মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —গ্রাফিক সনৎ সিংহ।
স্পেন ও দুবাই সফর সেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহরে ফিরেছিলেন ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়। পরের দিন এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর পায়ের চিকিৎসা হয়। সে দিনই তিনি কালীঘাটের বাড়ির বাইরে শেষ বার পা রেখেছিলেন। অসুস্থতার কারণে তার পর থেকেই গৃহবন্দি মুখ্যমন্ত্রী। সব ঠিক থাকলে ২০ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির বাইরে পা রাখতে পারেন ১৪ অক্টোবর, মহালয়ার দিন। যে দিন পিতৃপক্ষের অবসান। দেবীপক্ষের সূচনা।
মহালয়ায় তৃণমূলের মুখপত্রের উৎসব সংখ্যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে নজরুল মঞ্চে। সেই সংখ্যা উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের দৈনিক মুখপত্রে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের যে বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছে, তাতে দুপুর আড়াইটের সময়ে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, উদ্বোধনের জন্য মমতা সময় দিয়েছেন ওই দিন বেলা ৩টেয়। এখন প্রশ্ন, সেই উদ্বোধন কি মমতা নজরুল মঞ্চে পৌঁছে করবেন? না কি কালীঘাটের বাড়ি থেকে ভার্চুয়ালি? কৌতূহলের আরও কারণ, ১২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার কালীঘাটের বাড়িতেই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে মমতা মহালয়ার দিনই ঘরবন্দি দশা কাটিয়ে বাইরে বেরোতে চান। নজরুল মঞ্চে পৌঁছে মুখপত্রের মলাট খুলে তাঁর শারদ কর্মসূচি শুরু করবেন দিদি। অন্তত তাঁর তেমনই ইচ্ছা।
যদিও গোটাটাই নির্ভর করছে চিকিৎসকেরা কী বলবেন তার উপর। তবে শাসকদল সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ি থেকে বেরিয়ে সশরীরেই নজরুল মঞ্চে যাবেন। গত বিধানসভা ভোটের প্রচারের সময় মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন। তবে তখনও এত দিন ঘরবন্দি থাকেননি তিনি। দিন কয়েক হাসপাতালে কাটিয়ে হুইলচেয়ারে করেই প্রচারে বেরিয়ে পড়েছিলেন। তৃণমূল স্লোগান দিয়েছিল— ‘ভাঙা পায়েই খেলা হবে।’ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারের সময়েও কপ্টার বিভ্রাটের কারণে পায়ে আঘাত পেয়েছিলেন মমতা। তখনও এমনটা হয়নি। তবে স্পেন সফরে তাঁর পুরনো চোটের জায়গায় চোট পান তিনি। তা গুরুতর আকার নিয়েছিল। সেই জন্যই কলকাতায় ফিরেই এসএসকেএমে গিয়ে চিকিৎসা করান মমতা। নেন চিকিৎসকদের পরামর্শও। চিকিৎসকেরাই তাঁকে হাঁটাচলা বন্ধ করে বাড়িতে থেকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই মর্মেই বাড়িতে থেকে এই পর্বে প্রশাসন ও দলের কাজ দেখভাল করেছেন মমতা। অসুস্থতার কারণে দিল্লিতে তৃণমূলের ধর্নায় যোগ দিতে পারেননি। কিন্তু সিকিম থেকে পর্যটকদের উদ্ধার, উত্তরবঙ্গ-সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকার প্লাবন পরিস্থিতি নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য প্রশাসনকে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী এখন অনেকটাই সুস্থ। অনেকের মতে, সোমবার রাতে রাজভবনের সামনে ধর্না কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা করার সময়েই তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, দলের সর্বময় নেত্রী সেরে উঠছেন দ্রুত। অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘৩১ অক্টোবরের মধ্যে যদি কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার বকেয়া অর্থ না দেয়, তা হলে ১ নভেম্বর থেকে ফের আন্দোলনে নামবে তৃণমূল। সেই আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’
শারদোৎসবে মমতা কলকাতা ও লাগোয়া এলাকার প্রচুর পুজোর উদ্বোধন করেন। একেক বার উদ্বোধনের এতটাই চাপ থাকে যে, মহালয়ার আগেই তা শুরু করে দিতে হয়। তবে এ বার পায়ের কারণেই তা করছেন না মমতা। গত কয়েক বছর ধরেই সারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলার প্রচুর পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে মহালয়ার দিন তিনি বাড়ির বাইরে বেরোলে কলকাতার কিছু বড় বড় পুজো উদ্বোধনেও যাবেন বলেই অনুমান দলের শীর্ষনেতাদের। যদিও মঙ্গলবার পর্যন্ত সুজিত বসু, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস— কোনও নেতা বা মন্ত্রীর পুজো উদ্বোধনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী সময় দেননি বলেই খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy