তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে টাকা তোলার অভিযোগের মামলায় কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-র বয়ান রেকর্ড করল কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, প্রয়োজনে আবার তাঁকে তলব করা হতে পারে। জেরা শেষে নিখিল স্পষ্ট জানান, অভিষেকের নাম করে টাকা তোলার ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের তিনি চেনেনই না।
অভিষেকের নাম করে তোলাবাজিকাণ্ডে ইতিমধ্যেই কয়েক জন অভিযুক্তকে কলকাতার এমএলএ হস্টেল থেকে গ্রেফতার করেছে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতেরা যে ঘরে ছিলেন, সেই ঘরটি নিখিলের নামে বুক করা ছিল। তার পর থেকেই তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন কোচবিহার দক্ষিণের এই বিজেপি বিধায়ক। আগেও ওই মামলায় তথ্য সংগ্রহের জন্য নিখিলকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু যাবেন বলেও হাজিরা এড়িয়েছিলেন তিনি। শনিবার শেক্সপিয়র সরণি থানায় হাজিরা দেন নিখিল। বেলা সাড়ে ১২টায় থানায় গিয়েছিলেন তিনি, ছিলেন বিকেল ৪টে পর্যন্ত। নিখিলের কথায়, ‘‘আমায় কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলেন ওঁরা। আমি তার উত্তর দিলাম।’’
আরও পড়ুন:
কী ভাবে নিখিলের নামে এমএলএ হস্টেলে ঘর পেলেন অভিযুক্তেরা? সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও ধারণা নেই কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়কের। তিনি বলেন, ‘‘আমার ঘরের চাবি থাকে এমএলএ হস্টেলেই। মনে হচ্ছে হস্টেলের কেউই কাজটি করেছেন। আমি সব সময় হাতে লিখে চিঠি দিই। দ্বিতীয়ত, এমএলএ হস্টেলে রুমের জন্য সাধারণত সুপারকে চিঠি লিখে থাকি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিধানসভার সেক্রেটারিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিটা হাতে লেখা নয়, কম্পিউটারে লিখে প্রিন্ট করানো।’’
অভিষেকের নাম করে পূর্ব বর্ধমানে কালনার পুরপ্রধান আনন্দ দত্তকে হুমকি এবং তাঁর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে গত ডিসেম্বরে তিন জন গ্রেফতার হয়েছিলেন। ধৃতদের নাম জুনায়েদুল হক চৌধুরী, শুভদীপ মালিক এবং শেখ তসলিম। তিন জনই হুগলির বাসিন্দা। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, কিছু ভুয়ো নথি দেখিয়ে আনন্দের কাছ থেকে ধাপে ধাপে টাকা চাওয়া হয়েছিল। পুরপ্রধান থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করতেই তদন্তে নামে পুলিশ। সেই মতো ফাঁদও পাতা হয়। এর পর এমএলএ হস্টেল থেকেই অভিযুক্তদের পাকড়াও করা হয়। সেই সূত্র ধরেই নিখিলের কাছে তথ্য তলব করেছিল পুলিশ। শনিবার সেই বয়ানই নথিভুক্ত করা হল।