ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের চত্বরে ‘আইনি বিতর্ক’ যেন শেষই হচ্ছে না! রাতে শুনানি করে সিবিআই আদালতের রায় স্থগিত করে দেওয়ার পরে কলকাতা হাই কোর্টের তাড়াহুড়ো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আইনজীবীদের অনেকেই। এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় কলকাতা হাই কোর্টের এক বিচারপতির নামাঙ্কিত চিঠি (আনন্দবাজার পত্রিকা ওই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি) নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ওই চিঠিতে বিচারপতির নাম এবং হাই কোর্টের সিলমোহর দেখা গেলেও তাতে কোনও স্বাক্ষর নেই। তবে আইনজীবীদের অনেকেই বলছেন, ওই চিঠির বক্তব্যের আইনি যৌক্তিকতা রয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারপতির উল্লেখ করে ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, সম্প্রতি হাই কোর্টের কিছু কার্যকলাপ ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের গরিমার পরিপন্থী এবং তা এই প্রতিষ্ঠানকে হাস্যাস্পদ করে তুলেছে। নারদ মামলাকে ঘিরে সম্প্রতি হাই কোর্টে যা হয়েছে, ওই চিঠির লেখক সে-দিকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে পর্যবেক্ষকদের অভিমত। নারদ মামলায় হাই কোর্ট কী কী ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ করেনি, তার সবিস্তার ব্যাখ্যাও আছে চিঠিতে। নারদ মামলায় হাই কোর্টের ‘নজিরবিহীন’ পদক্ষেপের কথা বার বার বলেছেন আইনজীবীরা।
নারদ মামলায় ধৃত চার নেতা-মন্ত্রীর আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিরা হাই কোর্টে অভিযোগ করেছিলেন, অভিযুক্ত পক্ষের বক্তব্য না-শুনেই স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতির নামাঙ্কিত ওই চিঠিতে সেই স্থগিতাদেশ দেওয়ার পদ্ধতিরও সমালোচনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশ্ন তোলা হয়েছে পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ গঠন নিয়েও। অভিযুক্তদের জামিন মঞ্জুর নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চের অন্য সদস্য বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতপার্থক্য হয়। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়
জামিন মঞ্জুরের পক্ষে মত দিলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি চার অভিযুক্তকেই গৃহবন্দি করার পক্ষে রায় দেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, হাই কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী দু’জনের ডিভিশন বেঞ্চে মতান্তর থাকলে তৃতীয় কোনও বিচারপতির মতামত নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সরাসরি পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে চিঠিতে। বলা হয়েছে, হাই কোর্টের অ্যাপিলেট বিধি অনুযায়ী দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলার শুনানি হওয়া উচিত এক জন বিচারপতির এজলাসে (সিঙ্গল বেঞ্চ)। এমনকি সংবিধানের ২২৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী রিট পিটিশনেরও শুনানি হতে পারে একক বেঞ্চে।
এমন কোনও চিঠি সত্যিই ওই বিচারপতি লিখেছেন কি না, হাই কোর্ট প্রশাসন সূত্রে তা নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। আইনজীবীদের অনেকে বলছেন, কোনও স্বাক্ষর না-থাকায় চিঠিটি আদৌ বিচারপতির কি না, তা বিচার করার সহজ পন্থাও নেই। তবে চিঠিতে যে-সব প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তা নিয়ে আইনি বিতর্ক চলতেই পারে বলে আইন শিবিরের অভিমত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy