প্রতীকী চিত্র।
দু’দলই জীবনযুদ্ধের নবীন সৈনিক। অথচ এক দলকে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের মতো বড় পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে টেস্ট ছাড়াই। অন্য দল সেই যুদ্ধে নামার আগে কার্যত জোড়া টেস্টে প্রস্তুতি যাচাইয়ের সুযোগ পাচ্ছে।
রাজ্যের সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও সরকার পোষিত স্কুল থেকে আগামী বছর যারা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক দেবেন, তাঁদের টেস্ট হবে না বলে বুধবার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অন্য দুই বোর্ড আইসিএসই এবং সিবিএসই-র অধীন স্কুলগুলির অধ্যক্ষদের একাংশ জানান, করোনার দাপটের মধ্যেই দশম ও দ্বাদশ পড়ুয়াদের অনলাইনে একটি পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বরে যদি স্কুল খোলে, তা হলে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে দশম ও দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষার আগে আরও একটি টেস্ট নেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। ওই দুই দিল্লি বোর্ডের কাছ থেকে দশম ও দ্বাদশের টেস্ট বাতিল সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ এখনও আসেনি। বোর্ড প্রশ্ন করলেও টেস্ট নেয় স্কুল। এ বার স্কুলকেই প্রশ্নপত্র তৈরি করতে হবে।
সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলগুলির পড়ুয়াদের একটি বড় অংশ এক বাক্যে স্বীকার করছেন, টেস্ট না-হওয়ায় চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ঘাটতি থেকে গেল। বিভিন্ন জেলার স্কুলের দশম-দ্বাদশের কিছু পড়ুয়া জানান, টেস্ট পেপার দেখে কলকাতা ও জেলার নামী স্কুলগুলির টেস্টের প্রশ্ন দেখে উত্তর লেখার অনুশীলন করলে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস বাড়ে। অতিমারিতে এ বার সে-ভাবে ক্লাসই হয়নি। তার উপরে টেস্টও বাতিল হয়ে গেল। সরাসরি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, পুকুর বা নদীতে সাঁতার না-কেটেই একেবারে সমুদ্রে সাঁতার কাটতে নামছেন তাঁরা!
আরও পডুন: বিশ্বাসের শাকেই চতুর্দশী
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি জানান, দশম ও দ্বাদশের যে-সব ছাত্রছাত্রী আগামী বছর বোর্ড পরীক্ষা দেবেন, তাঁদের একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে অনলাইনে। বাড়িতে বসে পরীক্ষা বলেই তার প্রশ্নপত্র একটু অন্য ধরনের ছিল। ‘‘ডিসেম্বরে ওদের আরও একটি পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছি আমরা। সেই পরীক্ষা অফলাইনে অর্থাৎ স্কুলে বসে নিলেই ভাল হয়। রাজ্য সরকার ডিসেম্বরে স্কুল খোলার অনুমতি দিলে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দশম ও দ্বাদশের টেস্ট নেওয়ার ইচ্ছে আছে,’’ বলেন দামানি। তাঁর মতে, জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসার আগে পড়ুয়ারা স্কুলের আরও একটি পরীক্ষায় বসে প্রস্তুতি যাচাই করে নেওয়ার সুযোগ পেলে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
দশম-দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষার্থীদের অনলাইনে একটি পরীক্ষা হয়ে গেলেও শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানান, তাঁরাও ফের টেস্ট নেওয়ার কথা ভাবছেন। তিনি বলেন, ‘‘করোনা অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার মতো নতুন অনেক কিছু শেখাল। ডিসেম্বরে যদি স্কুল খোলে, তা হলে ওই পড়ুয়াদের স্কুলেই ফের পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।’’ আইসিএসই স্কুলের এক অধ্যক্ষ জানান, করোনার মধ্যে স্কুলে দশম-দ্বাদশের পরীক্ষা কী ভাবে নেওয়া হল, প্রশ্নপত্র কেমন ছিল, পড়ুয়ারা কেমন ফল করেছেন— সবই বিস্তারিত ভাবে জানতে চেয়েছে বোর্ড। ‘‘অনলাইন পরীক্ষার পরে আমরাও অফলাইনে দশম-দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার্থীদের আরও একটি পরীক্ষা নিতে আগ্রহী,’’ বলেন ওই অধ্যক্ষ।
দিল্লি বোর্ডের স্কুলে টেস্ট নেওয়ার তোড়জোড়ের মধ্যে সরকারি ও সরকারি পোষিত স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, করোনা আবহে টেস্ট বাতিলের ঘোষণা করা হয়েছে অনেক দেরিতে। এ বার অন্তত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সূচি দ্রুত ঘোষণা করুক শিক্ষা দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy