মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
শারদোৎসব দরজায় কড়া নাড়ছে। তার আগে সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে দু’টি বিদ্যুৎ প্রকল্পকে অনুমোদন দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে সেই অনুমোদনের কথা সংবাদমাধ্যমে জানালেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, দু’টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এর ফলে মোট ১৬০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পাবে রাজ্য। এই দু’টি প্লান্টই তৈরি হবে পিপিপি মডেলে। দু’টি ক্ষেত্রেই গ্লোবাল টেন্ডার করে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এই সংক্রান্ত কাজও শুরু হয়ে যাবে বলে দাবি করা হয়েছে। যারা নির্মাণের দায়িত্ব পাবে, তারাই ঠিক করবে কোথায় বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হবে।
এ ছাড়াও আরও চারটি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির বিষয়ে মন্ত্রিসভা যে সবুজ সংকেত দিয়েছে তাও জানিয়েছেন অরূপ। সেই চারটি কেন্দ্র তৈরি করতে যে কাগজপত্র প্রয়োজন হবে তা তৈরিতে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে।
এ ছাড়া মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘিতে একটি অত্যাধুনিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর কথাও ঘোষণা করেছেন মন্ত্রী অরূপ। ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ওই কেন্দ্রটি আগামী মার্চের মধ্যে উদ্বোধন হতে পারে বলে আশা করেন তিনি। ওই কেন্দ্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুপার ক্রিটিকাল পাওয়ার প্লান্ট’। এই কেন্দ্রের কাজ ইতিমধ্যে ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। পূর্ব ভারতে এই ধরনের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন অত্যাধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আগে তৈরি হয়নি বলেই দাবি করেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এই কেন্দ্র তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এই প্রযুক্তিতে অল্প কয়লা খরচ করে বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে দাবি করেছেন অরূপ। এখন রাজ্যের নিজস্ব ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে সাগরদিঘি, বক্রেশ্বর, কোলাঘাট, ব্যান্ডেল এবং দুর্গাপুরে।
সোমবার অরূপ জানান, পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুরিয়াতে ৩২ এবং ৪০.১৭ একর সরকারি খাস জমিতে একটি শিল্প গোষ্ঠীকে দেওয়া হল। যেখানে তারা স্টিল ও পাওয়ার প্লান্ট তৈরির কাজ করবে। অন্য দিকে মঙ্গলবার থেকেই পুজোর উদ্বোধন শুরু করবেন মমতা। দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর পুজো বলে পরিচিত শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব থেকে উৎসবের সূচনা করবেন তিনি। এমন পরিবেশেও যে তাঁর নজর রয়েছে বন্যাবিধ্বস্ত এলাকাতে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সে কথা বারবার তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই শারদোৎসবে মন্ত্রীদের বন্যা বিধ্বস্ত মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দেন। পুজোর আগে রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা হয়েছে। রবিবার উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে সেখানে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে ফিরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি ওঠে। পুজোয় বন্যাবিধ্বস্ত মানুষের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সাহায্য পৌঁছে দিতে প্রশাসনকে তৎপরতার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীদের উৎসবের থেকে বেশি করে বন্যাবিধ্বস্ত মানুষের পাশে থাকার কথা বলেছেন মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy