Advertisement
E-Paper

অর্থের বিনিময়ে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনে পদ বিলির অভিযোগ মমতা-ব্রাত্যের কাছে, তৃণমূলের অন্দরে অস্বস্তি

সভাপতির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠলেও শিক্ষক সংগঠনের একাংশের পাল্টা অভিযোগ, মুর্শিদাবাদের এক প্রাক্তন শিক্ষকনেতা, যিনি জেলা তৃণমূলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তিনি এই অভিযোগপত্রের আড়ালে রয়েছেন।

(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রাত্য বসু (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রাত্য বসু (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:০৬
Share
Save

অর্থের বিনিময়ে দলের শিক্ষক সংগঠনের পদ ‘বিক্রি’ হয়েছে! শুধু তা-ই নয়, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের সংগঠনের রাজ্য স্তরে জায়গাও দেওয়া হয়েছে। এমনই অভিযোগ জানিয়ে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছেন দলেরই এক শিক্ষক নেতা। তাঁর নাম কাজী মনোয়ার ফারুক। যিনি বেলডাঙ্গা রামেশ্বর পুর হাই স্কুলের প্রাক্তন প্রধানশিক্ষকও বটে। তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক তৃণমূল শিক্ষক সমিতি’র সঙ্গেও যুক্ত তিনি।

মনোয়ারের অভিযোগপত্র নিয়ে ‘অস্বস্তি’ তৈরি হয়েছে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের অন্দরে। কারণ, ওই শিক্ষনেতার অভিযোগের তির সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বিজন সরকারের দিকে।

বহরমপুরের বাসিন্দা তৃণমূলের শিক্ষকনেতা মনোয়ারের অভিযোগ, রাজ্য স্তরের এমন কিছু লোককে পদ দেওয়া হয়েছে, যাঁরা এক কথায় অযোগ্য। তাঁদের কেউ কেউ তোষামোদি করে সংগঠনে পদ পেয়েছেন। কেউ আবার অর্থের বিনিময়ে সাংগঠনিক পদ ‘কিনে’ নিয়েছেন। ওই শিক্ষকনেতার অভিযোগ, ‘‘যাঁরা দিনের পর দিন শরীরের ঘাম রক্ত ঝরিয়ে শিক্ষক সংগঠন করলেন, তাঁদের ছেঁটে ফেলা হয়েছে। যাঁরা অন্য রাজনৈতিক দলের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুন্ডুপাত করেছেন, তাঁদের জামাই আদর করে রাজ্য স্তরের সংগঠনের পদ দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সংগঠনের সভাপতি পদ বিজন সরকারের হাতে যাওয়ার পর সমাজমাধ্যমে নানা গ্রুপ খোলা হয়েছে। তার কোথাও পুরনো শিক্ষকনেতাদের জায়গা হয়নি। কোনও কোনও গ্রুপ থেকে আবার পুরনো শিক্ষকনেতাদের অপমানজনক ভাবে বার করে দেওয়া হয়েছে। এমন নেতাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে, যিনি আরজি কর কাণ্ডের সময় রাত দখলে নেমে রাজ্য সরকারের বাপ-বাপান্ত করেছিলেন। এমন সব ব্যক্তিরা জায়গা পেলে আমাদের মতো পুরনোরা কোথায় যাবে? তাই এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও দলের শীর্ষনেতাদের চিঠি দিয়েছি। আশা করব তাঁরাই এর বিহিত করবেন।’’

অভিযোগের জবাবে সংগঠনের সভাপতি বিজন অবশ্য বলছেন, ‘‘দলীয় নেতৃত্বের সুপারিশক্রমে জেলা ও রাজ্য কমিটি গঠিত হয়েছে । রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষকের মধ্যে এক জন প্রমাণ ছাড়া কী বলছেন, তা নিয়ে না ভেবে ঐক্যবদ্ধ ডবলুবিটিএসটিএ-কে নিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভায় রাজ্য জুড়ে চতুর্থ বারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করতে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত।’’ সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও শিক্ষক সংগঠনের একাংশের পাল্টা অভিযোগ, মুর্শিদাবাদের এক প্রাক্তন শিক্ষকনেতা, যিনি জেলা তৃণমূলের রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত, তিনিই এই অভিযোগপত্রের আড়ালে রয়েছেন। সে কথা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও জানতে পেরেছেন। তাই সভাপতি বিজনের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যের বক্তব্য, ‘‘এ সব অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন।’’ শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের অন্দরমহলে তৈরি হওয়া গুমোট পরিবেশ খানিকটা হলেও হালকা হয়েছে বলেই সংগঠন সূত্রে খবর।

TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy