Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Youth Congress

অধীর-কাণ্ডে বিক্ষোভ, অবরোধে বিরোধী নেতাও

দিনভর রাস্তায় নেমে এ ভাবেই লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর দিল্লির বাড়িতে হামলার প্রতিবাদ জানাল এ রাজ্যের কংগ্রেস ও তাদের সব শাখা সংগঠন।

প্রতিবাদ: কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর দিল্লির বাড়িতে হামলার বিরুদ্ধে যুব কংগ্রেসের বিক্ষোভ। এক বিক্ষোভকারীকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। বুধবার রাজভবনের সামনে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

প্রতিবাদ: কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর দিল্লির বাড়িতে হামলার বিরুদ্ধে যুব কংগ্রেসের বিক্ষোভ। এক বিক্ষোভকারীকে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। বুধবার রাজভবনের সামনে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২০ ০৩:০৭
Share: Save:

শহরের গুরুত্বপূর্ণ চার মাথার মোড়। ট্রামলাইনের মাঝে টুল পেতে বসে পড়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কংগ্রেস ও যুব কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের অবরোধ চলছে। আটকে পড়া বাসের চালকও তখন উৎসাহে ছবি তুলছেন!

দিনভর রাস্তায় নেমে এ ভাবেই লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর দিল্লির বাড়িতে হামলার প্রতিবাদ জানাল এ রাজ্যের কংগ্রেস ও তাদের সব শাখা সংগঠন। শামিল হলেন দলের প্রায় সব স্তরের নেতৃত্ব। বিক্ষোভ হল রাজভবনের সামনে, কলকাতার নানা রাস্তায় অল্প সময়ের জন্য অবরোধ হল। অন্যান্য জেলাতেও প্রতিবাদ মিছিল এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করলেন কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। খাস রাজধানীতে বিরোধী নেতার বাড়িতে হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিপিএমের নেতৃত্বও।

দিল্লির হুমায়ুন রোডে অধীরবাবুর বাংলো সংলগ্ন দফতরে মঙ্গলবার বিকালে হামলা চালায় চার-পাঁচ জন। দফতরের কর্মীদের হেনস্থা এবং নথিপত্র তছনছ করে তারা। পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও কারা ওই ঘটনা ঘটাল, তার কিনারা ২৪ ঘণ্টাতেও হয়নি। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাজ্য জুড়ে ধিক্কার দিবস পালনের ডাক দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দিল্লির পুলিশ কমিশনারের ইস্তফার দাবিতে যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তথা সোমেন-পুত্র রোহন মিত্রের নেতৃত্বে এ দিন দুপুরে রাজভবনের উত্তর ফটকে বিক্ষোভ দেখাতে জড়ো হন দলের যুব ও ছাত্র কর্মীরা। ছিলেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, সোশ্যাল মিডিয়া সেলের মিতা চক্রবর্তী, কলকাতা জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি অর্ঘ্য গণ প্রমুখ। ঘটনাস্থল থেকে তাঁদের গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যায় পুলিশ। ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সৌরভ প্রসাদের নেতৃত্বে অবরোধ হয় রাজাবাজারে।

বিরোধী দলনেতা ও বিরোধী দলের সচেতক পথ অবরোধে

প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খানের নেতৃত্বে মহাত্মা গাঁধী রোড ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের মোড় অবরোধ করেন দলের যুব কর্মীরা। সেখানেই শামিল হন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, বিরোধী দলের সচেতক এবং বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী, প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আটকে রাখায় যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে কিছু ক্ষণ পরে শাহের কুশপুতুল জ্বালিয়ে অবরোধ তুলেও নেন তাঁরা। মান্নান বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের এমনই হাল বানিয়ে ছেড়েছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা যে, দিল্লির হিংসা নিয়ে প্রতিবাদ করলে বিরোধী নেতার বাড়িতে হামলা হয়! তবে এ সব করে অধীরের কণ্ঠরোধ করা যাবে না!’’ শাদাবের বক্তব্য, ‘‘দিল্লিতে যিনি ভাষণে উস্কানি ছড়ালেন, সেই বিজেপি নেতার নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হল! আর বিরোধী নেতার নিরাপত্তা নেই?’’

অধীরবাবুর বাড়িতে হামলার নিন্দায় সরব হয়েছেন সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীরাও। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবুর মন্তব্য, ‘‘দেশের রাজধানী এখন আরএসএস-বিজেপি ও দিল্লি পুলিশের একাংশের মৃগয়া ক্ষেত্র। সর্বোচ্চ আদালত কাদের চাপের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে, বুঝতে বাকি নেই! আক্রমণ যত বাড়বে, প্রতিরোধও তত তীব্র হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Youth Congress Congress Adhir Chowdhury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE