বীরভূমের গ্রামে দোকানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
অমিত শাহের ভোজন রাজনীতি নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই কটাক্ষ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার নিজেই পৌঁছে গেলেন শান্তিনিকেতনের কাছে এক আদিবাসী গ্রামে। তবে আগে থেকে কাউকে জানিয়ে নয়, একেবারে আচমকা। ঢুকলেন চায়ের দোকানে। খুন্তি হাতে রান্না করলেন নিজেই। খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে হাতের নাগালে পেয়ে খুশি সাধারণ মানুষ। জানালেন ছোটখাটো আবদারও।
বোলপুরের বল্লভপুরডাঙা গ্রাম। গ্রামের শেষ প্রান্তেই ছিল হেলিপ্যাড৷ বীরভূম সফর সেরে সেখান থেকে চপারে করে কলকাতায় পৌঁছনোর কথা ছিল মমতার। সেই মতো রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎই কনভয়ের রুট বদল। সটান ঢুকে পড়লেন বল্লভপুর গ্রামের ভিতরে। গ্রামে ঢোকার মুখে দেখা আদিবাসী বধূ মণি মুর্মুর সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলতে শুরু করতেই আশপাশের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন অন্যরাও। মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে গ্রামবাসীরাও জানালেন তাঁদের পানীয় জল, শৌচালয়ের সমস্যার কথা। দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রীও। শুধু আশ্বাসই নয়, সঙ্গী অনুব্রত মণ্ডলকে নির্দেশ দিলেন, দ্রত সমস্যা মেটানোর।
মমতার পরের গন্তব্য গ্রামের মোড়ের বাবু বাগদির দোকান। স্ত্রী মেনকার সঙ্গে মিলে দোকান চালান বাবু। পাশের দোকান চন্দনা বাগদির। হঠাৎ বাবুর দোকানে ঢুকে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী। দোকানে চলছিল পাঁচমিশালি সব্জি রান্না। নিজেই খুন্তি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে শুরু করলেন মমতা।
আরও পড়ুন: ৩৫৬ বনাম ১৫৬, ধনখড়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার তৃণমূলের
মেনকা বলেন, ‘‘আমার দোকানে দিদি আসবেন, কোনও দিন স্বপ্নেও ভাবিনি। এসে রান্না করেলন, কী কী রান্নায় লাগবে, সে সব বললেন। চা খেয়ে ৫০০ টাকা দিলেন। আমি বললাম, চায়ের তো এত দাম নয়। দিদি বললেন, মিষ্টি খাবে রেখে দাও টাকাটা৷’’ আপ্লুত বাবুর বক্তব্য, ‘‘আমাদের এই মোড়ের দোকানে খুব সমস্যা ছিল জলের। ৭ বছর আগে দোকানে আমার স্ত্রীকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূর থেকে কষ্ট করে জল আনতে হত। আগেই দিদিকে বলার পর একটা নলকূপ বসেছে। আর এখন বিদ্যুৎ নেই। তাই বিদ্যুতের কথা বলেছি। দিদি আবেদন জমা করতে বললেন। আর বললেন, দেখছি।’’ পাশের চন্দনা বাগদির দোকানেও যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেও শিশুর হাতে ৫০০ টাকা দেন।
আরও পড়ুন: বজরংবলি পুজোয় শুভেন্দু, দিলীপ হিন্দু সম্মেলনে, হিন্দু তাস এ বার প্রকাশ্যেই
এ ভাবে এক্কেবারে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নতুন নয়। গত লোকসভা ভোটের আগেও কোনও দোকানে বা বাড়িতে গিয়ে এ ভাবে সাধারণ মানুষের ভিড়ে তাঁর মিশে যাওয়ার ছবি দেখা গিয়েছে। অতি সম্প্রতি বাঁকুড়ার একটি আদিবাসী গ্রামেও গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। খাটিয়ায় বসে শুনেছিলেন সেখানকার মহিলাদের অভাব-অভিযোগ। অমিত শাহ দু’বার রাজ্য সফরে এসে আদিবাসী-দলিত বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করেছেন। তবে সেটা আগেভাগে জানিয়ে। তা নিয়ে প্রায় প্রতিটি সর্মসূচিতে কটাক্ষ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে বুধবার মমতার এই গ্রামসফর ছিল একেবারেই আচমকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy