Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
hooghly river

বারাণসী-কলকাতা করিডর, হুগলি নদীর নয়া সড়কসেতু প্রকল্পের জট কাটতে চলেছে

প্রকল্পটি আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হতে শুরু করেছিল। কারণ, বেশি দেরি হলে প্রস্তাবিত তৃতীয় সেতুর ব্যাপারে আর আগ্রহ থাকত না কেন্দ্রের। চাপ বাড়ছিল রাজ্য প্রশাসনের উপরেও।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রকল্পটি আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হতে শুরু করেছিল।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রকল্পটি আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হতে শুরু করেছিল। প্রতীকী ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৫
Share: Save:

বারাণসী-কলকাতা আর্থিক করিডর তৈরির কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার কথা জেনে হুগলি নদীতে নতুন সেতু গড়ার প্রস্তাব দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গই। কেন্দ্রের প্রাথমিক সম্মতি মিলেছিল, কিন্তু রাজ্যের ছাড়পত্রের জন্য প্রতীক্ষার পালা বেড়েই চলছিল এনএইচএআই বা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। অথচ হুগলি নদীর উপরে নতুন সেতু-সহ বারাণসী-কলকাতা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে জমি ছাড়া রাজ্যের কোনও খরচই কার্যত নেই, সমূহ ব্যয়ভার সামলাবেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। নবান্ন সূত্রের খবর, অবশেষে প্রকল্পটি রাজ্যের ছাড়পত্র পেতে চলেছে, অবশ্য শেষ মুহূর্তে যদি সরকারের চলতি চিন্তাভাবনায় বিশেষ বদল না-ঘটে।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রকল্পটি আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হতে শুরু করেছিল। কারণ, বেশি দেরি হলে প্রস্তাবিত তৃতীয় সেতুর ব্যাপারে আর আগ্রহ থাকত না কেন্দ্রের। চাপ বাড়ছিল রাজ্য প্রশাসনের উপরেও। নবান্নের সবুজ সঙ্কেতের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হওয়ায় অনিশ্চয়তা ফিকে হতে শুরু করেছে।

খড়্গপুর-মোড়গ্রামের মধ্যে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার আর্থিক করিডর তৈরি করতে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। বারাণসী-কলকাতা প্রকল্প নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও চলছে রাজ্যের। তার পরেই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা দেখছেন আধিকারিকদের অনেকে। অনেক পর্যবেক্ষকের বক্তব্য, প্রকল্পটি আটকে গেলে লোকসানই হত রাজ্যের। কারণ, এর পুরো খরচ বহন করার কথা এনএইচএআইয়ের।

অনেক দিন আগে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বারাণসী-কলকাতা আর্থিক করিডর তৈরির পরিকল্পনা করে কেন্দ্র। তখনই রাজ্য প্রস্তাব দেয়, হুগলি নদীতে নতুন একটি সেতুর মাধ্যমে পথটি জুড়ে দেওয়া হোক জাতীয় সড়ক ১১৭ বা ডায়মন্ড হারবার রোডের সঙ্গে। প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প কেন্দ্র প্রাথমিক ভাবে মেনে নিলেও শর্ত ছিল, রাজ্যকে জমি জোগাড় করে দিতে হবে। প্রস্তাবিত নতুন সেতুর জন্য বজবজ, পুজালি বা বন্দরের কাছাকাছি জমির সন্ধানে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনকে দিয়ে ‘এরিয়াল সার্ভে’ বা আকাশপথে সমীক্ষা করায় রাজ্য। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, মাঝখানে বেশ কয়েক মাস প্রক্রিয়াটি থমকে ছিল সেই পর্যায়েই। ফলে জমি-সমস্যায় প্রকল্পটি ভেস্তে যাবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল আধিকারিক মহলে।

সম্প্রতি তা নিয়ে নড়াচড়া শুরু হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রকল্পটি নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। প্রকল্পের সবিস্তার রূপরেখা, সমীক্ষা এবং পথের (‘অ্যালাইনমেন্ট’) বিবরণ রাজ্যকে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।

প্রশাসনিক কর্তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জমির ব্যবস্থা করলে সড়ক ও সেতু পরিকাঠামোয় কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার সুবিধা পেতে পারে নবান্ন। বিপুল এই কাজের পুরো খরচ দেবেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষই। তার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার খড়্গপুর-মোড়গ্রাম প্রকল্পে জমি জোগাড়ের কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় ১৫০০ কোটি টাকায় কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে নতুন ঝুলন্ত সড়ক পরিকাঠামো তৈরির প্রক্রিয়াও চালু আছে। কমবেশি ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রক্সৌল-হলদিয়া আর্থিক করিডর নিয়েও আগ্রহী রাজ্য। কারণ, সেটি তাজপুরের সমুদ্রবন্দরকে যুক্ত করতে পারে।

এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “এমন পরিকাঠামো খাতে রাজ্যের নিজের পক্ষে এত বিপুল খরচ করা এখন কার্যত অসম্ভব। বরং কেন্দ্রের কাছ থেকে এই সুবিধা নিলে পরিকাঠামোয় ব্যাপক উন্নতির সঙ্গে আর্থিক গতিবিধি বাড়বে বাংলায়।”

অন্য বিষয়গুলি:

hooghly river West Bengal Central Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy