বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক লেগেই আছে। ৫২ সেকেন্ডের জাতীয় সঙ্গীত শেষ করার কথা। কিন্তু তা গাইতে কেন ৫৮ সেকেন্ড সময় লাগল? এই প্রশ্ন তুলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির মোট তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ দায়ের হল। বুধবার ই-মেলের মাধ্যমে কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কাঁথি-১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ গায়েন।
ই-মেলে প্রদীপের অভিযোগ, ‘৪মার্চ কাঁথি শহরে বন্দেমাতরম ক্লাব মাঠে ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় নির্ধারিত সময় অতিক্রম করা হয়েছে৷ যা জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা ও অপমানের সমান’। শুভেন্দু ছাড়াও থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে উত্তর কাঁথির বিধায়িকা সুমিতা সিনহা, দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক অরূপ দাস, শুভেন্দু অধিকারীর ভাই তথা বিজেপি সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী, উত্তর কাঁথির প্রাক্তন বিধায়ক বনশ্রী মাইতির বিরুদ্ধে৷
প্রদীপ বলেন, ‘‘ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের অবিলম্বে শাস্তি চাই৷” জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার ঘটনায় অভিযুক্ত দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক অরূপ বলেন, ‘‘সঙ্গীতচর্চায় অপটু এক হাজার লোককে নিয়ে একসঙ্গে নির্ভুলভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে হয়েছিল। তার জন্য যেটুকু সময় লাগে সেটাই হয়েছে।’’ আরেক বিধায়ক সুমিতার প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে ফোন করা হয়। তাঁর আপ্ত সহায়ক পরিচয় দিয়ে জনৈক মহিলা বলেন, ‘‘বিধায়ক ব্যস্ত রয়েছেন।’’ এ প্রসঙ্গে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘যাঁরা নিজেরা ভুল জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন, তাঁদের অভিযোগের ভিত্তি কী।’’
ঘটনার সূত্রপাত, গত ২৯ মার্চ। ও ইদিন কাঁথি শহরে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যানারে পেট্রল ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে একটি সভা আয়োজন করা হয়। সভার শেষে জাতীয়সঙ্গীত ভুল পরিবেশনার অভিযোগ ওঠে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল তথা কাউন্সিলর রিনা দাসের বিরুদ্ধে। ওই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। বিজেপির পক্ষ থেকে সৌমেন্দু অধিকারীর কাঁথি থানায় রিনার বিরুদ্ধে জাতীয়সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করেন৷
পাল্টা হিসেবে ৪ মার্চ অরাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার আয়োজন করেন। সেখানেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার সময় নির্ধারিত সময় অতিক্রম করার অভিযোগ উঠেছে৷ যদিও এ প্রসঙ্গে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, ‘‘নিজেদের ভুল স্বীকার করে না তৃণমূল অন্যের ত্রুটি ধরতে মরিয়া। ভুল জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়েছিল। বরং আমরা ত্রুটিমুক্ত ভাবে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেছি।’’
যদিও আইনজীবী মহলের বক্তব্য, জাতীয়সঙ্গীত ভুল ভাবে পরিবেশন করা হলে তা জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার শামিল। একই ভাবে জাতীয় সঙ্গীতের প্রথম পংক্তি গাইতে যদি আনুমানিক ৫২ সেকেন্ডের বেশি সময় লাগে সে ক্ষেত্রেও জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়। দু’টি ক্ষেত্রে এমন কোনও ধারার উল্লেখ নেই যাতে মামলা করা যায়। আইনে শুধু এটুকু উল্লেখ রয়েছে, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার ক্ষেত্রে যদি কাউকে বাধা দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে একটি মামলা করা হয়। সে ক্ষেত্রে সর্বাধিক সাজা তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে আইনজীবীরা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy