—ফাইল চিত্র।
বিজেপিকে রুখতে জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটে দু’দল শামিল হলেও বাংলায় তৃণমূল-বিরোধিতার পথ না ছাড়ার কথা বলেছে কংগ্রেস। এই আবহেই নতুন বিতর্ক যোগ হল ঝালদা পুরবোর্ড ‘দখল’ করতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের ভাঙানোর চেষ্টার অভিযোগে কংগ্রেস সরব হওয়ায়। কংগ্রেসের দাবি, আপাতত সেই চেষ্টা তারা ঠেকাতে পেরেছে। তবে কংগ্রেস-শাসিত ঝালদা পুরসভাকে আর্থিক সহায়তা না দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে প্রয়োজনে তারা আদালতেও যেতে তৈরি। তৃণমূল অবশ্য পুরবোর্ড দখলের চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কংগ্রেসের দাবি, পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার তিন দলীয় কাউন্সিলর গোপনে কলকাতা এসেছেন খবর পেয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তার পরে রবিবার দলের উদ্যোগে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্যত্র। ঝালদার পুর-প্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় ও আরও এক দলীয় কাউন্সিলর (আগে নির্দল ছিলেন) সোমনাথ কর্মকারও কলকাতায় এসেছেন খবর পেয়ে আসরে নামেন কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো এবং প্রদেশ কংগ্রেসের আইনজীবী-নেতা কৌস্তভ বাগচী। ঝালদার পুরবোর্ড গঠন নিয়ে তৃণমূলের চেষ্টা ঠেকাতে এর আগে আদালতের ভিতরে-বাইরে লড়েছিলেন তাঁরাই। বিধাননগরের যুব আবাসে গিয়ে রাতে দুই কাউন্সিলরের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন নেপালেরা। তাঁদের দাবি, দু’জনেই আশ্বস্ত করেছেন দল না বদলানোর ব্যাপারে। সোমনাথ যদিও প্রকাশ্যে বলেছেন, দল বদলের জন্য কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
কংগ্রেস অবশ্য বিষয়টা হাল্কা ভাবে নিচ্ছে না। দলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপালের দাবি, ‘‘দু’জন পুর-প্রতিনিধিকে ওরা (তৃণমূল) ভুল বুঝিয়ে দলে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতায় নিয়ে এসেছিল। অভিসন্ধি সফল হয়নি। আমরা তাঁদের বুঝিয়ে ঝালদা ফেরত পাঠাচ্ছি। মনে হচ্ছে, দল বা বোর্ডে ভাঙানোর চেষ্টার পেছনে স্থানীয় কেউ যুক্ত থাকতে পারেন।’’ ঝালদা পুরসভার উপ-পুরপ্রধান পূর্ণিমা কান্দুর বক্তব্য, ‘‘এই পুরবোর্ড গঠনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ঝালদার মানুষের আবেগ। শাসক দল যতই চেষ্টা করুক, এখানে ঐক্যে চিড় ধরানো অসম্ভব। সব পুর-প্রতিনিধিদের অনুরোধ করব, ঐক্য যাতে অটুট থাকে, তা দেখতে।’’ আর কৌস্তভ বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের দিল্লির নেতৃত্বকে এটাই বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, তৃণমূলের মনোভাব কত অগণতান্ত্রিক! একমাত্র কংগ্রেস-শাসিত পুরসভাকে তহবিল দেওয়া হচ্ছে না। তার ফলে কাউন্সিলরদের উপরে স্থানীয় মানুষের চাপ বাড়ছে। রাজনৈতিক লড়াইয়ের পাশাপাশি দরকারে আমরা এই নিয়ে আদালতে যাব।’’
তৃণমূলের রাজ্য নেতা তাপস রায় পাল্টা বলেছেন, ‘‘নির্দল কাউন্সিলর তো বলেছেন, কেউ যোগাযোগ করেনি তাঁর সঙ্গে। কংগ্রেস কেন এমন অভিযোগ করছে, জানি না! তৃণমূল ঝালদার বোর্ড দখলের কোনও চেষ্টা করছে না।’’ শাসক দলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়াও বলেছেন, ‘‘স্বেচ্ছায় দলে কেউ যোগ দিতেই পারেন। তবে ঝালদা পুরসভা সংক্রান্ত কোনও খবর কানে আসেনি।’’
ঘোলা জলে মাছ ঝরার চেষ্টা ছাড়ছে না বিজেপিও। ঝালদা নিয়ে কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের টুইটে মন্তব্য, ‘‘বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র এক শরিক কংগ্রেস অপর শরিক তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাংলায় দল ভাঙানোর অভিযোগ করছে। এখনও তো একই প্রশ্ন রয়ে গেল, বেঙ্গালুরুতে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন কেন? আপনারা যতই বাংলার মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করুন, বাংলার মানুষ সব বোঝেন!’’ তৃণমূলের তাপসের আবার পাল্টা দাবি, ‘‘মণিপুর আর বিরোধী জোট নিয়ে বিজেপি খুবই চাপে পড়েছে। বুঝতে পারছে, সামনে পাঁচ রাজ্যের ভোট, তার পরে লোকসভা নির্বাচনে ওদের খারাপ সময় আসছে। তাই এ সব বলে নজর ঘোরাতে চাইছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy