মিঠুন চক্রবর্তী। —ফাইল ছবি।
কয়েক দশক আগে বলিউডে ছবি হয়েছিল ‘মুঝে ইনসাফ চাহিয়ে’। রুপোলি পর্দায় অন্যতম মুখ্য চরিত্রে ছিলেন মিঠুন ও রেখা। এ বার রাজনীতির ময়দানে ‘বিচার’ চেয়ে জলঘোলা হচ্ছে মিঠুন ও রেখাকে ঘিরে। অভিনেতা মিঠুন এখন রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির সদস্য। এই রেখা অবশ্য সে রেখা নন! সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী রেখা পাত্র। দু’জনকে নিয়েই সরব বিজেপি।
হাড়োয়ায় উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ফিরহাদ (ববি) হাকিম সন্দেশখালির রেখা সম্পর্কে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে ফিরহাদের মন্তব্য নিয়েও সরব হয়েছে বিজেপি। এরই প্রতিবাদে এলাকার অন্য মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার সন্দেশখালি থানায় গিয়ে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রেখা। গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে সন্দেশখালির ব্লক দফতর থেকে থানা পর্যন্ত মিছিল করেছেন তাঁরা। রেখার বক্তব্য, “প্রধানমন্ত্রী ও আমার সম্পর্কে আপত্তিকর ভাষা প্রয়োগ করছেন রাজ্যের মন্ত্রী। এ কোন রাজ্যে বাস করছি আমরা? এর জন্য দায়ী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ওই মন্ত্রীর শাস্তি এবং অপসারণ চাই।’’ বিষয়টি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তৎপর হয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশনও। রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং ডিজি-কে অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে বলেছে তারা। ওই কমিশনের সদস্য এবং বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদারের মতে, ‘‘রাজ্যের এক জন মন্ত্রী আমাদের লোকসভার প্রার্থী সম্পর্কে যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন, মেয়েদের পণ্য হিসেবে দেখার এই পুরুষ সমাজের মানসিকতা চলতে থাকলে এই ঘটনাগুলি ঘটবে। শুধু পুলিশ দিয়ে বা জেল খাটিয়ে এর সুরাহা হবে না।’’ তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ‘‘একই বক্তৃতায় ফিরহাদ রেখাকে ‘ভদ্রমহিলা’ বলে উল্লেখ করেছেন। বোঝাই যাচ্ছে, যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সে রকম কিছু বলার উদ্দেশ্য বা মানসিকতা তাঁর ছিল না।’’
রেখার সম্পর্কে ফিরহাদের মন্তব্য নিয়ে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় এ দিন বিজেপির কর্মীরা অভিযোগ জানাতে গেলে তা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই একই থানায় তৃণমূলের তরফে করা মিঠুনের বিরুদ্ধে ‘উস্কানিমূলক মন্তব্যে’র অভিযোগ গৃহীত হয়েছে। জোড়াসাঁকো থানায় এ দিনও মিঠুনের বিরুদ্ধে ‘প্রকাশ্যে হুমকি ও ঘৃণা ভাষণ’ দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ব্যক্তি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে কয়েক দিন আগে পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রের (ইজ়েডসিসি) অনুষ্ঠানে মিঠুনের কিছু মন্তব্যে ‘সাম্প্রদায়িক উস্কানি’র অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীরা অবশ্য পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলছে। মিঠুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়া এবং ফিরহাদের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা না-নেওয়ার প্রসঙ্গ এনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রশ্ন, ‘‘মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তো স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। অন্য রাজ্যে হলে সেটাই হত।’’ আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের হুঁশিয়ারি, ‘‘সাহস থাকলে মিঠুনদা’র গায়ে হাত দিয়ে দেখাক! বাংলার মানুষ উপযুক্ত জবাব দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy