চলছে করোনার পরীক্ষা। প্রতীকী ছবি
আগামী সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যের চারটি বেসরকারি হাসপাতাল-সহ একটি ল্যাবে শুরু হতে চলেছে কোভিড-১৯-এর নমুনা পরীক্ষা। এমনটাই জানা গিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে।কিন্তু পরিকাঠামোর সমস্যা থাকায় রাজ্যের অধিকাংশ বেসরকারি ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরিই কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য অনুমোদন চেয়ে আবেদনপত্র পর্যন্ত জমা দেয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রকে। কোভিড-১৯ ভাইরাসের আক্রমণ দেশে এই মুহূর্তে দ্বিতীয় পর্যায়ে। তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছনোর আগে গোটা রাজ্যে পরীক্ষাকেন্দ্র আরও অনেক বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেই এই ৪টি বেসরকারি হাসপাতাল এবং ১টি ল্যাবের নাম পাঠানো হয়েছিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর কাছে অনুমোদনের জন্য। এই হাসপাতালগুলিতে আইসিএমআরের নির্ধারিত পরিকাঠামো থাকলেও, কোভিড-১৯ টেস্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কিট না থাকায় ওইপরীক্ষা শুরু করা যায়নি বলে জানা গিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে। তবে সোমবার থেকে দেশে তৈরি কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিট আইসিএমআরের ছাড়পত্র পাওয়ায় ওই চারটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ১টি ল্যাবে খুব তাড়াতাড়ি ওই পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে মনে করছেন ওই প্রতিষ্ঠানগুলির আধিকারিকরা। এই তালিকায় রয়েছে অ্যাপোলো গ্লেনেগল্স, ফর্টিস, মেডিকা, নিউটাউনের সুরক্ষা ডায়াগনস্টিক এবং সল্টলেকের এসআরএল ল্যাবরটরিজ।
ফর্টিস হাসপাতালের এক আধিকারিক এ দিন বলেন, ‘‘টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় কিট কোথা থেকে কিনতে হবে তা আমাদের জানাবে আইসিএমআর। কিট এলেই আমরা পরীক্ষা শুরু করতে পারব।”একই কথা বলেন এসআরএল ল্যাবের এক আধিকারিক। তবে, কবে এই কিট এসে পৌঁছবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তাঁরা।
আরও পড়ুন: আজ মধ্যরাত থেকে সারা দেশে ২১ দিনের লকডাউন, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
অন্য দিকে আইসিএমআর জানিয়েছে, দেশের দু’টি সংস্থা আইসিএমআরের নির্ধারিত যোগ্যতামান অর্জন করেছে। একটি অ্যালতনা ডায়াগনস্টিক এবং অন্যটি পুণের মাই ল্যাব। আইসিএমআরের নির্ধারিত যোগ্যতামান অনুসারে এই দু’টি সংস্থারই কিটের সাহায্যে যে কোনও কোভিড-১৯ নমুনা ১০০ শতাংশ পজিটিভ বা নেগেটিভ বলা সম্ভব হচ্ছে। মাই ল্যাব কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, তাঁরা তাঁদের কিটের দাম ১২০০ টাকা রেখেছে। সপ্তাহে ১ লাখ পর্যন্ত কিট তাঁরা জোগান দিতে পারবে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই কিটের জোগান এলেই চালু হয়ে যাবে ওই পাঁচটি বেসরকারি কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যকে চিন্তায় রেখেছে বাকি বড় ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সূত্রের খবর, রাজ্যের বড় ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলি কোভিড-১৯ টেস্টের অনুমোদন পাওয়ার কোনও চেষ্টাই করেনি। এ রকম একটি ল্যাবের শীর্ষ আধিকারিককে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি স্পষ্ট বলেন,‘‘আমরা আবেদন করিনি অনুমোদনের জন্য। প্রথমত আমাদের সেই পরিকাঠামো নেই। কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা এবং নমুনা সংগ্রহ করতে গেলে যে সতর্কতা নিতে হয় এবং যে ধরনের সুরক্ষা প্রয়োজন তা আদৌ আমাদের নেই। তার থেকেও বড় কথা লকডাউনের পর আমাদের কর্মীদের অধিকাংশই আসতে পারছেন না। ফলে আমরা অসমর্থ।”একই ভাবে পরিকাঠামোর অভাবকেই অনুমোদন চেয়ে আবেদন না করার কারণ হিসাবে জানান অন্য একটি ল্যাব চেনের শীর্ষ আধিকারিক।
আরও পড়ুন: ৩ হাজার আইসোলেশন বেডের ‘করোনা হাসপাতাল’ হচ্ছে মেডিক্যাল কলেজে
স্বাস্থ্য কর্তাদের চিন্তা বাড়িয়েছে, রাজ্যের প্রথম সারির বেসরকারি হাসপাতালগুলির অধিকাংশ করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নিয়ে বিশেষ আগ্রহ না দেখানোয়। দক্ষিণ কলকাতার এ রকম একটি বেসরকারি হাসপাতাল গোষ্ঠীর এক আধিকারিক ইঙ্গিত দেন, ‘‘কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য সম্পূর্ণ আলাদা করে পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। শুধু তাই নয়, করোনা পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বড় খরচ করতে হবে হাসপাতালকে। সেই খরচ করতে আদৌ করতে রাজি নয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।”
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে সরকারি পরিকাঠামোকেই আরও উন্নত করে করোনা চিকিৎসার উপযোগী করতে উদ্যোগী রাজ্য। একদিকে যেমন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে পুরোপুরি করোনা চিকিৎসার জন্য ‘ডেডিকেটেড’ করা হয়েছে, তেমনই রাজারহাটে ক্যানসার হাসপাতালের পরিকাঠামোকেও করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলছে রাজ্য। একই ভাবে উত্তরবঙ্গেও একই রকম সরকারি পরিকাঠামো তৈরি করে বেসরকারি ক্ষেত্রের অভাবকে পরিপূরণ করতে চাইছে রাজ্য। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলা মেডিক্যাল কলেজগুলির মধ্যে মেদিনীপুর ইতিমধ্যেই অনুমোদন পেয়েছে। বাকিগুলো অনুমোদন পেলেই রাজ্যের করোনামোকাবিলার হাতিয়ার কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy