মালদহের নালাগোলায় বুধবার দুপুরে ‘জনসংযোগ যাত্রা’ কর্মসূচিতে উপস্থিত বিমলা সরকারের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক
পঞ্চায়েত ভোটে ‘মানুষের পছন্দের’ প্রার্থী বাছতে যে ভোট-প্রক্রিয়া চালু করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর জনসংযোগ যাত্রা পর্বে, সে ভোট নিয়ে শুরু থেকেই রয়েছে বিতর্ক। এই অভিযান শুরু থেকেই ছিল ঘটনাবহুল। কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো একাধিক জেলায় ভোটে হাঙ্গামা, গোলমালের ছবি দেখা গিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে গঙ্গারামপুরে দলের ভোটে ব্যালটে আগে থেকেই কয়েক জনের নাম ছাপা ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে গোলমাল হয়। সে রাতেই দলীয় বৈঠকে সেই সমস্যার ‘নিদান’ দেন অভিষেক। তবে বুধবার ভোট প্রক্রিয়ায় সরকারি কর্মীদের উপস্থিতি সংক্রান্ত কয়েকটি ছবি (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) ছড়িয়ে পড়ায়, বিতর্ক থামেনি। মালদহে আজ, বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠক সেরে ইংরেজবাজারে অভিষেকের ‘জনসংযোগ যাত্রা’ কর্মসূচির অধিবেশনে যোগ দিতে পারেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উপস্থিতিতে বিতর্ক থামে কি না, সে দিকে নজর অনেকের।
অভিষেক মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘যে নাম আগে থেকেই রয়েছে, তাঁরা এগিয়ে রয়েছেন, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। মানুষ চাইলে সেগুলি কেটে দিতে পারেন।’’ কিন্তু তৃণমূল সূত্রের দাবি, ব্যালটে ছাপানো নাম থাকলে কী করণীয়, তার আগাম প্রচার-প্রস্তুতি দলের ভোটারদের মধ্যে ছিল না। তাই গঙ্গারামপুরে বিশৃঙ্খলা হয়। কেন আগে থেকে ভোটারদের জানানো হল না? তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘আগেই সবাইকে জানিয়েছিলাম। অনেকে বুঝতে পারেননি।’’
তার মধ্যে এ দিন ভোট-প্রক্রিয়ায় সরকারি কর্মীদের একটি নির্দেশিকা-সহ কিছু ছবি (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) টুইট করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল শুধু পুলিশ নয়, সরকারি কর্মীদেরও দলের কাজে ব্যবহার করছেন। তৃণমূলের সরকারি কর্মী ফেডারেশনের জলপাইগুড়ি জেলার সভাপতি সঞ্জয় সিংহ রায়ের ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি। সঞ্জয় বলেন, “আমরা কোনও ভোট নিতে যাইনি। নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমাদের দাবিদাওয়া জানাতে গিয়েছিলাম।” জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়ের দাবি, “সরকারি কর্মীদের দলের ভোটের কোনও কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।”
রাতে অভিষেক পৌঁছনোর আগে, ভোট দেওয়া উত্তেজনা ছড়ায় মালদহের চাঁচলেও। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, ভোটে কারচুপি হচ্ছে। ব্যালট গোপন থাকছে না। ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি বেধে যায়। তবে নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এক সময়ে কংগ্রেসের ‘গড়’ মালদহে অভিষেক এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে বিঁধেছেন। রতুয়ার সামসির সভায় বলেছেন, ‘‘মালদহের লোকসভার দু’টি কেন্দ্রের একটি বিজেপি ও একটি কংগ্রেস পেয়েছে। স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী কখনও দিল্লিতে দরবার করেছেন? মোদীর (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী) সঙ্গে বাংলার দাবি নিয়ে তিনি দরবার করেননি। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠক করেননি। অমিত শাহের কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপি নিয়ে অধীর চৌধুরী ঘুরছেন। কংগ্রেস এবং বিজেপি এক।’’ পাল্টা অধীর বলেন, ‘‘অর্থহীন কথা বলছেন! বাংলার বঞ্চনার পরিমাণ কত, কোথায় কোথায় বঞ্চনা, সেটা আমরা কী করে জানব? সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বার বার বলেছি, আমরা বিরোধী দল, আমাদেরও বাংলার সমস্যার কথা বলা হোক। কিন্তু এঁরা সেই শিষ্টাচার রাখেননি। যে খোকাবাবু এ সব বলছেন, সংসদে দাঁড়িয়ে কত বার তিনি অন রেকর্ড এ সব বলেছেন, সেটা বলা হোক। এ সবের মধ্যেও কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক করেছি।’’ অধীরের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘আমি লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা। আমাকে নিরাপত্তা দেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ। এটা প্রোটোকল। রাজ্য সরকারও দু’জন পুলিশ কনস্টেবল দিয়েছে। তা হলে আমি কার সঙ্গে জোট বেঁধেছি, বলুন এ বার!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy