সুন্দরবনের মধুকে জিআইয়ের আওতায় আনতে চায় রাজ্য। প্রতীকী ছবি
রসগোল্লার জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) নিয়ে সঙ্ঘাত হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মধ্যে। এ বার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে। তবে এ বার রসগোল্লার জায়গায় সুন্দরবনের মধু। আর প্রতিপক্ষ ওড়িশার বদলে মহারাষ্ট্রের এক বেসরকারি সংস্থা। সম্প্রতি সুন্দরবনের মধুর জিআই পেতে আবেদন করেছে পু্ণের সেই সংস্থা। সুন্দরবনের মধুর স্বত্ব নাকি নিয়ে নিজেদের পক্ষে জিআইয়ের আবেদন জানিয়েছে তারা! এহেন দাবি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নজরে আসতেই বেজায় চটেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতর। তারা জিআই কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানিয়েছে, কোনও ভাবেই সুন্দরবনের মধুর স্বত্ব বাইরের রাজ্যের কোনও সংস্থাকে যেন দেওয়া না হয়। তারা চেন্নাইয়ে জিআই কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছে, কোনও ভাবেই পুনের ওই সংস্থা জিআই পাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ, সুন্দরবনের বেশ কয়েক জন মধু সংগ্রহকারী রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রক ও রাজ্য বন দফতরের অনুমতি নিয়ে তাঁরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মধু সংগ্রহ করেন। তাই জিআইয়ের তকমা পশ্চিমবঙ্গের বাইরের কোনও সংস্থা নিয়ে যেতে পারে না।
প্রসঙ্গত, বাংলার কোনও পণ্যের জন্য জিআইয়ের আবেদন করার ক্ষেত্রে নোডাল এজেন্সি হিসেবে কাজ করে রাজ্য সরকারের এই পেটেন্ট ইনফরমেশন সেন্টার। ওই জিআই আবেদনের বিরোধিতা করে চিঠি দেওয়ার পরেই রাজ্য সরকার নিজেই সুন্দরবনের মধুর জিআই-এর জন্য আবেদন করেছে। তা করা হয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির আওতায় থাকা পেটেন্ট ইনফরমেশন সেন্টারে। এ রাজ্যে যে প্রাকৃতিক মধু পাওয়া যায়, তার বেশির ভাগ আসে সুন্দরবন থেকেই। স্বাদ ও রঙে তা উৎকৃষ্ট মানের। তার চাহিদা দেশে ও বিদেশে বেশ ভালই। সেই মধুর জিআই তকমা পেলে ব্যবসা তথা রফতনিতে বড় সুযোগ পাওয়া যেতে পারে। সূত্রের খবর, পুণের ওই সংস্থা যেহেতু সরাসরি জিআই পেতে পারবে না, তাই রাতারাতি নতুন একটি সংস্থা তৈরি করা হয় সুন্দরবনের ঠিকানায়। তারাই আবার সুন্দরবনের মধুর জিআইয়ের জন্য আবেদন করার অনুমোদন দেয় পুনের ওই সংস্থাকে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সুন্দরবনের মধু বাংলার সম্পদ। তার স্বত্ব কিছুতেই পুণের কোনও সংস্থার হাতে যেতে পারে না। আমরা তাই নিজেরাই জিআই-এর আবেদন করেছি। তাতেই ব্যবসায় প্রকৃত উপকার পাবেন মধু সংগ্রহকারীরা।’’
কোনও পণ্যের জিআই পাওয়ার অর্থ, সেটি সেই নির্দিষ্ট এলাকারই সম্পদ। এই স্বত্ব থাকলে ব্যবসায় সুবিধা পাওয়া যায়। রফতানিতেও গুরুত্ব বাড়ে। এর আগে রসগোল্লার জিআই নিয়ে প্রায় একই ধাঁচে টানাপোড়েন চলেছিল। শেষ পর্যন্ত ওড়িশাকে হারিয়ে রসগোল্লার জিআই পায় পশ্চিমবঙ্গ। এ বারও মহারাষ্ট্রের পুণের ওই সংস্থাকে হারিয়ে সুন্দরবনের সম্পদন রাজ্যের মধ্যেই ধরে রাখতে মরিয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতর। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির আওতায় থাকা পেটেন্ট ইনফরমেশন সেন্টারের গবেষক মহুয়া হোমচৌধুরী বলেন, ‘‘সুন্দরবনের মধু বাংলার সম্পদ। তার স্বত্ব কিছুতেই পুণের কোনও সংস্থার হাতে যেতে পারে না। আমরা তাই নিজেরাই জিআইয়ের আবেদন করেছি। তাতেই ব্যবসায় প্রকৃত উপকার পাবেন মধু সংগ্রহকারীরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy