আইআরসিটিসি-র কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক করার প্রশ্নে রেল বোর্ড অনেক বেশি সময় নিয়েছে। বাতানুকূল কামরায় পর্দা না-থাকায় দিনে-রাতে যাত্রীদের সফরে অসুবিধা হয়। রোদ ছাড়াও স্টেশনের আলো চোখে লাগে।
ফাইল চিত্র।
আয় বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টায় রেল বোর্ডের তরফে আইআরসিটিসি বা রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড টুরিজ়ম কর্পোরেশনের এক্তিয়ারে হাত বাড়ানোর উদ্যোগকে ঘিরে নতুনতর জট পাকাচ্ছে বলে রেল শিবিরের খবর। অতিমারির দাপট কমে যাওয়ার পরেও আইআরসিটিসি বিভিন্ন স্টেশনে যে-সব খাবারের স্টল এবং ফুড প্লাজ়া চালু করতে পারেনি, সেগুলিকে নিজেদের হাতে নিয়ে দ্রুত খুলে দিতে চাইছে রেল।
যাত্রী-ভাড়া ছাড়া অন্য খাতে আয় বাড়াতে মরিয়া রেল বোর্ডের এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে শোরগোল শুরু হয়েছে রেলের অভ্যন্তরে। কারণ, রেল বোর্ড এত দিন ট্রেন চলাচল এবং যাত্রী-ভাড়ার বিষয়টি দেখত আর কেটারিং-সহ অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে আয়ের বিষয়টি দেখত আইআরসিটিসি। এ বার আইআরসিটিসি-র ক্ষেত্রেও রেল বোর্ড খবরদারি করলে ওই সংস্থার আয় কমবে বলে মনে করছেন অনেকে।
করোনাকালে বিভিন্ন বিধিনিষেধের দরুন গত দু’বছর ট্রেনে রান্না করা খাবার পরিবেশন বন্ধ ছিল। বিভিন্ন স্টেশনে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ফুড প্লাজ়া, খাবারের দোকানও। আইআরসিটিসি সূত্রের খবর, অতিমারিতে পর্যটন এবং সংশ্লিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির ক্ষতির বহর সাংঘাতিক। অনেকেই ব্যবসা চালাতে না-পেরে লাইসেন্স ছেড়ে দিয়েছেন। নানান আইনি জটিলতায় সব ক্ষেত্রে ওই সব ফুড প্লাজ়া এবং খাবারের দোকানের জন্য নতুন টেন্ডার বা দরপত্র ডাকা যায়নি। উপযুক্ত দক্ষ সংস্থাও মেলেনি অনেক ক্ষেত্রে। এই অবস্থায় রেলের নতুন পরিকল্পনায় আইআরসিটিসি-কর্তারা যারপরনাই বিস্মিত।
রেল সূত্রের খবর, অতীতে ট্রেন চালানো বাদে অন্যান্য যাত্রী পরিষেবা সুষ্ঠু ভাবে চালানোর জন্য আইআরসিটিসি তৈরি করা হয়েছিল। মাঝখানে কিছু দিন রেল নিজেরা ওই সব পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করলেও বছর চারেক আগে অশ্বিনী লোহানি রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন যাবতীয় পরিষেবার দায়িত্ব ফের আইআরসিটিসি-র হাতে তুলে দেন। রেলের অন্দরের খবর, বছর দুয়েক ধরে আয় বাড়ানোর চাপ থাকায় রেল বোর্ড কাজের বিভাজন ভুলে আইআরসিটিসি-র এক্তিয়ারে থাকা আয়ের ক্ষেত্রগুলিতেও হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। তবে এই ধরনের পদক্ষেপে রেলের নিজের কাজকর্ম ব্যাহত হবে কি না, সেই প্রশ্নও রয়েছে।
এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘ঠিক সময়ে এবং নিরাপদে ট্রেন চালানোর জন্য রেলের উপরে যে-চাপ রয়েছে, সেটা মোটেই কম নয়। তার উপরে নতুন দায়িত্ব বাড়লে আসল কাজকর্মেই না ফাঁক তৈরি হয়!’’
আইআরসিটিসি-র কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক করার প্রশ্নে রেল বোর্ড অনেক বেশি সময় নিয়েছে। বাতানুকূল কামরায় পর্দা না-থাকায় দিনে-রাতে যাত্রীদের সফরে অসুবিধা হয়। রোদ ছাড়াও স্টেশনের আলো চোখে লাগে। লেপ, কম্বল, বালিশ না-থাকায় অসুবিধায় পড়ছেন অনেকেই। ওই সব পরিষেবা সচল করা ছাড়াও ট্রেন বাতিলের সমস্যা কমাতে পারলে যাত্রী-সংখ্যা অনেক বাড়ত। এবং যাত্রী বাড়লে স্টেশনে খাবারের দোকান এবং ফুড প্লাজ়া খুলে দেওয়ার কাজও অনেক সহজ হয়ে যেত। তাতে যাত্রী-ভাড়া থেকে রেলের আয় তো বাড়তই, ক্ষতি হত না আইআরসিটিসি-র কাজকর্মেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy