Advertisement
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

ধর্ষণ রুখতে কড়া আইন হোক, ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

বৃহস্পতিবারই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সমস্ত রাজ্যের সরকারকে অনুরোধ করেছেন ধর্ষণ-বিরোধী কঠোর আইন আনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘চাপ’ দিতে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৪ ১৮:১১
Share: Save:

ধর্ষণ রুখতে কড়া আইন আনা হোক দেশে। এই মর্মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বৃহস্পতিবার চিঠি লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের মাধ্যমে ১৫ দিনের মধ্যে যাতে দোষীর বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে শাস্তি নিশ্চিত করা যায়, সেই বিষয় নিয়েও চিঠিতে সওয়াল করেছেন মমতা। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই চিঠির কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই তৃণমূল সাংসদ তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সমস্ত রাজ্যের সরকারকে অনুরোধ করেছেন ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন বলবৎ করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘চাপ’ দিতে।

আরজি কর-কাণ্ডে সমালোচনার মুখে রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টও প্রশ্ন তুলেছে। এই আবহে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মমতা। সেই চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, দেশে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোজ গড়ে ৯০টি ধর্ষণের ঘটনা হচ্ছে। এই ধরনের ‘গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল’ ঘটনা বন্ধ করতে অবিলম্বে কড়া আইন আনা প্রয়োজন। চিঠিতে আরও দাবি করা হয়েছে, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনার দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শাস্তি নিশ্চিত করার বিষয়টিও রাখা হোক আইনে। ঘটনা ঘটার ১৫ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার দাবিও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবারই অভিষেক সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘এমন কঠোর ধর্ষণ-বিরোধী আইন আনতে হবে, যা ঘটনার ৫০ দিনের মধ্যে অপরাধীকে চিহ্নিত করে দোষী সাব্যস্ত করা নিশ্চিত করবে এবং তাতে দোষীকে কঠোরতম সাজা দেওয়ার নিদান থাকবে।’’ এর পর তিনি দেশে ধর্ষণের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, গত ১০ দিনে দেশে ৯০০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। প্রতি দিন ৯০টি ধর্ষণের ঘটনার রিপোর্ট লেখানো হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় চারটি এবং প্রতি ১৫ মিনিটে একটি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিষেক মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে দেশে ধর্ষণ-বিরোধী কঠিন আইন ‘জরুরি’ হয়ে পড়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘‘সমস্ত রাজ্যগুলির সরকারের উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে কঠোর ধর্ষণ বিরোধী আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা করা। এর থেকে বিন্দুমাত্র কম কিছু হলে, তা হবে নেহাৎই প্রতীকী এবং আদতে তাতে কোনও কাজ হবে না।’’


গত ৯ অগস্ট সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি শুনছে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ঘটনার পরম্পরার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এই আবহে ধর্ষণ রুখতে কড়া আইন আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE