(বাঁ দিকে) বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে প্রায় ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে ইডির দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি কয়েক জন বয়স্ক নাগরিককে নিয়ে ইডির কাছে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, বেশ কয়েক জনের কাছ থেকে ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছিল নুসরতের সংস্থা। কিন্তু ফ্ল্যাট মেলেনি। শঙ্কুদেব ইডির কাছে নথিপত্র জমাও দিয়ে এসেছেন বলে দাবি করেন। মঙ্গলবার আরও এক ধাপ এগিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করলেন, ওই টাকাতেই ফ্ল্যাট কিনছেন নুসরত। শুভেন্দুর এ-ও দাবি, সেই ফ্ল্যাটের দাম এক কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে নুসরতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে চান না। যে হেতু আইনগত ভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তাই নুসরত তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে যথা সময়ে এর জবাব দেবেন বলে জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, নুসরত এবং তাঁর বন্ধু যশ দাশগুপ্তের প্রযোজনা সংস্থা ‘মেন্টাল’ নামের একটা ছবি তৈরি করছে। এখন সেই ছবির শ্যুটিংয়ের কাজেই ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী সাংসদ।
নুসরত প্রসঙ্গে শুভেন্দু বিধানসভায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘বিরাট দুর্নীতি! বয়স্ক লোকজনেরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি শঙ্কুকে (বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা) দায়িত্ব দিয়েছিলাম। ওঁরা গিয়ে ইডি-র যুগ্ম অধিকর্তার কাছে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন।’’ বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করে এ-ও বলেন, ‘‘বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রবীণ মানুষদের টাকা নিয়ে সাংসদ নিজে এক কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনে নিয়েছেন।’’ শুভেন্দুর আরও দাবি, অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে। সমস্ত তথ্য তাঁর এবং তাঁদের কাছে রয়েছে বলেও বিধানসভায় বলেছেন বিরোধী দলনেতা।
শঙ্কুদেব ইডিকে জানিয়েছেন, গড়িয়াহাট রোডের একটি সংস্থায় যৌথ ডিরেক্টর পদে রয়েছেন নুসরত। ওই সংস্থা ২০১৪ সালে মোট ৪২৯ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, রাজারহাটে হিডকোর দফতরের কাছে তাঁদের প্রত্যেককে ৩ কামরার (৩ বিএইচকে) ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। তিন বছরের মধ্যে ওই ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে এেসও কোনও তাঁরা কোনও ফ্ল্যাট পাননি বলে ইডির কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন শঙ্কু।
যে নাগরিকেরা ইডি-র কাছে গিয়েছিলেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়েছেন, নুসরতের সঙ্গে ওই সংস্থার যৌথ ডিরেক্টর রাকেশ সিংহ নামের এক ব্যক্তি। ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তিনিই দিয়েছিলেন। প্রতারিতেরা গড়িয়াহাট থানায় এফআইআর-ও দায়ের করেছেন বলে দাবি করেছেন। শঙ্কুর দাবি, পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেনি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত নথিপত্র নিয়ে ইডি অফিসে গিয়ে গতকাল অভিযোগ জানিয়েছি। নুসরতের লোকজন ওই সংস্থার মাধ্যমে টাকা তুলছে। অবিলম্বে এটা আটকানো দরকার। কিন্তু পুলিশ কিছু করছে না।’’
ইডি নিষ্ক্রিয় থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন শঙ্কুদেব। অবিলম্বে নুসরতকে গ্রেফতার করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। যদিও শঙ্কুদেবের অভিযোগকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ইডি কি আদৌ নিরপেক্ষ? সিবিআই বা ইডি বিজেপির শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে। বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলিতে এদের ব্যবহার করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy