কবি সুবোধ সরকার। —ফাইল চিত্র।
শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হিসাবেই তিনি পরিচিত। শাসকদলের বহু মিটিং-মিছিলে বিদ্বজ্জন হিসাবে বারবার দেখা গিয়েছে কবি সুবোধ সরকারকে। এমনকি শাসকদলের পক্ষে নানা মন্তব্যও করেছেন তিনি। এ হেন কবি সুবোধ সরকারের শনিবার সন্ধ্যার একটি ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক একটা অংশ মনে করছেন, যে পোস্ট তিনি করেছেন তা শাসকদল তথা তৃণমূল নেত্রীকে কটাক্ষ করেই।
তাঁর পোস্টে সুবোধ একটি কবিতা পোস্ট করেছেন। সঙ্গে ওই কবিতা সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব মতামত। যাঁর কবিতা তিনি পোস্ট করেছেন তিনি কোনও নামী কবি নয়, সুবিনয় হেমব্রম।
কবি সুবিনয়ের লেখা কবিতায় সরাসরি কারও নাম নেই। কিন্তু জনজাতি সমাজকে কী চোখে দেখা হয়, সে কথা বলা আছে। রাজনৈতিক শিবিরের একটা অংশের মত, জনজাতিদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সমস্ত পদক্ষেপ করেছেন, ওই জনসমাজের প্রতি শাসকদল যে ‘সহানুভূতি’ দেখায় তার বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই কবি। কবি সুবোধ সেই কবিতার ‘প্রশংসা’ করে কী বোঝাতে চাইলেন? প্রশ্ন তুলছেন ওই অংশটি।
জনজাতি সমাজের প্রতি শাসকের চিন্তাভাবনা আদৌ যে আন্তরিক নয় তা বোঝাতে কবি সুবিনয় যেমন লিখেছেন, ‘আপনি অলচিকি হরফ আর সাঁওতালি ভাষা নিয়ে আপনার ভাসাভাসা জ্ঞান জাহির করে কত আপনি আদিবাসীপ্রেমী প্রমাণ করবেন/ হেমব্রম মানে আপনি আমায় যাখুশী বোঝাবেন/ লড়িয়ে দিয়ে মজা দেখবেন/ হেমব্রম মানে/ আমি চিড়িয়াখানার জীব/ আপনি দেখতে আসেন/ আর শালপাতায় করে কোটা আর লড়াকু তত্ত্বের চানাচুর আনেন/ এরকমই তো ভাবছিলেন/ তাই না?’
আরও পড়ুন:
লভ ইউ কে, ডোন্ট ফরগেট মি... কৃত্তিকার ‘সুইসাইড নোটে’ কে এই ‘কে’? উত্তর খুঁজছে পুলিশ
কয়েক দফায় ৪২ লাখ টাকা তোলা দিয়েছেন শান্তনু সেনকে, অভিযোগ প্রোমোটারের
কবিতার কোনও অংশে কোনও দল বা সরকারের কথা না বললেও তিনি লিখেছেন, ‘হেমব্রম মানে আপনি আমায় যা খুশি বোঝাবেন/ লড়িয়ে দিয়ে মজা পাবেন’। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চিকিৎসকদের আন্দোলনের পক্ষেও ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন তিনি। কবিতায় সুবিনয় খোঁচা দিয়েই বলেছেন, ‘এ সব বলছি মানে আমি খাঁটি হেমব্রম নই/ তাই মনে হচ্ছে তো?’ তার পরেই সুবিনয় লিখেছেন, ‘আপনি আমার চেয়ে বেশি হেমব্রম/ বেশি সংখ্যালঘু/ বেশি অসহায়/ বেশি সাহায্য দরকার/ বেশি রঙ আপনার মুখে / বেশি পালক আপনার টুপিতে’।
এই কবিতাই শনিবার নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে কবিকে কুর্নিশ জানান সুবোধ সরকার। এই প্রতিবাদী কবিতা লেখার জন্য তিনি কবি সুবিনয়কে ‘সাহসী এবং সৎ’ বলেও মন্তব্য করেন। তিনি লেখেন, ‘কয়েক মিনিট আগে হাতে এল। সুবিনয় হেমব্রম লিখেছেন কবিতাটি। গত এক বছরে আমি যত ইংরেজি, আরবি, ফরাসি, ল্যাটিন আমেরিকান এবং বাংলা কবিতা পড়েছি, তার শীর্ষে রাখব এই কবিতাটিকে। কোনওদিন চোখে দেখিনি ছেলেটিকে। সাহসী এবং সৎ লেখা বাংলা ভাষার ঐতিহ্য। কিন্তু এই একটি কবিতা আমাকে আর একবার বলে গেল, ‘হিরে বসালেই কবিতা হয় না, কান্না লুকিয়ে উঠে দাঁড়াতে হয়’। কথাটা বলেছিলেন মেক্সিকোর কবি অক্তাভিও পাজ। সুবিনয়, জানি না আপনি কী করেন, কোথায় থাকেন, কী খান, আপনি লিখুন, লিখে যান, আমি আপনাকে কান্না লুকিয়ে কুর্নিশ জানাই।’
কিন্তু কবিতা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, কে এই ‘আপনি’? সুবোধ কি তাঁকে চিহ্নিত করতে পারেন? এ ব্যাপারে অবশ্য তাঁর মত জানা যায়নি। একাধিক বার ফোন ও টেক্সট মেসেজ করেও সুবোধের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy