Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Visva Bharati

রাস্তা নিল রাজ্য, ‘পাল্টা’ বিশ্বভারতীর

সুরশ্রীপল্লিতে শান্তিনিকেতন দূরদর্শন কেন্দ্রের সামনে রাস্তা আটকে পাঁচিল তৈরির কাজও শুক্রবার আটকে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৫২
Share: Save:

নতুন বছরের প্রথম দিনেও বিশ্বভারতীর সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সংঘাত বহাল।

শুক্রবার উপাসনাগৃহ থেকে কালীসায়র পর্যন্ত রাস্তা বিশ্বভারতীর থেকে নিয়ে নিল পূর্ত দফতর। সুরশ্রীপল্লিতে শান্তিনিকেতন দূরদর্শন কেন্দ্রের সামনে রাস্তা আটকে পাঁচিল তৈরির কাজও শুক্রবার আটকে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেখানে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। আর এ দিনই সঙ্গীতভবনে প্রবেশের প্রধান রাস্তা সাধারণের প্রবেশের জন্য বন্ধ করে দিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যে পদক্ষেপকে রাজ্যের ‘পাল্টা’ হিসেবেই দেখেছেন শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা এবং প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের একাংশ।

অবাঞ্ছিত অনুপ্রবেশ, জবরদখল এবং আশ্রমের সার্বিক নিরাপত্তার যুক্তিতে আশ্রম সংলগ্ন শান্তিনিকেতন ও শ্রীনিকেতনের মধ্যবর্তী প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার অধিকার বিশ্বভারতীরই অনুরোধে তাদের দিয়েছিল রাজ্য। তার পরে কারণে-অকারণে রাস্তা বন্ধ করায় তাঁদের নানা সমস্যা হচ্ছে, অভিযোগে আশ্রমিকেরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন। ২৮ ডিসেম্বর বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ওই রাস্তা ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা করেন। পূর্ত দফতরের (সড়ক) তরফে রাস্তার ধারে লাগানো হয় স্থায়ী হোর্ডিং। সেখানে লেখা, রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে এখন পূর্ত দফতর।

শুক্রবার বীরভূমের জেলাশাসক বিজয় ভারতী, জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ, অন্য পুলিশ আধিকারিক ও প্রবীণ আশ্রমিকদের উপস্থিতিতে হোর্ডিং-এর উন্মোচন করেন প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর ও কল্পিকা মুখোপাধ্যায়। আশ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় রতনপল্লি ও সঙ্গীতভবন চত্বরে পাঁচিলের বিষয়গুলিও সহানুভূতির সঙ্গে দেখার আশ্বাস দেয় জেলা প্রশাসন।

এ দিন রাস্তা অধিগ্রহণের আগেই সুরশ্রীপল্লিতে নবনির্মিত পাঁচিল পরিদর্শনে যান প্রশাসনিক কর্তারা। সাধারণের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ পথ বন্ধ করে রাখার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে পাঁচিল তৈরির কাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। পুলিশ পিকেট বসানোরও নির্দেশ দেন। শুক্রবার বিকেল থেকেই দু’জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে জানতে চাইব, এই রাস্তা বন্ধ করার উদ্দেশ্য কী? জনগণ যদি সমস্যায় পড়েন, তাঁরা প্রশাসনের কাছেই আসবেন। সব দিক দেখে সমাধানসূত্র খুঁজতে হবে। তবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত রাস্তা হঠাৎ বন্ধ করা যায় না। তাই আপাতত কাজ বন্ধ থাকবে।’’

এ সবের মাঝেই এ দিন সঙ্গীতভবনের মূল প্রবেশদ্বারে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এলাকায় বসবাসকারীদের প্রবেশাধিকার থাকলেও ওই এলাকায় থাকা একটি রেস্তরাঁয় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই রাস্তার অধিকার নিয়ে রেস্তরাঁ মালিকের সঙ্গে বিশ্বভারতীর মামলা চলছে। তার মাঝে রাস্তা বন্ধ করা হল কেন প্রশ্ন তুলেছেন রেস্তরাঁ মালিক মহুয়া রায়। এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে বলে লাভ নেই। আমরা যথাস্থানে সমস্যার কথা জানাব।” এই নিয়েও মুখ খোলেননি বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার।

তবে, রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই আজ রাজনীতির আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। তাই বিশ্বভারতীও তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতের বাইরে সুরক্ষিত হতে পারছে না। এটা রাজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত চিন্তা এবং লজ্জার বিষয়। আমরা মনে হয়, বিশ্বভারতীকে এর থেকে মুক্তি দেওয়া উচিত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Visva Bharati PWD
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy