ফাইল চিত্র
বিশ্বভারতীতে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের আন্দোলন পেরিয়ে গেল ৫০ ঘণ্টারও বেশি। এখনও নিজেদের অবস্থানে অনড় দু’পক্ষই।
রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত মেলেনি। সোমবার সকালে পড়ুয়াদের সমর্থনে ডাক দেওয়া হয়েছে একটি নাগরিক মিছিলের। বিশ্বভারতীও ই-মেল পাঠিয়ে সমস্ত আধিকারিক ও অধ্যাপকের শান্তিনিকেতন ছেড়ে বাইরে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যাঁরা ছুটিতে আছেন তাঁদেরও ৩০ অগস্টের মধ্যে ফিরতে বলা হয়েছে। বিশ্বভারতীর তিন পড়ুয়া— সোমনাথ সৌ, ফাল্গুনী পান এবং রূপা চক্রবর্তীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুক্রবার রাত থেকে উপাচার্যের বাসভবন ‘পূর্বিতা’ ঘেরাও করেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। আন্দোলনকে সমর্থন করেছে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএফএ, বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের পক্ষ থেকেও। ছাত্রদের সমর্থনে আজ, সোমবার শান্তিনিকেতন বকুলতলা মোড় থেকে উপাচার্যের বাসভবনের পর্যন্ত বোলপুরের নাগরিক সমাজের উদ্যোগে একটি মিছিল হওয়ার কথা। পড়ুয়াদের সঙ্গে তাঁরাও প্রতীকী অবস্থানেও যোগ দেবেন।
এ দিন পড়ুয়াদের মঞ্চে আন্দোলনে সংহতি জানাতে আসেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্র তথা বোলপুর শহরের প্রাক্তন পুরপ্রধান কৃষ্ণপদ সিংহরায়। ৮৫ বছরের সিপিআই নেতা বলেন, “আমাদের সময় প্রবোধচন্দ্র বাগচি, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর মতো মানুষেরা বিশ্বভারতীর উপাচার্যের পদ অলঙ্কৃত করেছেন। বর্তমানে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মতো আরএসএসের দালাল এসে সেই উপাচার্যের পদকে কলঙ্কিত করেছেন।” সন্ধ্যায় অবস্থান মঞ্চে সংহতি জানাতে আসেন আলাপিনী মহিলা সমিতির চার সদস্যা। তাঁদের অন্যতম, মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর সর্ব স্তরেই অরাজকতা তৈরি করছেন উপাচার্য।’’ পাল্টা নিজেদের অনমনীয় মানসিকতা বজায় রেখেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষও। এ দিনই বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো একটি নির্দেশিকা জারি করেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, বিশ্বভারতীর কোনও কর্মী, অধ্যাপক বা আধিকারিক কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া শান্তিনিকেতনের বাইরে যেতে পারবেন না। খুব প্রয়োজন ছাড়া ছুটিও মিলবে না। বিশ্বভারতীর যে আধিকারিকেরা বাইরে আছেন, তাঁদের সোমবার রাতের মধ্যে শান্তিনিকেতনে ফিরে আসতে বলা হয়েছে। উপাচার্য বা কর্মসচিবের লিখিত অনুমতি ছাড়া তাঁরা শান্তিনিকেতন ছেড়ে যেতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে।
ভিবিইউএফএ-র দাবি, সমস্ত কর্মী আধিকারিকদের এক জায়গায় জড়ো করে উপাচার্য পড়ুয়াদের উপর আক্রমণ করার পরিকল্পনা করছেন। সেই মর্মেই এই নির্দেশ। বরখাস্ত হওয়া পড়ুয়া সোমনাথ সৌ বলেন, “রোদ, ঝড়, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আমরা অবস্থান চালিয়ে গেলেও বিশ্বভারতীর তরফ থেকে সমস্যা সমাধান করার কোনও সদিচ্ছা দেখা গেল না। এখনও পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে কোনও আধিকারিক দেখা পর্যন্ত করেননি।” বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিকের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বিশ্বভারতী নিজের সিদ্ধান্তে কতখানি অনড় এ দিন তা স্পষ্ট হয়েছে বহিষ্কার হওয়া ছাত্রী রূপা চক্রবর্তীকে পাঠানো একটি চিঠির বয়ান থেকেও। বিশ্বভারতী জানিয়েছিল ২৭ অগস্টের মধ্যে এ বিষয়ে পড়ুয়াদের কিছু বলার থাকলে তারা লিখিত আকারে তা জমা দিতে পারে। সেই অনুযায়ী রূপা তাঁর লিখিত বক্তব্য জমা দেন। শনিবার রূপাকে একটি চিঠি পাঠিয়ে বিশ্বভারতীর প্রক্টর জানিয়েছেন, ২৮ অগস্টের কর্মসমিতির বৈঠকে তাঁর বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কিন্তু বিশ্বভারতী বহিষ্কারের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy