প্রতীকী চিত্র।
বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল রাজ্য হেল্থ রেগুলেটরি কমিশন। স্বাস্থ্য কমিশনের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হল। পাশাপাশি, শ্যামনগরের এক কোভিড আক্রান্ত চিকিৎসকের চিকিৎসার জন্য বাইপাসের ধারের অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতাল যে আকাশছোঁয়া বিল দিয়েছিল তা পুনর্বিবেচনা করে কমানোর নির্দেশও দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন।
অগ্রিম ২ লাখ টাকা না দেওয়ায় কোভিড আক্রান্ত বৃদ্ধাকে জরুরি বিভাগের সামনে অ্যাম্বুল্যান্সে ফেলে রাখা হয় কোনও চিকিৎসা না করেই। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের একের পর এক অ্যাডভাইজরির পরেও বেসরকারি হাসপাতালগুলি উদাসীন।
বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় একটি অডিয়ো বার্তায় জানিয়েছেন, ‘‘ঘটনাটি সত্যি মিথ্যে যা-ই হোক, এটি একটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অমানবিক ঘটনা। আমি ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছি দু’টি হাসপাতালের এই বিষয়ে বক্তব্য জানাতে। একটি হাসপাতাল যেখানে ওই বৃদ্ধা ভর্তি ছিলেন এবং অন্য হাসপাতাল যেখানে তাঁকে আনা হয়েছিল ভর্তি করতে।”
আরও পড়ুন: কমল আরও এক দিন, রাজ্যে ২৮ অগস্ট হচ্ছে না পূর্ণ লকডাউন
তমলুকের বাসিন্দা লায়লা বিবির ছেলের অভিযোগ, প্রথমে তিনি মাকে পার্ক সার্কাসের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেছিলেন। সেখানে কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর নার্সিংহোম থেকে কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে বলা হয়। অভিযোগ, এ ক্ষেত্রেও নার্সিংহোম স্বাস্থ্য কমিশনের অ্যাডভাইজরি মেনে কাজ করেনি। পরিবারের সদস্যরা নিজেরাই খোঁজখবর নিয়ে বাইপাসের ধারের ওই হাসপাতালের হদিস পান এবং সেখানে ভর্তি করতে যান লায়লাকে। বৃদ্ধার ছেলের অভিযোগ, প্রথমেই তাঁদের কাছে তিন লাখ টাকা অগ্রিম চাওয়া হয়। আগের নার্সিংহোমে ৯০ হাজার টাকা বিল মেটানোর পর তাঁরা প্রথমে বাইপাসের ধারের হাসপাতালে ৮০ হাজার টাকা দেন। ডেবিট কার্ডের একদিনে টাকা তোলার উর্ধ্বসীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা রাত ১২টা পর্যন্ত সময় চান বাকি টাকা দেওয়ার জন্য। কিন্তু কোনও অনুরোধেই কর্ণপাত করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জরুরি বিভাগের সামনে অ্যাম্বুল্যান্সেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় লায়লার।
আরও পড়ুন: জ্বরে অচেতন বৃ্দ্ধ পড়ে ফুটপাতে, পুলিশের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দর্শক বাসিন্দারা
এ দিন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি কমিশনের পরবর্তী শুনানির দিন, অর্থাৎ ১৯ অগস্ট এই মামলার শুনানি করার।” তিনি জানান, এই প্রথম কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত কোনও মামলা গ্রহণ করল।
এ দিন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামনগরের কোভিড আক্রান্ত চিকিৎসক প্রদীপ ভট্টাচার্যের বিলের বিষয়টি নিয়েও তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান। শ্যামনগরের ওই চিকিৎসক কোভিড আক্রান্ত হয়ে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর পরিবারকে ১৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার বিপুল অঙ্কের বিল ধরানো হয়। এ প্রসঙ্গে অসীমবাবু বলেন, ‘‘আমি ওই হাসপাতালকে বলেছি ওই বিল রিভিউ করার। পরিবারের সদস্যরা যদি টাকাপয়সা মিটিয়েও দিয়ে থাকে তা হলেও যেন রিভিউ করে বিলের অঙ্ক কমিয়ে টাকা ফেরত দেওয়া হয়।” অসীমবাবু জানিয়েছেন, ওই হাসপাতাল বিল পুনর্বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy