো হবে বলে জানিয়েছে ইটাহার থানার পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy