ভার্চুয়াল র্যালিতে অমিত শাহের মুখে বারবার শোনা গেল ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা। ছবি: পিটিআই
করোনার কথা বললেন, ঘূর্ণিঝড়ের কথা বললেন, সিএএর কথা বললেন। কেন্দ্র কী কী করেছে, তার হিসেব দিলেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে কাজের হিসেব চাইলেন। নানা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা বাংলার মানুষকে পেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে প্রবল তোপ দাগলেন। কিন্তু প্রত্যেকটা ইস্যুর শেষে ঘুরেফিরে ঢুকে পড়লেন সেই বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গে, যা এখনও অন্তত ৮-৯ মাস দূরে। কখনও ‘সোনার বাংলা গড়ার’ ডাক, কখনও ‘পরিবর্তনের’ আহ্বান, অমিত শাহের ভাষণে প্রতিধ্বনির মতো বার বার শোনা গেল ২০২১ সালে বাংলার বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠার কথা। আর সেই লক্ষ্যে যে খুব বড় হাতিয়ার হিসেবে তিনি ব্যবহার করতে চলেছেন করোনার জেরে তৈরি তৈরি হওয়া পরিস্থিতিকে, তা বেশ স্পষ্ট হয়ে গেল। লকডাউনের পরে বাংলার জন্য আয়োজিত তাঁর প্রথম কর্মসূচিতে, ভোটের দামামাটা একেবারে খোলাখুলিই বাজিয়ে দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভোটের দামামা সজোরে বাজিয়ে দিলেন অমিত শাহ। সঠিক সময়ে হলে পশ্চিমবঙ্গে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন এখনও ৮-৯ মাস দূরে। কিন্তু বাংলার জন্য তাঁর প্রথম ভার্চুয়াল র্যালিতে বার বার অমিত শাহ বুঝিয়ে দিলেন— একমাত্র লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গের শাসন ক্ষমতা দখল। ‘পরিবর্তনের লড়াই’, ‘সোনার বাংলা গড়ার লড়াই’, ‘শরণার্থীর সম্মানের লড়াই’— এমন নানা লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করলেন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করতে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, সিএএ-র এই বিরোধিতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই রাজনৈতিক শরণার্থী বানিয়ে দেবে। এবং সেই মন্তব্যই এ দিনের ভাষণের মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে ধরা দিল ভার্চুয়াল র্যালির শেষে।
করোনা এবং আমপানে (প্রকৃত উচ্চারণে উম পুন) মৃতদের ‘আত্মার শান্তি’ কামনা করে এ দিন ভাষণ শুরু করেছিলেন অমিত শাহ। কিন্তু সেই সূত্রপাত যে শুধুমাত্র ভূমিকাই, তা স্পষ্ট হয়ে গেল ঠিক পরের লাইনেই। করোনা এবং আমপানে মৃত্যুর প্রসঙ্গ ছুঁয়েই তিনি ঢুকে পড়লেন রাজনৈতিক হিংসায় মৃত্যুর অভিযোগে। গত কয়েক বছরে ১০০-র বেশি বিজেপি কর্মীকে খুন করার অভিযোগ তুলে অমিত শাহ বললেন— বাংলায় পরিবর্তনের লড়াইয়ে যাঁরা প্রাণ দিলেন, তাঁদের পরিবারকে সেলাম। পরিবর্তনের ইতিহাসে এই বিজেপি কর্মীদের অবদান ‘স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে’ বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করলেন। তার পরে গোটা ভাষণ জুড়ে যত রকম ইস্যুতে তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন, তত বারই সরকার বদলে দেওয়ার ডাক দিলেন।
অমিত শাহের এ দিনের ভাষণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিল ভোটমুখী। বাংলা যে তাঁর দলের কাছে এখন পাখির চোখ এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে চোখ রেখে যে প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে, সে বার্তা এ দিন স্পষ্ট ছিল বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতির ভাষণে। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি ৩০৩টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সরকার গড়েছে ঠিকই, কিন্তু আমার মতো কর্মীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল পশ্চিমবঙ্গ থেকে জেতা ১৮টি আসন।’’ কেন পশ্চিমবঙ্গের এই ১৮ আসন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন অমিত শাহ। তাঁর কথায়, গোটা দেশে যখন গণতন্ত্রের ভিত মজবুত হচ্ছে, তখনও পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসা চলছে। পশ্চিমবঙ্গে যে রকম রাজনৈতিক হিংসা দেখা যাচ্ছে, দেশের কোথাও এখন তা হয় না বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন। তাই অমিত শাহের ঘোষণা— বিজেপি শুধু বিরোধী হিসেবে আন্দোলন করার জন্য বা নিজের রাজনৈতিক বিস্তারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে লড়ছে না, বিজেপি লড়ছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতার অলিন্দে পরিবর্তন আনার জন্য।
ভার্চুয়াল র্যালির আগে বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র উপহার অমিত শাহকে। পাশে আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। ছবি: পিটিআই
আরও পড়ুন: চিন কি আমাদের ভূমি দখল করেছে? শাহের সভার আগে টুইট অভিষেকের
ভাষণের শুরুর দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের নাম উচ্চারণ করছিলেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শুরুর দিকে তাঁর কটাক্ষগুলো ছিল মূলত নাম না করে। দ্বিতীয় মোদী সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষেই যে এই ‘পশ্চিমবঙ্গ জনসম্পর্ক’ র্যালি, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে অমিত শাহ দাবি করেন, বিজেপি সেই গোত্রের দল নয়, যারা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও শুধু নালিশই করতে থাকে। যত বড় জনাদেশই মিলুক, বিজেপি প্রতি বছর তার কাজের হিসেব নিয়ে মানুষের মুখোমুখি হয়— দাবি দলের প্রাক্তন সভাপতির। নাম না করে বাংলার শাসক দলের প্রতি তাঁর কটাক্ষ— ক্ষমতা আপনাদের হাতে, কিন্তু যখন সামলাতে পারছেন না, তখনই কেন্দ্রকে আক্রমণ করছেন।
প্রথম মোদী সরকারের ৫ বছর এবং দ্বিতীয় মোদী সরকারের ১ বছরে ঠিক কী কী করেছে সরকার, এ দিন তার খতিয়ান তুলে ধরেছেন অমিত শাহ। জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ থেকে উরি বা পুলওয়ামা কাণ্ডের জবাবে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা এয়ার স্ট্রাইক— সব কিছুরই উল্লেখ করেন তিনি। জনধন অ্যাকাউন্ট খোলানো, সেই সব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরকারি আর্থিক সুবিধা বা বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের টাকা সরাসরি প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেওয়াকে মোদী সরকারের বড় কৃতিত্ব হিসেবে অমিত শাহ তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সারা দেশে কত জন বাড়ি পেয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে কত জন পেয়েছেন, সারা দেশে এই ক’বছরে কত কিলোমিটার মহাসড়ক তৈরি হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে কতটা হয়েছে, অন্যান্য প্রকল্পের সুবিধা পশ্চিমবঙ্গে কতটা পাঠানো গিয়েছে— সে সবের বেশ কিছু হিসেব এ দিন অমিত শাহ তুলে ধরেন। তার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছোড়েন তিনি। ‘‘মমতাদিদি, আপনি তো আমাদের হিসেব চান, আমি হিসেব নিয়ে এসেছি। কালকে সাংবাদিক সম্মেলন করে আপনার কাজের হিসেব নিয়ে আসুন,’’— বলেন অমিত শাহ। তার পরেই কটাক্ষ ছোড়েন, ‘‘বোমা বিস্ফোরণ, বন্ধ কারখানা, বিজেপির কর্মীদের খুন হওয়ার হিসেব দেবেন না যেন আবার।’’
আরও পডু়ন: ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড মৃত্যু, দেশে করোনায় আক্রান্ত ২.৬৬ লক্ষ
আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে চালু হতে না দেওয়া নিয়ে এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গোটা দেশ এমনকি শেষ পর্যন্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করে দিয়েছেন, শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ার ভয়ে পশ্চিমবঙ্গের গরিব মানুষকে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা বিনামূল্যে পাওয়ার সুযোগ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বঞ্চিত করছেন— মন্তব্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। অমিত শাহের কথায়, ‘‘নির্বাচন হতে দিন। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেওয়ার ১ মিনিটের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের অধিকার দেওয়া হবে।’’
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ বাতিল করা, অযোধ্যা বিবাদ মিটিয়ে রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু করা, তাৎক্ষণিক তিন তালাকের অবলুপ্তি ঘটানো, সংসদে সিএএ পাশ করানো— মোদী সরকারের সাফল্যের তালিকায় এইগুলোকেও এ দিন যোগ করেন শাহ। তার পরে সিএএ প্রসঙ্গে তীক্ষ্ণ আক্রমণ শুরু করেন। সিএএ পশ্চিমবঙ্গের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলতে আসতে বাধ্য হওয়া শরণার্থীদের এবং বিশেষত মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য কতটা জরুরি ছিল ওই আইন, তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন শাহ। সিএএ-র তীব্র বিরোধিতা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে শরণার্থী এবং মতুয়াদের বিরোধিতা করছেন বলে তিনি তোপ দাগেন। সংসদে সিএএ পাশ হওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘রাগে লাল হয়ে গিয়েছিলেন’ এবং ‘তাঁর কথা বলার সহবত ছিল না’ বলে অমিত শাহ এ দিন মন্তব্য করেছেন। সিএএ-র এই তীব্র বিরোধিতার অনেক বড় মূল্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চোকাতে হবে বলে দাবি করেন তিনি। অমিত শাহ বলেন, ‘‘ভোটবাক্স খুলতে দিন। বাংলার জনতা আপনাকেই রাজনৈতিক শরণার্থী বানাতে চলেছেন।’’
প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি (পিএমকিসান) প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের কৃষকরা ৬ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন, সরাসরি তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা এই প্রকল্পের সুযোগ পাচ্ছেন না, কারণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার কিছুতেই কৃষকদের নামের তালিকা পাঠাচ্ছে না— অভিযোগ করেন শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘আমি আবার মমতাদিদিকে অনুরোধ করছি, আপনি কৃষকদের তালিকা পাঠান, আমরা তাঁদের অ্যাকাউন্টে ৬,০০০ টাকা করে পাঠাব। কেন আপনি আপনার কৃষকদের সরকারের কাছ থেকে সহায়তা পেতে বাধা দিচ্ছেন?’’
করোনা সংক্রমণ এবং তার প্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিকে অন্যতম নির্বাচনী হাতিয়ার করে তুলতে চায় বিজেপি, অমিত শাহের কথায় তা স্পষ্ট। এ দিন ওই প্রসঙ্গ তুলে শুরুতেই অমিত শাহ দাবি করেন, বাংলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোয় মুখ্যমন্ত্রীর অনীহা রয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে কাজে গিয়ে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিচ্ছে সব রাজ্য, শুধু পশ্চিমবঙ্গ ফেরাতে চাইছে না বলে শাহের অভিযোগ। তাঁর কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশ ১৭০০ ট্রেন পেয়েছে, বিহার ১৫০০। কিন্তু আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম, বাংলার জন্য ট্রেনের নাম মমতা দিদি যখন ‘করোনা এক্সপ্রেস’ রাখলেন। আমরা এর নাম রেখেছিলাম শ্রমিক স্পেশাল।’’
পরিযায়ী শ্রমিকদের অপমান করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করে এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্বর তুঙ্গে তোলেন অমিত শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘আপনি পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষতস্থানে নুন ছেটানোর কাজ করেছেন এবং তাঁরা এটা ভুলে যাবেন না।’’ পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যে সব ট্রেন পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে, সেগুলির নাম ‘করোনা এক্সপ্রেস’ রাখার ফল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ভুগতে হবে হবে অমিত শাহ মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, ‘‘মমতাদিদি, আপনার দেওয়া ‘করোনা এক্সপ্রেস’ নামটা আপনার প্রস্থান-পথে পরিণত হবে।’’
এ দিন বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে ভাষণ শুরু করেছিলেন অমিত শাহ। শেষ করেন ১২টা ১৫ মিনিটে। ৫০ মিনিটের ভাষণে যে বার বার পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতার আসন্ন হাতবদলের কথা শুনিয়েছেন তিনি, এর আগে কখনও ততটা উঁচুতে ছিল না ‘পরিবর্তনের’ ডাক। ভার্চুয়াল র্যালির কলকাতার মঞ্চে হাজির ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায় এবং কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ। আর দিল্লির মঞ্চে অমিত শাহের পাশে ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়, স্বপন দাশগুপ্ত, দেবশ্রী চৌধুরী, এস এস অহলুওয়ালিয়ারা। ভাষণ দেওয়ার সুযোগ অবশ্য সবার জন্য ছিল না। প্রথমে কলকাতা থেকে ভাষণ দেন মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষ। তার পরে দিল্লির মঞ্চে হাজির দেবশ্রী চৌধুরীকে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু কলকাতার মঞ্চ থেকে অনুরোধ করেন অমিত শাহকে ভাষণ দেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানাতে। এর পরে ভাষণ শুরু করেন অমিত। ভাষণের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী সংগঠন সম্পাদক শিবপ্রকাশ থেকে শুরু করে অরবিন্দ মেনন পর্যন্ত সকলের নামই ছুঁয়ে যান। কিন্তু পরে পশ্চিমবঙ্গে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রসঙ্গে তিন জনের নাম উল্লেখ করে বুঝিয়ে দেন যে, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়ের প্রতিই তাঁর ভরসা সবচেয়ে বেশি।
অমিত শাহের সভা শেষ হতেই পর পর টুইট শুরু হয় তৃমমূল শিবির থেকে। শাহের এই ভার্চুয়াল র্যালি শুরুর কিছু ক্ষণ আগেই টুইট করেছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চিন কি ভারতের ভূখণ্ডের অংশ দখল করেছে? সরাসরি অমিত শাহকে প্রশ্ন করেছিলেন অভিষেক। ভাষণ শেষ হতেই অভিষেক ফের টুইট করেন। তিনি লেখেন, অমিত শাহের ভাষণে কোনও ‘সারবত্তা’ ছিল না। শাহকে কটাক্ষ করে অভিষেক লেখেন, তৃণমূলের ‘প্রস্থানের’ স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি উত্তর দিন, চিন কবে আমাদের এলাকা থেকে প্রস্থান করবে।
টুইটারে শাহকে আক্রমণ করেন তৃণমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। রাজ্য যখন একটা অতিমারি এবং একটা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়ছে, তখনও রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছুতে অগ্রাধিকার নেই অমিত শাহের— ইঙ্গিত করেন পার্থ। তিনি লেখেন, ‘‘বাংলা, এই মুখটাকে মনে রেখ, যে শুধুমাত্র তোমাদের ভোটের জন্য ক্ষুধার্ত, আর কোনও কিছুতে আগ্রহ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy