Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

স্কুলে নিরামিষের নির্দেশ ঘিরে প্রশ্ন

জাঙ্ক ফুড না-দেওয়ার নির্দেশকে স্বাগত জানালেও নিরামিষ আহারের এ-হেন ‘পরামর্শ’ নিয়ে কিন্তু আপত্তি উঠেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায় ও মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০১
Share: Save:

আমিষ-নিরামিষের লড়াইয়ে নেট দুনিয়া ইতিমধ্যেই দ্বিখণ্ডিত। তারই মধ্যে নতুন বিতর্ক কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের একটি নির্দেশিকাকে ঘিরে। সেই নির্দেশিকায় অভিভাবকদের বলা হয়েছে, পড়ুয়াদের টিফিনে যেন কোনও রকম ‘প্যাকেজড ফুড’ বা ‘জাঙ্ক ফুড’ দেওয়া না-হয়। কিন্তু বাড়ি থেকে যে-সব খাবার পাঠাতে বলা হয়েছে, তার সবই নিরামিষ। ওই খাদ্যতালিকায় রুটি, তরকারি, পুরি, সেদ্ধ ছোলা, ফল থাকলেও কোনও আমিষ পদের উল্লেখ নেই।

জাঙ্ক ফুড না-দেওয়ার নির্দেশকে স্বাগত জানালেও নিরামিষ আহারের এ-হেন ‘পরামর্শ’ নিয়ে কিন্তু আপত্তি উঠেছে। শিক্ষাজগৎ এবং পুষ্টিবিদদের বেশির ভাগেরই অভিমত, শুধু নিরামিষ খাবার কখনওই কাম্য নয়। শরীরের পুষ্টি ও সুস্থতার জন্য আমিষের প্রয়োজন আছে। সে-ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপরে নিরামিষ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। অনেকেই বলছেন, উত্তর ভারতীয় ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতিকে যে-ভাবে গোটা দেশের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, এই নির্দেশিকা তারই দৃষ্টান্ত মাত্র।

ডায়েটিশিয়ান রেশমী রায়চৌধুরীর মতে, নিরামিষ খাবার মানেই যে খারাপ, তা নয়। কিন্তু সে-ক্ষেত্রে বিভিন্ন খাবারের সংমিশ্রণ প্রয়োজন। তবে শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে আমিষ প্রোটিনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। মুরগি বা মাছ টিফিনে নেওয়াটা ঝক্কির। তবে ডিম দেওয়া যেতেই পারে। অনেকেরই বক্তব্য, টিফিনে সেদ্ধ ডিম রাখা সুবিধাজনক। একটি ডিমে যে-পরিমাণ প্রোটিন, ক্যালসিয়াম থাকে, তা সমপরিমাণ নিরামিষ খাবারে না-ও থাকতে পারে। শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনও এই নিরামিষ-নির্দেশ সমর্থন করছেন না। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণ দামানি বলেন, ‘‘কী খাবার ভাল, পুষ্টিবিদেরাই সেটা ঠিকমতো বলতে পারবেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, শুধু নিরামিষ আহার যথেষ্ট নয়। একটা সার্বিক খাদ্যাভ্যাস প্রয়োজন।’’ সর্বভারতীয় স্তরে স্কুলশিক্ষার সঙ্গে জড়িত এক শিক্ষাবিদ মনে করেন, এ ভাবে শুধু নিরামিষ খাবারের পরামর্শ দেওয়া উচিত নয়। প্রথমত, পড়ুয়াদের নিজস্ব খাদ্যাভ্যাস এবং পছন্দ রয়েছে। তা ছাড়া, শরীরের ক্ষেত্রে আমিষ খাবারও জরুরি। সেগুলি মাথায় রেখেই নির্দেশিকা জারি করা উচিত। বস্তুত, রাজ্য সরকারের অধীন এবং পোষিত স্কুলগুলিতে যে-খাবার (মিড-ডে মিল) দেওয়ার ব্যবস্থা আছে, ডিম দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে সেখানেও।

অন্য বিষয়গুলি:

Veg Food Kendriya Vidyalaya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy