প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে সরকারি প্রকল্প অসংখ্য। কিন্তু কোনও দফতর বা প্রকল্প সম্পর্কে তথ্য জানতে হলে নাগরিকদের গড়ে অপেক্ষা করতে হবে সাড়ে সাতটি বছর! আরটিআই বা তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় পশ্চিমবঙ্গ তথ্য কমিশনে দায়ের হওয়া অভিযোগের নিষ্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য ও পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এমনটাই জানাচ্ছেন প্রতীচী ট্রাস্টের গবেষক সাবির আহমেদ। তাঁর বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, এ রাজ্যে তথ্য সংক্রান্ত বেশির ভাগ আবেদনই বকেয়া পড়ে রয়েছে। নিষ্পত্তির হার খুবই কম।
সাবির নিজেই একটি আবেদন করেছিলেন। আড়াই বছর পরেও তার জোরালো সদুত্তর পাননি! ২০১৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনি দেখিয়েছেন, ৭৭৫৪টি আবেদন বকেয়া। এ-পর্যন্ত মোট ৬০ হাজার ২৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা হয়েছে মাত্র এক শতাংশ অভিযোগের ক্ষেত্রে।
সাবিরের মতে, রাজ্যে বেশ কিছু জনমুখী সরকারি প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতির অভিযোগও কম নয়। দুর্নীতি কমাতে এবং স্বচ্ছ প্রশাসনের ক্ষেত্রে তথ্যের অধিকার আইন এবং তথ্য কমিশন জরুরি হাতিয়ার। কিন্তু কাজের যা নমুনা দেখা গিয়েছে, তাতে সেই হাতিয়ার ধারালো হচ্ছে না। “এ রাজ্যে নাগরিকদের পক্ষে আরটিআই আবেদনের পদ্ধতি সহজসাধ্য নয়। অনেক রাজ্যে অনলাইনে আবেদন করা যায়। কিন্তু এখানে সেই পদ্ধতি চালু হয়নি,” বলেন সাবির। কেউ কেউ মনে করছেন, তথ্য কমিশন সক্রিয় হওয়ার বদলে সরকারি দফতরের গতানুগতিক গয়ংগচ্ছ মনোভাব নিয়েই চলছে।
সমাজকর্মীদের অনেকেই অবশ্য বলছেন, সার্বিক ভাবে দেশের ক্ষেত্রেও আরটিআইয়ের পরিস্থিতি বেহাল। ২০১৯ সালে সেন্টার ফর ইকুইটি স্টাডিজ় এবং একটি নাগরিক সংগঠনের যৌথ রিপোর্টে উঠে এসেছিল, দেশে বছরে গড়ে তিন শতাংশ আরটিআই আবেদনের নিষ্পত্তি হয় এবং তথ্য কমিশনের এই নিষ্ক্রিয়তার জন্য আমলাতন্ত্রকেই কার্যত দায়ী করছেন অনেক সমাজকর্মী। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারও আরটিআই-কে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। পিএম কেয়ার ফান্ড নিয়ে আরটিআই-কে কার্যত নস্যাৎ করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy